শিক্ষার্থী আটকে উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলা: এসআই প্রত্যাহার
Published: 5th, February 2025 GMT
চাঁদাবাজির অভিযোগে তিন শিক্ষার্থীকে আটক করায় রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই আবু সাঈদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে তারা উত্তরা পূর্ব থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন। পরে আটক তিন জনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার রওনক জাহান জানান, এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই আবু সাঈদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের গাউসুল আজম অ্যাভিনিউ সড়কের একটি রেস্তোরাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উত্তরা পশ্চিম থানা কমিটি গঠনের লক্ষ্যে বৈঠক ছিল। বৈঠক চলাকালে বিকেল ৫টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই আবু সাঈদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে যায়। তারা একে একে সবার নাম জানতে চান। এর পর ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (আইইউবি) ছাত্র আসিফুল হক রবিন, উত্তরা টাউন ডিগ্রি কলেজের আকাশ, গাজীপুর বিএএসটির ছাত্র বাপ্পী খানকে আটক করেন।
ওই সময় তারা জানান, পুলিশের উপ-কমিশনারের নির্দেশে তাদের থানায় নেওয়া হচ্ছে। উত্তরা পূর্ব থানায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। তারা বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানা ঘেরাও করে স্লোগান দেন এবং আটকদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা উত্তরা পশ্চিম থানায় হামলা চালান। এ সময় তারা বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করা হয়। এ সময় আহত হন উত্তরা পশ্চিম থানার এএসআই মহাদেব।
ঢাকা/মাকসুদ/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভৈরবে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ডিবির দুই সদস্য বরখাস্ত
কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নেওয়া হয়। ৫ ঘণ্টা পর ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল ইসমাইল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গতকাল শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এক আদেশে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। আজ রোববার দুপুরে মুঠোফোনে কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেলোয়ার ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় পুলিশ সুপার শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ভৈরব উপজেলার মানিকদী নতুন বাজারে আমির হোসেন নামের এক ব্যক্তি মুদিদোকানে ব্যবসা করেন। অভিযোগ রয়েছে, গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস আমির হোসেনের দোকানের সামনে থামে। মাইক্রোবাস থেকে ডিবি পুলিশের আটজন সদস্য নামেন। নেমেই আমির হোসেনের কাছে জানতে চান জ্বালানি তেল বিক্রি করেন কি না। পরে ওই দোকানে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে আমির হোসেনকে বাইরে নিয়ে যেতে চান। আমির হোসেন যেতে চাননি। তখন কপালে অস্ত্র ঠেকিয়ে গাড়িতে ওঠানো হয়। পরে গাড়ি দিয়ে তাঁকে ভৈরব ও কুলিয়ারচরের বিভিন্ন প্রান্তে নেওয়া হয়। চলমান অবস্থায় তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। না দিতে পারলে এক হাজার পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার কথা বলা হয়। একপর্যায়ে এসআই দেলোয়ারের মুঠোফোন দিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আমির হোসেন যোগাযোগ করেন এবং ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তাঁকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
আমির হোসেন বলেন, ‘আমার অপরাধ আমি জানি না। গাড়ির ভেতর মারধর করা হয়েছে, টাকা দেওয়ার পর আমাকে ছাড়া হয়। বিষয়টি আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমির হোসেনের কাছে মাদক আছে—এমন অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন তাঁর কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। মনে হয়েছে, আমির হোসেনকে নিয়ে আরও কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানো গেলে মাদক পাওয়া যেতে পারে। সেই কারণে তাঁকে গাড়িতে ওঠানো হয়। কিন্তু তাতেও আমরা সফল হইনি। শেষে দুজনকে ছেড়ে দিয়েছি। এর মধ্যে লেনদেনের কোনো বিষয় নেই।’