দানবীর ও আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত আগা খানের বিদায়
Published: 5th, February 2025 GMT
ধনকুবের সমাজসেবী ও আধ্যাত্মিক নেতা আগা খান মারা গেছেন। তাঁর দাতব্য প্রতিষ্ঠান আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
যুবরাজ করিম আগা খান ছিলেন ইসমাইলি মুসলিম সম্প্রদায়ের ৪৯তম ইমাম, যাঁর বংশের ধারা সরাসরি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত চলে গেছে বলে তারা দাবি করে থাকে।
দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগা খান পর্তুগালের লিসবনে ‘শান্তিপূর্ণভাবে মৃত্যুবরণ করেছেন’। এ সময় পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আগা খান সুইজারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব রয়েছে। তবে তিনি ফ্রান্সের একটি প্রাসাদের মতো পল্লিনিবাসে (শ্যাটো) থাকতেন।
যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চালর্সকে এই দানবীরের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। আগা খান যুক্তরাজ্যের রাজা ও তাঁর মা প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বন্ধু ছিলেন।
ধারণা করা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্যের রাজা বহু বছরের ব্যক্তিগত বন্ধুর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করছেন।
আগা খানের দাতব্য সংস্থাগুলো বিশ্বব্যাপী শত শত হাসপাতাল, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক প্রকল্প পরিচালনা করে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল বিশ্বে।
আগা খান বিলাসী জীবন যাপন করতেন। বাহামায় তাঁর একটি ব্যক্তিগত দ্বীপ আছে। আছে একটি অত্যাধুনিক প্রমোদতরি এবং একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ।
আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক বলেছে, তারা মরহুমের পরিবার এবং বিশ্বব্যাপী ইসমাইলি সম্প্রদায়ের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি লিখেছে, ‘তিনি যেভাবে চাইতেন, ঠিক সেভাবে ধর্ম–বর্ণনির্বিশেষে বিশ্বজুড়ে মানুষ ও সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
ইসমাইলিরা শিয়া মুসলিমদের একটি সম্প্রদায়। পাকিস্তানে পাঁচ লাখসহ বিশ্বজুড়ে এই সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। পাকিস্তানের পাশাপাশি ভারত, আফগানিস্তান ও আফ্রিকায় এই সম্প্রদায়ের বিপুল পরিমাণ মানুষের বসবাস।
যুবরাজ করিম আগা খান তাঁর দাদার উত্তরসূরি হিসেবে ১৯৫৭ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে ইসমাইলি মুসলমিদের ইমাম হন।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুসারে, ২০০৮ সালে আগা খানের আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ ছিল ১০০ কোটি ডলার। ঘোড়ার খামারসহ অসংখ্য ব্যবসায়িক উদ্যোগের সুবাদে তাঁর উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পদ ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
আগা খান ছিলেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ডে ঘোড়দৌড়ের ঘোড়ার একজন শীর্ষস্থানীয় মালিক। এসব ঘোড়ার প্রজননেও তিনি অগ্রণী ছিলেন। শেরগার নামে একসময়ের বিশ্বের বিখ্যাত এবং সবচেয়ে মূল্যবান রেসের ঘোড়াটির প্রজননও তিনিই করিয়েছিলেন।
আগা খান ফাউন্ডেশন নামের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন আগা খান। দিল্লিতে হুমায়ুনের সমাধিস্থল পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে আগা খান ট্রাস্ট ফর কালচার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এ ছাড়া স্থাপত্যের জন্য প্রতিবছর আগা খান পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে।
আগা খান নেশন মিডিয়া গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকার বৃহত্তম স্বাধীন মিডিয়া সংস্থা হয়ে উঠেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আগা খানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁকে দূরদর্শী, বিশ্বাসী, উদার মানুষ ও অসাধারণ নেতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র একট
এছাড়াও পড়ুন:
নিজেদের দোষে নারীরা কুপ্রস্তাব পান: মমতা শঙ্কর
পশ্চিমবঙ্গের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী মমতা শঙ্কর। সাম্প্রতিক সময়ে তার এক মন্তব্যকে ঘিরে স্যোশাল মিডিয়ায় তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। নারী দিবসের আগে দেওেয়া অভিনেত্রীর এ বক্তব্য নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা করছেন নেটিজেনরা। এর আগে নায়িকাদের শাড়ি পরার ধরন নিয়ে মন্তব্য করে সমালোচনা মুখ পড়েছিলেন তিনি। এছাড়া প্রকাশ্যে চুম্বন নিয়ে মন্তব্য করেও পড়েছিলেন বিতর্কে। এবার নতুন এক বিতর্কে নাম জুড়ালেন মমতা।
কুপ্রস্তাব পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীদেরকেই দায়ী করে দেওয়া মমতার বক্তব্যে সমালোচনা তৈরি হয়েছে। নারী দিবসের আগে তার এমন বক্তব্য নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অনুরাগীরাও।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, সম্প্রতি মমতা দাবি করেন যে নারীরা কুপ্রস্তাব পাওয়ার জন্য নিজেরাই দায়ী। অভিনেত্রীর মতে, নারীরা যদি নিজেদের ব্যক্তিত্ব দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করতে পারেন, তবে এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না। মমতা শঙ্কর বলেন, ‘আত্মসম্মান, আত্ম মর্যাদা নিজেকে ধরে রাখতে হবে। অনেকে আমায় অনেক মানুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখার পর এসে বলেছেন উনি তোমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, খারাপ লোক কিন্তু উনি, সাংঘাতিক। সাবধানে থেকো। আমি পাল্টা জবাবে বলেছি যে আমার তো তাঁকে ভালোই, সজ্জন বলে মনে হল।
রাত জেগে, গভীর রাত পর্যন্ত কত শ্যুটিং করেছি, কত মানুষের সঙ্গে বসে আড্ডা দিয়েছি। গান গেয়েছি। কেউ কখনও খারাপ প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভাবতে পারেননি।’
এদিকে অভিনেত্রীর সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী সামাজিক মাধ্যমে একটি ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেন। তিনি নাম উল্লেখ না করেই লেখেন, উনি শঙ্কর প্রজাতির শিল্পী, সঙ্গে জুড়ে দেন একটি ভাবুক ইমোজি। নেটিজেনদের বুঝতে দেরি হয়নি যে অভিনেতা কাকে ইঙ্গিত করেছেন। অনেক ভক্ত-অনুরাগীকেই তার মন্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গেছে।