Samakal:
2025-02-05@10:46:42 GMT

গোপালগঞ্জের তিন যুবকের মৃত্যু

Published: 5th, February 2025 GMT

গোপালগঞ্জের তিন যুবকের মৃত্যু

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার তিন যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৈধ উপায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার চেষ্টাকালে সাগরে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন—মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের চরপ্রসন্নদী গ্রামের ওহাব খন্দকারের ছেলে সাত্তার খন্দকার (৪০), একই গ্রামের মেহেদী শেখের ছেলে আরাফসান ইসলাম আশিক (১৮) এবং মোল্লাদী গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ শেখের ছেলে রফিকুল শেখ (২৫)।

নিহত রফিকুল শেখ ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারান। তাকে লালন-পালন করেন তার চাচা মো.

জয়নাল শেখ। পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরানোর আশায় রফিকুলের চাচা তার ভিটে-বাড়ি ও সহায়-সম্বল বিক্রি করে দালালদের হাতে ২০ লাখ টাকা তুলে দেন। কিন্তু ইতালিতে পৌঁছানোর আগেই লিবিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারান রফিকুল।

আরাফসান ইসলাম আশিকের বাবা মেহেদী শেখও একইভাবে দালালদের মাধ্যমে ছেলেকে ইতালি পাঠানোর জন্য ১৭ লাখ টাকা দেন। ছেলেকে লিবিয়ায় পাঠানোর পর কয়েকবার তার সঙ্গে যোগাযোগ হলেও পরে আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে জানা যায়, নৌকাডুবিতে তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত সাত্তার খন্দকারের স্ত্রী লাবনী খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, দালাল চক্র ইতালি পৌঁছে দেওয়ার শর্তে আমার কাছ থেকে তিন দফায় ২৬ লাখ টাকা নিয়েছে, যেখানে মৌখিক চুক্তি ছিল ২৪ লাখ টাকার। আমি আমার স্বামীর মরদেহ দেশে ফেরত আনার দাবি জানাচ্ছি এবং দালাল চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

গোপালগঞ্জ জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর সহকারী পরিচালক ষষ্ঠীপদ রায় জানান, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জে একটি শক্তিশালী দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে, যারা যুবকদের প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধভাবে বিদেশে পাঠাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা এই চক্রের তালিকা তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছি, তবে এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, সরকার বৈধ উপায়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ইতালি, জাপান ও কোরিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিচ্ছে। কিন্তু অবৈধ পথে বিদেশে যেতে চাওয়া ব্যক্তিরা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর সঙ্গে যোগাযোগ না করায় তারা প্রতারিত হচ্ছে।

মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাসনীন আক্তার বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। নিহতদের পরিবার থেকে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্ট সংস্থার বরাত দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির পর লিবিয়ার ব্রেগা উপকূল থেকে ২০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতদের সবাই বাংলাদেশি। নিহতদের পরিবার সরকারের কাছে মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছিল। তবে মরদেহগুলো পচন ধরতে শুরু করায় আজদাদিয়ায় দাফন করা হয়েছে।

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েতকে আরও বেশি জনশক্তি নেওয়ার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

বাংলাদেশ থেকে কুয়েতকে আরও বেশি জনশক্তি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সোমবার সচিবালয়ে উপদেষ্টার অফিস কক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত কুয়েতের রাষ্ট্রদূত আলী তুনিয়ান আবদুল ওয়াহাব হামাদাহ সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও কুয়েতের গভীর বন্ধুত্ব রয়েছে। কুয়েতে প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি জনশক্তি নেওয়ার জন্য কুয়েত সরকারকে আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, কুয়েত বাংলাদেশ থেকে আরও নারী গৃহকর্মী নিতে আগ্রহী। আমি তাদের নারীর পাশাপাশি পুরুষ কর্মী নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানি বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, কুয়েত মুসলিম ও এশিয়ান মিত্র হিসেবে সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। বাংলাদেশও ইরাক-কুয়েত যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্বাসন ও মাইন অপসারণে কুয়েতকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। স্থলমাইন অপসারণে ২৭০ জন বাংলাদেশি সৈন্য নিহত ও ৫৬ জন আহত হয়েছিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে জনশক্তি আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কোনো চুক্তি নেই। এ ধরনের চুক্তি দ্রুত করা দরকার।

বৈঠকে দুদেশের মধ্যে জনশক্তি রপ্তানি, মিলিটারি ও নিরাপত্তা ইস্যু, রোহিঙ্গাদের সহায়তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পারস্পরিক সহযোগিতা-সহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, কুয়েত বাংলাদেশের উন্নয়নে অন্যতম অংশীদার। রোহিঙ্গা ইস্যু-সহ বিভিন্ন সেক্টরে কুয়েত সহযোগিতা করে আসছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউএসএইডের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা বন্ধ করে দেয়, সেক্ষেত্রে যেন কুয়েত রোহিঙ্গাদের উন্নয়ন ও পুনর্বাসনে আরও বেশি মাত্রায় সহযোগিতা করে। জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ইস্যুকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে কুয়েত সহায়তা করেছিল। ভবিষ্যতেও তাদের এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। ক্রমান্বয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ভালো হচ্ছে। রাষ্ট্রদূত এসময় কুয়েত দূতাবাস-সহ বারিধারা ডিপ্লোমেটিক এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধান করায় উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুয়েতকে আরো জনশক্তি নেওয়ার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
  • কুয়েতকে আরও বেশি জনশক্তি নেওয়ার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার