উত্তরাঞ্চলে পেট্রলপাম্পে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট, ভোগান্তিতে চালকেরা
Published: 5th, February 2025 GMT
দুটি পেট্রলপাম্পের সামনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পেট্রলপাম্পগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল আটটা থেকে এ ধর্মঘট চলছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন এলাকাগুলোর যানবাহনের চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, রাজশাহী বিভাগ। গতকাল সংগঠনটির রাজশাহী বিভাগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.
বলা হয়, গতকাল বগুড়ার আদমদীঘি থানা এলাকায় দুটি ফিলিং স্টেশনে কোনো ঘোষণা, নোটিশ বা আনুষ্ঠানিক চিঠি দেওয়া ছাড়াই হঠাৎ উচ্ছেদ অভিযান চালায় নওগাঁ জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। এ অযৌক্তিক ও অন্যায় অভিযানের ফলে পেট্রলপাম্পমালিক চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ধারিত সব নিয়মকানুন মেনে ও বৈধ লাইসেন্স অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। নিয়মিত রাজস্ব দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। অথচ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালিত হয়ে এলেও অতীতে কখনো এমন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়নি। এতে তাঁদের মধ্যে উদ্বেগ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
সংগঠনটির রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল জলিল বলেন, আদমদীঘিতে ‘হামিম ফিলিং স্টেশন’ ও ‘আনিকা ফিলিং স্টেশনের’ সামনে সড়ক ও জনপদ বিভাগ নর্দমা খনন করেছে। এতে পাম্পের ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু কোনো ধরনের নোটিশ দেওয়া হয়নি। আনিকা ফিলিং স্টেশনটি তাঁর মালিকানাধীন।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকেই বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন যানবাহনের চালকেরা। অনেকেই ছুটছেন খোলা পেট্রলের খোঁজে। রাজশাহী নগরের কাজলা এলাকায় নয়ন পেট্রোলিয়াম এজেন্সি থেকে তেল না পেয়ে ফিরে যান আবদুল জব্বার। উপহাস করে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সেই নওগাঁয় কোথায় কি না হয়েছে, এর জন্য সারা উত্তরবঙ্গে পাম্প বন্ধ রেখেছে। তাঁদের মধ্যে বেশ ঐক্য আছে বলা যায়।’
ওই ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ার মো. মুকিদ বলেন, রাতের দিকে তাঁরা নোটিশ পেয়েছেন। অনেকে খবর পেয়ে রাতেই পেট্রলপাম্পে ভিড় করেন। কিন্তু সকালে অনেকেই ফিরে গেছেন। তাঁদের কিছুই করার নেই। এ সিদ্ধান্ত মেনে সবাই ধর্মঘট পালন করছেন। যখন ধর্মঘট তোলা হবে, তখনই বিক্রি শুরু হবে।
নগরের কুমারপাড়া গুল গফুর পেট্রোলিয়াম ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেল ঠেলতে ঠেলতে আসেন তারিক নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আধা কিলোমিটার আগে তেল শেষ হয়ে গেছে। গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে এসে দেখি পাম্প বন্ধ। এখন আবার গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে খোলা পেট্রল কোথায় বিক্রি হচ্ছে, তা খুঁজতে হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈসাবি উপলক্ষে পাঁচ দিন ছুটির দাবি
চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈসাবি উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচ দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার’ নামের একটি সংগঠন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানান সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সদস্য মিশন চাকমা।
এতে বলা হয়, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি ও সমতলের জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসুক, সাংগ্রাই, বিজু, বিহু, চাংক্রান, চৈত্রসংক্রান্তি আবহমান সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। এ উৎসব পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি জাতিসত্তা এবং সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণের কাছে জাতীয় ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। ১২ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই উৎসব চলবে। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত শতাধিক বিভিন্ন জাতিসত্তার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত থাকলেও উৎসবের দিন তাঁদের ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উৎসব উপলক্ষে পাঁচ দিন ক্লাস ও পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও এক দিনের রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করেছে।
এর আগে গত ৫ মার্চ উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে পাঁচ দিন ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধের দাবি জানিয়েছিল বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। চিঠি দেওয়া ওই সংগঠনগুলো হচ্ছে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল, বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।