আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নাক-কান-গলা। শরীরের এসব অঙ্গ বেশ নরম। অনেকেই আমরা এসব অঙ্গের প্রতি যত্ন নিতে উদাসীন। তবে শরীরের এসব অঙ্গের প্রতি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।নাক, কান ও গলার যত্ন নেওয়ার সঠিক ‍উপায় জানিয়েছেন নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ ডা. মশিউর রহমান। 

নাক: নিঃশ্বাস গ্রহণের সময় বাতাস আমাদের নাকের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করে। নাক দিয়ে আমরা ঘ্রাণ নিয়ে থাকি এবং নাকের অনেক কাজ রয়েছে। নাক ফুসফুসকে রক্ষা করে। কারণ নাক দিয়ে যদি জীবাণু বা দূষিত বাতাস ঢুকে যায় সেটা কিন্তু ফুসফুসে ইফেক্ট ফেলে। তাই আপনার যদি নাক ভালো না থাকে, নাক বন্ধ থাকে, যদি নিঃশ্বাস নিতে না পারেন তাহলে ফুসফুস আক্রান্ত হতে পারে। নাক দিয়ে বাতাস নিতে না পারলে রাতের বেলা ঘুমানোর সময় আপনি মুখ দিয়ে বাতাস নেবেন। ফলশ্রুতিতে কিন্ত আপনার নাক ডাকাসহ নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হবে। সুতরাং নাকের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। নাকের যত্নের মধ্যে অন্যতম একটি যত্ন নাক আপনি খোঁচাবেন না। যেকোন কিছু দিয়ে নাক পরিষ্কার করার চেষ্টা করবেন না। আঙুল নাকের ভেতরে ঢুকিয়ে দেবেন না। এটি নাকের অন্যতম একটি যত্ন। যদি নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, ঠাণ্ডা, সর্দি যদি প্রায়ই লেগে থাকে এবং নাকের মাংস বৃদ্ধি পেয়ে যায় তাহলে আপনাকে একজন নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

কানের যত্ন: কানের কাজ হলো শ্রবণ এবং ভারসাম্য রক্ষা করা। আমি দাঁড়িয়ে আছি কিংবা মাথা ব্যথা করছে এগুলো কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করছে কান। কানের ব্যালান্সিং এ কোন সমস্যা হলে মানুষ সুস্থভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। যেকোন সময় যে কেউ হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পড়ে যেতে পারে। কানের যত্নের জন্যে আমরা উচ্চ শব্দ থেকে দূরে এবং নিরাপদে থাকবো। উচ্চ শব্দের কোন জায়গায় গেলে কানে আমরা ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করতে পারি। আরেকটা বিষয় কানকে কখনোই খোঁচানো যাবে না। কটনবার, চাবির রিং কিংবা কাঠি কোনো কিছু দিয়েই কান খোঁচানো যাবে না। কান খোঁচাতে গেলে নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং স্থায়ীভাবে বধিরতা হতে পারে। 

আরো পড়ুন:

শীতকালে বিটরুট কেন খাবেন

হাঁটবেন নাকি সিঁড়ি টপকাবেন

গলা: গলা দিয়ে আমরা কথা বলি এবং খাবার গ্রহণ করি। আমরা কখনো এমন কিছু সেবন করবো না যা গলাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত ঠাণ্ডা খাবার এরিয়ে যেতে হবে। উচ্চ শব্দে আমরা কথা বলার চেষ্টা করবো না এবং আমরা চিল্লাচিল্লি করবো না। গলায় কোন ধরনের ফোলাভাব,  আলসার, ঢোক গিলতে কষ্ট, শ্বাসকষ্ট কিংবা টনসিল হলে আমরা একজন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবো। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ট ব য ক চ কর র স য গ র যত ন যত ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, অন্য পণ্যের দামও বাড়তি

রাজশাহীর বাজারে সবজিসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। বাজারে সয়াবিন তেলেরও সংকট রয়েছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। যদিও রমজান মাস শুরুর আগেও বাজারে স্বস্তি ছিল। রোববার রাজশাহী নগরের সাহেববাজার কাঁচাবাজার ও বিনোদপুর কাঁচাবাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে কাঁচা সবজির সংকট রয়েছে। বেগুন, ফুলকপি, আলু, মরিচ, পেঁয়াজের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। এ ছাড়া মুরগির দামও রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে কাঁচা সবজির সরবরাহ কিছুটা কমেছে, এ কারণে কিছুটা বেড়েছে। তবে গত বছর রমজান মাসের তুলনায় বাজার এবার অনেকটা ক্রেতার জন্য ভালো।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজা শুরু হওয়ার পর ৩৫ টাকা কেজির বেগুন ৫০ টাকা, ৩০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা, ১৬ থেকে ২০ টাকা কেজির আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, ২০ টাকার পেঁয়াজ ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭ থেকে ১০ টাকার প্রতিটি ফুলকপি ২০ টাকা, ১০ টাকার বাঁধাকপি ২০ টাকায়, ১০ টাকা আঁটির লালশাক ও পালংশাক ১৫ টাকায়, ২৫ টাকার লাউ ৫০ টাকায় উঠেছে। প্রকারভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা হালির লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকায়। বাজারে টমেটো ও শসার দাম কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া বাজারে নতুন আসা সবজির মধ্যে পটোল ১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে রমজানের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে। এখন সেই মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। বাজারে ডিমের দামও হালিতে দুই টাকা করে বেড়েছে। দাম বেড়ে লাল ডিম ৪০ ও সাদা ডিম ৩৬ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজার ঘুরে পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাজারে সরকার নির্ধারিত খোলা সয়াবিন ১৫৭ টাকা লিটারে বিক্রির কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। এ ছাড়া ১ লিটার ও ২ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বাজারে তা ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

নগরের বিনোদপুর কাঁচাবাজার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন এলাকার বেশির ভাগ ক্রেতা শিক্ষক, শিক্ষার্থী। একটি সবজির দোকান থেকে বেগুন কিনতে এসে শিক্ষার্থী রাব্বি হোসেন বলেন, দুইটা বেগুনের দামই পড়ল ১৮ টাকা। কয়েকজন মিলে আজকে ইফতারের আয়োজন করেছেন। আগে ১৮ টাকায় আধা কেজি বেগুন কেনা যেত। রমজানে এসে দাম বেড়ে গেছে।

একই বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে এসেও হোঁচট খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সাবিনা খাতুন নামের এক ক্রেতা বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম রমজানের আগে ১৬০ বা ১৭০ টাকায় ছিল। এখন সেই মুরগি কিনতে হচ্ছে বাড়তি দাম দিয়ে। ওই বাজারের ব্যবসায়ী রায়হান আলী বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। নতুন সবজিও এখনো আসছে না। এ কারণে দাম বেড়েছে। তবে গত রমজানের চেয়ে অনেক কম।

নগরের সাহেববাজার কাঁচাবাজার থেকে ইফতারের আগে বাজার করছিলেন নগরের আলুপট্টি এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী। লেবুর দোকানে দাঁড়িয়ে দামদর করছিলেন তিনি। রমজান বলেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। এ ছাড়া মুরগির দামও চড়া। লেবুর কাছে তো ভেড়াও যায় না। তখন লেবু ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, উৎপাদন এলাকা থেকে লেবু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দাম বেশি।

সয়াবিনের পাঁচ লিটারের বোতল না পেয়ে কয়েকটা দুই লিটারের বোতল কিনলেন হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, দোকানগুলোতে লিখেই দেওয়া হয়েছে, অমুক কোম্পানির পাঁচ লিটারের তেল নেই। বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান আছে। তাই বেশি সয়াবিন তেল কিনতে হয়েছে। ব্যবসায়ী রতন আলী বলেন, রোজা শুরুর আগে থেকেই বাজারে পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। কোম্পানিগুলোই তেল দিচ্ছে না। বাজারে সংকট রয়েছে। তাঁদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দাম একটু বেশি।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলার সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাসের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ধরেননি। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি করা হয়েছে। অন্য পণ্যগুলো মোটামুটিভাবে নাগালের মধ্যে। তবে কয়েক দিন কিছু সবজির দাম বেড়েছে। সরবরাহ কমবেশি হওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। বাজার মনিটরিং জোরদার করে অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ