সুইডেনের ওরেব্রো শহরের একটি স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনাকে নর্ডিক জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক বন্দুক হামলা বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। খবর আল জাজিরার।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে ওরেব্রো শহরের রিসবার্গস্কা স্কুলে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী একজন পুরুষ এবং নিহতদের মাঝে তাকেও পাওয়া গেছে। তবে এর আগে তার কোনো অপরাধের ইতিহাস ছিল না। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি একাই এই হামলা চালিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

পুলিশ এর আগে সতর্ক করে দিয়েছিল যে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে কারণ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত চারজনের অস্ত্রোপচার চলছে।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল যে, পাঁচজনকে গুলি করা হয়েছে এবং ঘটনাটি হত্যাচেষ্টা, অগ্নিসংযোগ এবং গুরুতর অস্ত্র অপরাধ হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে। কিন্তু সন্ধ্যা গড়ানোর পর পরই পাওয়া যায় ভিন্ন চিত্র। একে একে লাশের সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং তা সর্বশেষ দশজনে গিয়ে পৌঁছায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন ক্ষতিগ্রস্ত এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের প্রতি তার সমবেদনা জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যাদের স্বাভাবিক স্কুলের দিন সন্ত্রাসে বদলে গেছে, তাদের সকলের প্রতিও আমার সমবেদনা। নিজের জীবনের ভয়ে শ্রেণীকক্ষে বন্দী থাকা এমন একটি দুঃস্বপ্ন যা কারোরই অনুভব করা উচিত নয়।”

সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, “দুঃখ ও হতাশার সঙ্গে তিনি এবং রাজপরিবারের বাকি সদস্যরা ওরেব্রোতে হামলার তথ্য পেয়েছেন।”

তিনি বলেন, ‘আমরা আজ রাতে নিহতদের পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি আমাদের সমবেদনা জানাচ্ছি। এই সময়ে আমাদের ভাবনাগুলো আহত, নিহত এবং তাদের আত্মীয়স্বজনদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত সবার প্রতি নিমিত্ত। এই অন্ধকার দিনে মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং সুরক্ষার জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করা পুলিশ, উদ্ধারকারী এবং চিকিৎসা কর্মীদের প্রতি আমি এবং আমার পরিবার আমাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই।”

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতাল ঘেরাও স্বজনদের

রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় মুঞ্জু হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স না থাকায় অক্সিজেনের অভাবে বেনু বেগম (৭০) নামে অস্ত্রোপচারের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে তিনি মারা যান।

বেনু বেগমের বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার সুজানগর মিতালী ক্লাব এলাকায়। তিনি মৃত মতিনের কন্যা এবং মৃত বশির আহম্মেদের স্ত্রী।

বেনু বেগমের স্বজনদের অভিযোগ, পায়ের হাড় ভেঙে গেলে গত ৬ এপ্রিল বেনু বেগমকে রাজশাহীর মঞ্জু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার পায়ে অস্ত্রোপচার করেন ডা. হাবিবুল হাসান। কিন্তু অস্ত্রোপচার পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তাকে কোনো পর্যবেক্ষণে না রেখে সরাসরি ওয়ার্ডে রাখা হয়। আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে বেনু বেগমের প্রচণ্ড শ্বাস কষ্ট দেখা দেয়। এ সময় তার জরুরি অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ও নার্স ছিল না, ছিল না অক্সিজেনের সিলিন্ডারও। একপর্যায়ে ছটফট করতে করতে রোগী বেনু বেগম মারা যান। 

নিহত রোগীর ছেলে মো. সনি অভিযোগ করে বলেন, ‘রাতে ডা. হাবিবুল হাসান নামের এক চিকিৎসক মায়ের অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচার পরবর্তী তাকে পোস্ট অপারেটিভ রুমে রাখা হয়নি, সরাসরি ওয়ার্ডে রাখা হয়। সকালে মায়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে তাকে অক্সিজেন দেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু হাসপাতালে ডাক্তার-নার্স কেউ ছিলেন না। কোনো চিকিৎসক-নার্স না পেয়ে আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডার খুঁজেও পেলাম না। পরে অক্সিজেনের অভাবে মা মারা যান।’

এদিকে অবহেলায় বিনা বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করে ভাঙচুরের চেষ্টা করেন। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমারসহ অন্যান্য স্টাফরা পালিয়ে যান। পরে সেখানে ছুটে যান পুলিশ সদস্য ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা বেলাল আহমেদ। এ সময় হাসপাতালের মালিকপক্ষের সঙ্গে তারা প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন। 

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিএনপি নেতা বেলাল আহমেদ বলেন, ‘অক্সিজেনের অভাবে রোগী মারা গেছেন। এখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চেয়েছে, তাই পরিবার ক্ষমা করে দিয়েছে। মামলা করলে লাশ ময়নাতদন্ত করতে হবে। এসব ঝামেলায় আমরা যাব না। তাই আমরা লাশ নিয়ে চলে যাচ্ছি। এটাই সমঝোতা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

এদিকে হাসপাতাল পরিচালক মিঠুন কুমারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। 

তবে মুঞ্জু হাসপাতালে দায়িত্বরত ও রংপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি পরিচয় দেওয়া চিকিৎসক শহিদুল ইসলাম রবিন বলেন, ‘আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরএস হিসেবে আছি। এখানে মব হচ্ছে শুনে, দৌড়ে এলাম মব ঠেকাতে। রোগীর লোকজন যেসব অভিযোগ করেছে, তা সত্য নয়। পোস্ট অপারেটিভ রুম, অক্সিজেন, নার্স সবই আছে। রোগীর হয়তো অন্য কোনো সমস্যা ছিল, তাই শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।’

রোগীর অপারেশন করা চিকিৎসক ডা. হাবিবুল হাসানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এআই’র তৈরি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ায় আত্মহত্যা করেন সুলতানা, দাবি স্বজনদের
  • অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতাল ঘেরাও স্বজনদের