কক্সবাজারের মহেশখালীতে সাগর থেকে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর নাম নাজমুল হাসান (১৮)। আজ বুধবার সকাল সাতটার দিকে উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙার পশ্চিমে বহদ্দারের মুখ এলাকায় সাগর থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত নাজমুল হাসান মহেশখালী পৌরসভা এলাকার ঘোনারপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ ফেরদৌসের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি নৌযানে লবণ বোঝাই করতে ওই তরুণ ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। পরে তাঁর পরিবারকে জানানো হয়, কাজ করার একপর্যায়ে নৌযান থেকে পানিতে পড়ে রাত ১১টার দিকে নিখোঁজ হন নাজমুল।

নাজমুল হাসানের বাবা মোহাম্মদ ফেরদৌস বলেন, তিনি জেনেছেন রাতে ওই নৌযানে থাকা অন্য শ্রমিকেরা তাঁর ছেলেকে মারধর করেন। মারধরের সময় সাগরের পানিতে ডুবে তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তিনি।

নাজমুল হাসান যে নৌযানে লবণ বোঝাই করতে গিয়েছিলেন, এর মালিক মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, তিনজন শ্রমিক নিয়ে কুতুবজোম ইউনিয়নের তাজিয়াকাটা খালে তাঁর নৌযানটি লবণ বোঝাই করতে নেওয়া হয়। সেখানে নৌযানটি নোঙর করার জন্য রশি বাঁধার একপর্যায়ে নাজমুল পানিতে পড়ে নিখোঁজ হন। রাতে তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ সকালে লাশটি সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গেছে। মারধরের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়। তাঁকে কেউ মারধর করেনি।

জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাইছার হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় নিহত নাজমুলের চোখে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

ভৈরবে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ডিবির দুই সদস্য বরখাস্ত

কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নেওয়া হয়। ৫ ঘণ্টা পর ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল ইসমাইল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গতকাল শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এক আদেশে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। আজ রোববার দুপুরে মুঠোফোনে কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেলোয়ার ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় পুলিশ সুপার শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

ভৈরব উপজেলার মানিকদী নতুন বাজারে আমির হোসেন নামের এক ব্যক্তি মুদিদোকানে ব্যবসা করেন। অভিযোগ রয়েছে, গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস আমির হোসেনের দোকানের সামনে থামে। মাইক্রোবাস থেকে ডিবি পুলিশের আটজন সদস্য নামেন। নেমেই আমির হোসেনের কাছে জানতে চান জ্বালানি তেল বিক্রি করেন কি না। পরে ওই দোকানে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে আমির হোসেনকে বাইরে নিয়ে যেতে চান। আমির হোসেন যেতে চাননি। তখন কপালে অস্ত্র ঠেকিয়ে গাড়িতে ওঠানো হয়। পরে গাড়ি দিয়ে তাঁকে ভৈরব ও কুলিয়ারচরের বিভিন্ন প্রান্তে নেওয়া হয়। চলমান অবস্থায় তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। না দিতে পারলে এক হাজার পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার কথা বলা হয়। একপর্যায়ে এসআই দেলোয়ারের মুঠোফোন দিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আমির হোসেন যোগাযোগ করেন এবং ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তাঁকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।

আমির হোসেন বলেন, ‘আমার অপরাধ আমি জানি না। গাড়ির ভেতর মারধর করা হয়েছে, টাকা দেওয়ার পর আমাকে ছাড়া হয়। বিষয়টি আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমির হোসেনের কাছে মাদক আছে—এমন অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন তাঁর কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। মনে হয়েছে, আমির হোসেনকে নিয়ে আরও কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানো গেলে মাদক পাওয়া যেতে পারে। সেই কারণে তাঁকে গাড়িতে ওঠানো হয়। কিন্তু তাতেও আমরা সফল হইনি। শেষে দুজনকে ছেড়ে দিয়েছি। এর মধ্যে লেনদেনের কোনো বিষয় নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভৈরবে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ডিবির দুই সদস্য বরখাস্ত