‘আমার ছেলে নিজে গুলি খাইয়া মরছে, আমাগোও মাইরা গেছে। এহন আমাগো সংসার চলব ক্যামনে? ভিক্ষার চাউল-টেকায় কি আর সংসার চলে?’ আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন গত জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত আরিফ হোসেন ওরফে রাজিবের (২৬) মা রহিমা বেগম।

পরিবারটির দাবি, বর্তমানে দরিদ্র পরিবারটির সংসার চলছে রাজিবের বাবার ভিক্ষার চাল ও টাকায়। খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে তারা।

গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় গাজীপুর বোর্ডবাজার এলাকায় নিজের কর্মস্থল তথা একটি ভাঙারি দোকানে যাওয়ার পথে পুলিশের গুলিতে রাজিব নিহত হন। গত ২১ জুলাই মতলব উত্তরের রাঢ়িকান্দি কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় রাজিবের বাবা বাদী হয়ে ক্ষমতাচ্যুত ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে গাজীপুরের গাছা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

গাজীপুর বোর্ডবাজার এলাকায় ওই ভাঙারি দোকানে শ্রমিকের কাজ করতেন রাজিব। সেখানেই এক ভাড়া বাসায় স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। তবে পরিবারের অন্য সদস্যদের বসবাস চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার টরকী এওয়াজ গ্রামে। দুই ভাই ও চার বোনের মধ্যে রাজিব ছিলেন সবার বড়। মা–বাবা, স্ত্রী, এক সন্তান, ছোট এক ভাই ও এক বোন নিয়ে এখন তাঁদের ছয় সদস্যের পরিবার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য ছিলেন রাজিব।

স্ত্রীর সঙ্গে আরিফ হোসেন ওরফে রাজিব.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় কৃষক নিহত, প্রতিবেশী গ্রেপ্তার

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে সরকারি খালে মাছ ধরা ও খালপাড় দখল নিয়ে প্রতিপক্ষের মারধরে বশির প্রধানীয়া (৪০) নামের এক কৃষক নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে মামলাটি করেন নিহত ব্যক্তির স্ত্রী।

নিহত বশির প্রধানীয়ার বাড়ি উপজেলার বহরী গ্রামে। গতকাল বুধবার দুপুরে বাড়ির পাশে খালেরপাড়ে তিনি খুন হন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেহ আহাম্মদ বলেন, আজ সকাল ১০টায় নিহত কৃষকের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে রমিজ উদ্দিন বয়াতীসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও চারজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন।

ওসি সালেহ আহাম্মদ জানান, প্রধান আসামি রমিজ উদ্দিন বয়াতীকে গতকাল দুপুরে উপজেলার বহরী এলাকা থেকে আটক করা হয়। আজ সকালে আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পরিবার, পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্র জানায়, নিহত বশির এলাকায় কৃষিকাজ করতেন। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। অভিযুক্ত রমিজ উদ্দিন বয়াতীর বাড়িও বহরী গ্রামে। বশির ও রমিজ পরস্পরের প্রতিবেশী। দুজনের মধ্যে বাড়ির পাশে একটি সরকারি খালপাড়ের দখল ও খালের মাছ ধরা নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে এর আগে ওই দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটে।

গতকাল দুপুর ১২টায় ওই সরকারি খালে মাছ ধরতে যান বশির প্রধানীয়া ও তাঁর দুই ছেলে। এতে বাধা দেন রমিজ উদ্দিন ও তাঁর লোকেরা। এ নিয়ে বশির ও রমিজ উদ্দিনের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ ও মারামারির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে রমিজ উদ্দিন ও তাঁর লোকেরা বশির প্রধানীয়া ও তাঁর ছেলে বিল্লাল হোসেন ও মো. জয়নালকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান। সেখান থেকে বশিরকে উদ্ধার করে স্বজনেরা চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। বিল্লাল হোসেন ও মো. জয়নাল স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাঁদপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় কৃষক নিহত, প্রতিবেশী গ্রেপ্তার