দেশের অন্যতম আম উৎপাদকারী জেলা নওগাঁয় গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার আমের মুকুল বেশি এসেছে। বাতাসে মুকুলের ম-ম ঘ্রাণ। কয়েক দিনের কুয়াশা ছাড়া আবহাওয়া আমের অনুকূলে। মুকুলের আধিক্য দেখে বাম্পার ফলনের আশা করছেন আমচাষি।

বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষিবিদরাও। তাঁরা বলছেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া আম চাষের অনুকূলে রয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে। এবার গত বছরের চেয়ে ২০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান বেড়েছে। আশা করা হচ্ছে, গত বছরের চেয়ে এবার ২৫ হাজার টন ফলন বাড়তে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সাধারণত ধরা হয় দীর্ঘস্থায়ীভাবে তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে আমের মুকুল ধরতে চায় না। তবে এবার জানুয়ারি মাসে দুয়েক দিন করে শৈত্যপ্রবাহ থাকলেও দীর্ঘস্থায়ী শৈত্যপ্রবাহ ছিল না। গড় তাপমাত্রা প্রায় ২০ ডিগ্রির কাছাকাছি ছিল। এই তাপমাত্রা আমের জন্য অনুকূল। তবে কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে কুয়াশা থাকছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। কুয়াশার কারণে মুকুলে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ জন্য আমচাষিদের ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আমচাষিরা বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী এক মৌসুমে ভালো ফলন হলে পরেরবার আমের ফলন কম হয়। সে হিসাবে গত বছর নওগাঁয় আমের ফলন কম হওয়ায় এবার তাঁরা আমের বাম্পার ফলনের আশায় আছেন। বাগানে প্রায় সব গাছেই মুকুল এসেছে। ঘন কুয়াশা থাকলেও শীতের তীব্রতা কম হওয়ায় মুকুলের তেমন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই। তারপরও কুয়াশার কারণে মুকুলকে ছত্রাকের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ছত্রাকনাশক স্প্রে করছেন তাঁরা।

এবার নওগাঁ জেলায় ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির বাগানে আম চাষ করা হয়েছে। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর। গত বছর আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩১ হাজার টন। উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার টন। এবার ৪ লাখ ৫০ হাজার টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার নওগাঁ জেলায় ৩০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির বাগানে আম চাষ করা হয়েছে। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর। গত বছর আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩১ হাজার টন। উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ২৫ হাজার টন। এবার ৪ লাখ ৫০ হাজার টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।

নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয়। এই দুই উপজেলাতেই প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমির বাগানে এবার আম চাষ হয়েছে। গত শনিবার ও রোববার সাপাহার ও পোরশা উপজেলার বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাগানগুলোর অধিকাংশ গাছেই ব্যাপক মুকুল এসেছে। মুকুলে আমগাছের পাতা ঢেকে গেছে। কোনো কোনো বাগানে শতভাগ গাছে মুকুল এসেছে। আবার কোনো কোনো ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে।

এবার অনেক আগেই মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।রায়হান আলম, আমচাষি

সাপাহার উপজেলার গোডাউনপাড়া এলাকাসহ ২০০ বিঘা জমির ওপর তিনটি আমবাগান রয়েছে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানার। তিনি স্থানীয় বাজারে আম বিক্রি ছাড়াও বিদেশেও আম রপ্তানি করে থাকেন। সোহেল রানা বলেন, গত বছর তাঁর বাগানে ৫০-৬০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছিল। এবার এখন পর্যন্ত তাঁর বাগানে ৮০ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। ফাল্গুন মাস আমের মুকুল আসার উপযুক্ত সময়। আশা করছেন, আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বাকি গাছগুলোয়ও মুকুল আসবে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত আমের জন্য অনুকূলে আছে। রোদের তাপ কম পেলে ও প্রকৃতি কুয়াশায় ঢেকে থাকলে মুকুলে ছত্রাকের আক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে জন্য গাছে ছত্রাকনাশক কীটনাশক স্প্রে করছেন সোহেল।

পোরশা উপজেলার বড়গ্রাম এলাকার আমচাষি রায়হান আলম বলেন, গত বছর শীতের কারণে অনেক দেরিতে মুকুল এসেছিল। ১৫ থেকে ২০ দিন দেরি হয়েছিল। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়েও অনেক গাছে মুকুল ধরেছিল। তবে সে তুলনায় এবার অনেক আগেই মুকুল এসেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ক ল এস ছ ৩০ হ জ র হ জ র টন গত বছর র নওগ উপজ ল করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মঈন খানের বৈঠক

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। আজ বুধবার রাজধানীর বারিধারায় দেশটির দূতাবাসে এ বৈঠক হয়। 

বিএনপির মিডিয়া সেলের এক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক নিয়ে কোনো পক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। 

তবে সূত্র জানায়, চলতি মাসের ২৫ ফেব্রুয়ারি ড. আব্দুল মঈন খান এর নেতৃত্বে বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো সমন্বয়ে একটা টিম টিম চীন সফর করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ ইস্যুতে তাদের মধ্যে কথা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ