গাজীপুরের টঙ্গীতে শুরায়ি নেজামের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপের আখেরি মোনাজাত আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। মোনাজাত পরিচালনা করবেন শুরায়ি নেজামের শীর্ষ মুরুব্বি হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের আহমেদ।

এর মাধ্যমেই শেষ হবে শুরায়ি নেজামের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার জমায়েত। তবে এ অংশের আখেরি মোনাজাতে আগের মতো বন্ধ থাকবে না যান-চলাচল।

শুরায়ি নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে গত বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের প্রথম ধাপের ইজতেমা। ব্যতিক্রমভাবে এবারই প্রথম দুই পর্বের ইজতেমার আয়োজন করেন তারা। গত ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলে ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। 

এদিকে ইজতেমাকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ হাজার সদস্যদের পাশাপাশি ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়।  

জিএমপি কমিশনার ড.

মোহাম্মদ নাজমুল করিম খান বলেন, “বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোনাজাত উপলক্ষে আগের মতো যান চলাচল বন্ধ হবে না।” 

আয়োজকরা জানান, বুধবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে হেদায়েতি বয়ান করবেন হিন্দুস্থানের মাওলানা আব্দুর রহমান। এ বয়ানের পর গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করবেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। দুপুর ১২টা থেকে ১২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন শুরায়ি নেজামের শীর্ষ মুরুব্বি হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের আহমেদ। প্রথম ধাপের আখেরি মোনাজাতও তিনিই পরিচালনা করেছেন।

ইজতেমার ঐতিহ্য অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনে বাদ আছর যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ব ইজতেমায় বরাবরই বিশেষ আকর্ষণ থাকে এ বিয়ে। দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমায় মোট ২৩টি যৌতুক বিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে ৫৮তম টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় শুরায়ি নেজামের অধীনে দুই ধাপে মোট ৮৬টি বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও প্রথম পর্বে এখন পর্যন্ত গতকাল মঙ্গলবার ১ জনসহ মোট ৭ জন মুসল্লি মারা গেছেন। 

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়, যা আজ শেষ হচ্ছে।

৮ দিন বিরতি দিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবেন ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারীরা। ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা।

ঢাকা/রেজাউল/ইমন 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ ব ইজত ম র র ইজত ম র প রথম পর ব র করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মী নিহত

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।

তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।

হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।        

সম্পর্কিত নিবন্ধ