তাওহিদ হৃদয় হাফ সেঞ্চুরি করে নিজের ফেসবুক পেজে তামিমকে অভিভাবক হিসেবে সম্মান দেখালেন। ফরচুন বরিশালের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ভালোবেসে তামিমকে দলের ‘স্বত্বাধিকারী’ বলে মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেছেন। বলতে গেলে দলের প্রত্যেক ক্রিকেটারের কাছে প্রেরণা হয়ে আছেন অধিনায়ক। এই ভালোবাসা তামিমকে দারুণভাবে স্পর্শ করে। তিনি বরিশাল দলটিকে একটি পরিবারের মতো করে আগলে রেখেছেন প্রথম থেকেই।
বিসিবির নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ভাষায়, ‘হোটেলে তামিম ভাইয়ের রুমের দরজা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে।’ ফরচুন বরিশাল স্কোয়াডের সবার কাছে পরিবারের মতো। এই দল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিমদের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারকে যেমন ধারণ করেছে, তেমনি উদীয়মান ইকবাল হাসান ইমনকেও। অধিনায়কের ছাতার তলে সবাই সম্মানিত। এ কারণেই জাতীয় দলের অনেক তারকা ক্রিকেটার রিজার্ভ বেঞ্চে থেকেও দলের একনিষ্ঠ সদস্য। তারা সবাই এক দল ও অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে খেলেছেন। এই একসুতায় বাঁধতে পারাই বরিশালের ফাইনালে উন্নীত হওয়ার রহস্য। অন এবং অফ দ্য ফিল্ড ঈর্ষণীয় বন্ধন গড়ে তুলেছেন অধিনায়ক তামিম, যার নেতৃত্বে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে ফরচুন বরিশাল।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে একাদশ বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচ ছিল বরিশালের। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচটি জিতেছিল মাহমুদউল্লাহ ও ফাহিম আশরাফের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ভর করে। তারকায় ঠাসা দলটি পরের ম্যাচেই হেরেছিল রংপুর রাইডার্সের কাছে। ঢাকার প্রথম পর্বে দুই ম্যাচ খেলে সিলেটে পাড়ি জমায়। তিন ম্যাচ খেলে একটিতে পরাজিত। রংপুরের কাছে ফিরতি ম্যাচটিও হেরে যায় শেষ ওভারের নাটকীয়তায়। নুরুল হাসান সোহানের বীরোচিত এক ওভারের ব্যাটিং বরিশালকে বিপর্যস্ত করে দেয়। সেখান থেকেই একজন দক্ষ নাবিকের মতো হাল ধরেন তামিম।
চিটাগং পর্বের টানা তিন ম্যাচ জিতে সুপার ফোরে খেলা অনেকটাই নিশ্চিত করে ঢাকায় ফেরে। শেষ চার ম্যাচের তিনটিতে জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দল হিসেবে প্রথম কোয়ালিফায়ার খেলে বরিশাল। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে চিটাগং কিংসের বিপক্ষে প্রভাব বিস্তার করে খেলে ম্যাচ জিতে ফাইনালে উন্নীত হয়। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ হবে চিটাগং কিংস বা খুলনা টাইগার্সের যে কোনো এক দল। আজ দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে তারা।
বরিশালের অধিনায়ক প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, কম্বিনেশন ঠিক করতে প্রথম দিকে বেশির ভাগ ক্রিকেটারকে সুযোগ দেবেন। নাজমুল হোসেন শান্ত সে সুযোগ পেয়েছেন। তাইজুল ইসলামও দুটি ম্যাচ খেলেছেন। টিম ম্যানেজমেন্ট শেষে টপঅর্ডারে বেছে নেয় তাওহিদ হৃদয় ও ডেভিড মালানকে। দেশি-বিদেশি ব্যাটারের সমন্বয় করার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, ডান হাতি-বাঁহাতি ব্যাটারের সমন্বয় করতেই শান্তকে সুযোগ দিতে পারছেন না। জাতীয় দলের অধিনায়ক শান্ত দলের প্রয়োজনকেই সম্মান দেখাচ্ছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ম ম ইকব ল ব প এল প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বিএনপির বাধা, থানায় মামলা
গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিলে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ওই ঘটনায় উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইউনিয়নের খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জের সাবেক এমপি আবু জাহিরসহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাহুবলে গাছে বেঁধে আগুন, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আহতদের মধ্যে জামায়াতের দুই কর্মীকে গাজীপুর পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- ঈশ্বরপুর এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে আসলাম (২৬) এবং খলাপাড়া এলাকার ইসলাম সরকারের ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৩৫)।
বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সুমন মিয়া বলেন, “উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ইফতারের আগ মুহূর্তে স্থানীয় বিএনপির কর্মী আপেল, নুর ইসলাম ও আকরামসহ ১০-১৫ জন এসে বলেন, এই এলাকায় ইফতার মাহফিল করা যাবে না। এরপর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা ইফতারের খাবার ফেলে দেন। পরে জামায়াতের কর্মীরা অন্য স্থানে ইফতার ও নামাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বিএনপি কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ১০ জন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।”
বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, “কেউ যদি আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়, তাহলে কি তারা রক্ষা করবে না? জামায়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ৭-৮ জন আহত হন।”
বিএনপির এই নেতা তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় দিতে পারেনি। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসান বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধা দিয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। দুইজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় গাজীপুর পাঠানো হয়েছে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম বলেন, “রাত ৯টার দিকে জামায়াতের পাঁচজন কর্মীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুইজনকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “জামায়াত নেতা মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ