Samakal:
2025-04-18@03:45:01 GMT

গোপালগঞ্জের তিন যুবকের মৃত্যু

Published: 5th, February 2025 GMT

গোপালগঞ্জের তিন যুবকের মৃত্যু

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৈধ উপায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার চেষ্টাকালে সাগরে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন—মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের চরপ্রসন্নদী গ্রামের ওহাব খন্দকারের ছেলে সাত্তার খন্দকার (৪০), একই গ্রামের মেহেদী শেখের ছেলে আরাফসান ইসলাম আশিক (১৮) এবং মোল্লাদী গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ শেখের ছেলে রফিকুল শেখ (২৫)।

নিহত রফিকুল শেখ ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারান। তাকে লালন-পালন করেন তার চাচা মো.

জয়নাল শেখ। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরানোর আশায় রফিকুলের চাচা তার ভিটে-বাড়ি ও সহায়-সম্বল বিক্রি করে দালালদের হাতে ২০ লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু ইতালিতে পৌঁছানোর আগেই লিবিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারান রফিকুল।

আরাফসান ইসলাম আশিকের বাবা মেহেদী শেখও একইভাবে দালালদের মাধ্যমে ছেলেকে ইতালি পাঠানোর জন্য ১৭ লাখ টাকা দেন। ছেলেকে লিবিয়ায় পাঠানোর পর কয়েকবার তার সঙ্গে যোগাযোগ হলেও পরে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে জানা যায়, নৌকাডুবিতে তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত সাত্তার খন্দকারের স্ত্রী লাবনী খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, দালাল চক্র ইতালি পৌঁছে দেওয়ার শর্তে আমার কাছ থেকে তিন দফায় ২৬ লাখ টাকা নিয়েছে, যেখানে মৌখিক চুক্তি ছিল ২৪ লাখ টাকার। আমি আমার স্বামীর মরদেহ দেশে ফেরত আনার দাবি জানাচ্ছি এবং দালাল চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

গোপালগঞ্জ জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর সহকারী পরিচালক ষষ্ঠীপদ রায় জানান, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জে একটি শক্তিশালী দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে, যারা যুবকদের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে বিদেশে পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা এই চক্রের তালিকা তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছি, তবে এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকার বৈধ উপায়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইতালি, জাপান ও কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছে। কিন্তু অবৈধ পথে বিদেশে যেতে চাওয়া ব্যক্তিরা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর সঙ্গে যোগাযোগ না করায় তারা প্রতারিত হচ্ছে।

মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসনীন আক্তার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। নিহতদের পরিবার থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্ট সংস্থার বরাত দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির পর লিবিয়ার ব্রেগা উপকূল থেকে ২০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতদের সবাই বাংলাদেশি। নিহতদের পরিবার সরকারের কাছে মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছিল। তবে মরদেহগুলো পচন ধরতে শুরু করায় আজদাদিয়ায় দাফন করা হয়েছে।

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

জনশক্তি রপ্তানিকারক নুরুল আমিনের ৮ বছর কারাদণ্ড

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৯৩ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে এভিয়েট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের প্রোপাইটর নুরুল আমিনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক জাকারিয়া হোসেন মঙ্গলবার এ রায় দেন। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাঁকে আরও পাঁচ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তথ্য গোপনের অভিযোগে তাঁকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাঁকে আরও তিন মাস সশ্রম কারাভোগ করতে হবে। একই সঙ্গে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৯৩ লাখ ২২ হাজার ১৭ টাকার সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে। এ জন্য তাঁকে সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের কারাভোগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী শফিকুল ইসলাম। জনশক্তি রপ্তানিকারক নুরুল আমিন রায় ঘোষণার আগে আদালতে হাজির হন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১১ সালের ৭ আগস্ট রমনা মডেল থানায় মামলা করেন দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক আবদুল আজিজ ভূঁইয়া। মামলাটি তদন্ত করে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন আবদুল আজিজ। ২০২১ সালের ৫ অক্টোবর আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ১৫ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনশক্তি রপ্তানিকারক নুরুল আমিনের ৮ বছর কারাদণ্ড