নওগাঁয় বিনা নোটিশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অভিযানে কয়েকটি পেট্রোল পাম্প উচ্ছেদের প্রতিবাদে সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গের সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় পেট্রোল পাম্প মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে রংপুর বিভাগে তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। ফলে পুরো অঞ্চলে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে, বিপাকে পড়েছেন যানবাহন মালিক, চালক ও সাধারণ মানুষ। 

এদিকে পাম্প বন্ধ থাকায় জ্বালানি নিতে এসে দুর্ভোগে পড়েন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। অনেকেই অভিযোগ করেন, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে জ্বালানি বিক্রয় বন্ধ করে দেওয়ায় গাড়ি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দূরপাল্লার বাস, ট্রাক ও মালবাহী যানবাহনের চালকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। 

বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকরা পড়েছেন বিপাকে। যারা ধর্মঘটের খবরে আগাম জ্বালানি তেল সংগ্রহ করেছিলেন তারাই কেবল এখন মোটরসাইকেল চালাতে পারছেন। 

অনিক নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী বলেন, “দেশে একের পর এক ভোগান্তির সংবাদ দেখছি। নওগাঁর কোথায় কি হয়েছে সে জন্য রংপুরের পেট্রোল পাম্পগুলো বন্ধ করে রাখার কোনো মানে হয় না। যেটি সম্পূর্ণ বেআইনি এবং অযৌক্তিক। আমাদের ভোগান্তি তৈরি করে পেট্রোল পাম্পের মালিকরা আন্দোলন করে তাদের ফায়দা লুটে নিচ্ছে। তাই বিনা নটিসে এমন ভোগান্তিকারী তেল পামগুলোর লাইসেন্স বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।”

পিকআপ চালাক আসলাম ও সাইফুল জানান, তারা রংপুর থেকে ভাড়া নিয়ে দেশের যেকোনো জেলায় যান। প্রতিদিনের ন্যায় আজ সকালে তারা নগরীর শাপলা চত্বরে ওয়াই-ফাই পিকআপ স্ট্যান্ডে এসেছে। যথারীতি ভাড়া পেয়ে তেল নিতে  এসে দেখে পামগুলো বন্ধ। পেট্রোল পাম্পে বসে নিরুপায় হয়ে অলস সময় পার করছেন তারা। সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি তাদের।

আরেক ক্রেতা রাকিব হোসেন বলেন, “হঠাৎ ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। এখন আমরা তেল কোথায় পাবো। অন্তত দুই বা তিনদিন আগে এটা জানানো দরকার ছিল। এইভাবে পাম্প বন্ধ করা ঠিক হয়নি। দ্রুত এগুলো খুলে দেওয়া দরকার।”

এ বিষয়ে রংপুর পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাইফুল ইসলাম নামে এক নেতা বলেন, “নওগাঁয় সওজ কর্তৃপক্ষ কোনো নোটিশ ছাড়াই কয়েকটি পেট্রোল পাম্প উচ্ছেদ করেছে। এটি সম্পূর্ণ অন্যায়। আমাদের ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে। ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত তেল পাম্পের ধর্মঘট চলবে।” 

এদিকে হঠাৎ করে পাম্প বন্ধের ফলে রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রামসহ পুরো বিভাগেই জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ঢাকা/আমিরুল/ইমন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ম প বন ধ বন ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তরবঙ্গে তেল বিপণন অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা

অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গে আজ বুধবার থেকে সব পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিনা নোটিশে বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প উচ্ছেদ করায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে উত্তরবঙ্গ ট্যাঙ্কলরি শ্রমিক ইউনিয়নের বাঘাবাড়ী অফিসে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে রাজশাহী বিভাগীয় পেট্রোল পাম্প ও ডিলার মালিক সমিতি, সিরাজগঞ্জ জেলা পেট্রোল পাম্প ও ডিলার মালিক সমিতি, বাঘাবাড়ী ঘাট পাম্প মালিক সমিতি ও উত্তরবঙ্গ ট্যাঙ্কলরি সমবায় সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

নেতারা বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো নোটিশ ছাড়াই বেশ কয়েকটি পেট্রোল পাম্প পরিদর্শনের পর অবৈধ ঘোষণা করে মাইকিং করে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ফয়সালা করলেও, নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কয়েকটি পাম্প ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অথচ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছ থেকে বৈধভাবে লিজ নিয়ে ব্যবসা করে আসছে সবাই। বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছু কর্মকর্তা লিজের পরিবর্তে ওই জায়গা কিনে নিতে বলছে। তেল ব্যবসায়ীরা জায়গা কিনে নিতে রাজি হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা জায়গা লিখে দেবেন না বলে জানান। এ নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে তারা স্বেচ্ছাচারীভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। অথচ এ নিয়ে  হাইকোর্টে মামলা চলমান। এই স্বেচ্ছাচারের প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরাঞ্চলে সব ধরনের তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উত্তরবঙ্গে তেল বিপণন অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা