ফরিদপুরে একটি মুঠোফোন ছিনতাই নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ানোর অভিযোগে দুই কৃষক দল নেতার একজনের পদ সাময়িকভাবে স্থগিত এবং অন্যজনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় কৃষক দল। পাশাপাশি সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ভাঙ্গা উপজেলা ও পৌর কৃষক দলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জেলা কৃষক দল।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে পৃথক তিন বিজ্ঞপ্তি ও চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায় সংগঠনটি।

পদ স্থগিত হওয়া নেতার নাম জহুরুল ইসলাম। তিনি ফরিদপুর মহানগর কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ বিষয়ে তাঁকে চিঠি পাঠান কেন্দ্রীয় কৃষক দলের দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে সংগঠন পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগে পদটি স্থগিত করা হলো। কেন আপনাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, এই মর্মে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হলো।’

অন্যদিকে একই ব্যক্তির সই করা আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে ফরিদপুর মহানগর কৃষক দলের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদ শেখকে বহিষ্কার করার বিষয়টি জানানো হয়। বলা হয়, ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সংগঠন পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আপনাকে সব প্রকার পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।’ চিঠির শেষাংশে বলা হয়, এ সিদ্ধান্ত কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হাসান জাফির ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

প্রসঙ্গত, একটি বিদেশি মুঠোফোন ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর সদরের মাচ্চর ইউনিয়নের বাহিরদিয়া বাজার এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সংঘর্ষে জড়ান জহুরুল ইসলাম ও ফরিদ শেখের সমর্থকেরা। উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে মুঠোফোন ছিনতাই, বোমাবাজি ও গুলি বর্ষণের অভিযোগ আনেন।

অন্যদিকে সাংগঠনিক গতিশীলতা না থাকায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা ও পৌর কৃষক দলের দুই শাখাকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে জেলা কৃষক দল। জেলা কৃষক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শেখ মো.

শহিদুল ইসলাম ও সদস্যসচিব মুরাদ হোসেনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।

তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।

হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।        

সম্পর্কিত নিবন্ধ