পণ্যের অর্ডার করে পেলেন শুধু ছবি
Published: 5th, February 2025 GMT
অনলাইনে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হওয়া এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আপনি ছবি দেখে পণ্য অর্ডার করে সেটি হাতে পাওয়ার পর দেখলেন, ছবির সঙ্গে হাতে পাওয়া পণ্যের আকাশ-পাতাল তফাত।
নিশ্চয়ই দুঃখ পাবেন, রাগও হতে পারে। কিন্তু পণ্য অর্ডার করার পর যদি দেখেন পণ্য নয়, সেটির ছবি পাঠানো হয়েছে, তবে আপনার অনুভূতি কী হতে পারে?
এমন প্রতারণার শিকার হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার বাসিন্দা সিলভেস্টার ফ্রাঙ্কলিন। তিনি চীনভিত্তিক খুচরা পণ্য বিক্রেতা কোম্পানি আলিএক্সপ্রেসে একটি ড্রিল মেশিন অর্ডার করেছিলেন।
আলিএক্সপ্রেস থেকে ফ্রাঙ্কলিনকে পণ্য সরবরাহ করা হয়। কিন্তু প্যাকেট খুলে তিনি হতভম্ব হয়ে যান। ৬৮ বছর বয়সী এই আমেরিকান ড্রিল মেশিন নয়, পেয়েছেন ড্রিল মেশিনের একটি ছবি। নিউইয়র্ক পোস্ট–এ এ নিয়ে খবর প্রকাশ পেয়েছে।
ফ্রাঙ্কলিন বলেন, তিনি গত বছরের নভেম্বরে আলিএক্সপ্রেসে ৪০ মার্কিন ডলারে একটি ডিআইওয়াই অ্যাপলায়েন্স (ড্রিল মেশিন) ও একটি প্রেশার ওয়াসার অর্ডার করেছিলেন। চীনভিত্তিক অনলাইন স্টোর আলিএক্সপ্রেসে এই দুটি পণ্যের স্বল্প মূল্য দেখেই তিনি অর্ডার করেন।
কয়েক সপ্তাহ পর ডিসেম্বরের শেষ দিকে ফ্রাঙ্কলিন তাঁর পণ্য হাতে পান। মোড়ক খুলে ভেতরে একটি ভাঁজ করা কাগজ দেখতে পান। ভাঁজ খুলে দেখেন, তিনি যে পণ্য অর্ডার করেছেন, সেগুলোর প্রিন্ট করা ছবি।
ক্ষুব্ধ ফ্রাঙ্কলিন বলেন, ‘আমি প্রায় ৪০ ডলার দাম দিয়েছি। আমি যা হাতে পেয়েছি, তা হলো, ড্রিল মেশিনের একটি ছবি এবং একটি স্ক্রু। আমি খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আমি সোজা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমার টাকা ফেরত চাই। এটা ভালো নয়। এটা খুব খারাপ। এ সবকিছুই খারাপ। আমি কী বোঝাতে চাইছি, সেটা আপনি বুঝতে পারছেন তো?’
এভাবে প্রতারিত হওয়ার পর ফ্রাঙ্কলিন আলিএক্সপ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাঁর অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে কোনো বার্তা তিনি পাননি।
ফ্রাঙ্কলিনের প্রতারিত হওয়ার গল্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। কেউ কেউ একইভাবে তাঁদের প্রতারিত হওয়ার গল্পও জানাচ্ছেন। কেউ কেউ এটা নিয়ে মজা করছেন। কেউ কেউ আবার কেন তিনি ভরসা করা যায় না, এমন একটি ওয়েবসাইটে পণ্য অর্ডার করেছেন, তা নিয়ে ফ্রাঙ্কলিনকে খোঁচা দিতেও ছাড়ছেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ র ঙ কল ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে ভর্তি পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন সরবরাহ, আহ্বায়ককে অব্যাহতি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউনিটটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা শেষে এ অভিযোগ ওঠে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির একাধিক সূত্র জানায়, ‘সি’ ইউনিটে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা প্রশ্নপত্র নির্ধারিত থাকলেও কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একাধিক হলে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের হাতে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হয়। পরে ভুল বুঝতে পেরে প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
কুবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
যানজটে স্বপ্ন ভঙ্গ কুবির এক ভর্তিচ্ছুর
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমরা যারা বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, আমাদের কেন্দ্র ছিল মূলত সেই বিভাগের জন্য নির্ধারিত। কিন্তু ওই ভবনের কয়েকটি কক্ষে ভুল করে আমাদের কাছে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্ন দেওয়া হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর বিষয়টি সংশোধন করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “প্রথমে খুব নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। পরে ১ ঘণ্টার পূর্ণ সময় দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা মোটামুটি ভালোই হয়েছে।”
চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষা দিতে আসা মোহাম্মদ আবু হানিফ বলেন, “ভুল প্রশ্ন দেওয়ার কারণে পরীক্ষার শুরুতে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। বিষয়টি কক্ষ পরিদর্শকদের জানালে সেটা ফিরিয়ে নিয়ে সঠিক প্রশ্ন দেওয়া হয়।”
এ বিষয়ে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, “মানবিক বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর কাছে ভুল করে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্ন পৌঁছে যায়। রোল নম্বর যাচাই করে আমরা বিষয়টি শনাক্ত করি এবং তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ দেওয়া হয়।”
এদিকে, পরীক্ষার্থীদের ভুল প্রশ্ন প্রদানের দায়ে ওই ইউনিটের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “ঘটনার পর আমি নিজে ওই কক্ষে গিয়েছিলাম। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাবধানতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও এমন ভুল অনাকাঙ্ক্ষিত এবং তা অপেশাদারিত্বের পরিচায়ক। দায়িত্বরতদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।”
তিনি বলেন, “এ ঘটনার জন্য ইতোমধ্যে উনাকে (আহ্বায়ক) ভর্তি পরীক্ষার সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে উনাকে এ ঘটনার কারণ জানানোর জন্য শোকজ করা হয়েছে।”
ইউনিটের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি ফলাফলসহ বাকিসব কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।”
অব্যাহতির বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, “আমি এ ধরনের কোনো লিখিত চিঠি পাইনি। লিখিত চিঠি পাওয়ার পর মন্তব্য করতে পারবো।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী