আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে অবশেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সোয়া ১২টায় প্রশাসনিক কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে জরুরি সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন।
শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে আন্দোলন করায় আন্দোলনকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, “গত এক সপ্তাহ শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আবেদন ও আন্দোলন করে আসছিলেন। যেহেতু বিষয়টির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজনদের স্বার্থ জড়িত, তাই তাদের সবার সঙ্গে আমাদের আলোচনা করতে হয়েছে। এ কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কিছুটা সময় লেগেছে।”
তিনি আরো বলেন, “গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের পোষ্য কোটা বাতিলের বিশেষ চাহিদার কথা বিবেচনা করে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় পরীক্ষা কমিটির ওপর দায়িত্ব অর্পণ করে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা সর্বস্তর থেকে বক্তব্যগুলো কেন্দ্রীয় পরীক্ষা কমিটির জরুরি সভায় উপস্থাপন করেছি। উক্ত কেন্দ্রীয় পরীক্ষা কমিটির সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষায় পোষ্য কোটায় ভর্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”
এর আগে, পোষ্য কোটা ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে গত ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী গণঅনশন পালন করেন। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের অনশনের মুখে পোষ্য কোটা সংস্কারের করা হলে এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল ও লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
এ ঘটনার পরে দুপুর পৌনে ২টায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে বিভিন্ন হল, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার প্রদক্ষিণ করে। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের দাবিতে মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরোধ করে রাখেন।
এমন পরিস্থিতিতে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দীর্ঘ আলোচনা শেষে রাত সোয়া ১২টায় উপাচার্য পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।
ঢাকা/আহসান হাবীব/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ট র পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
মুখ ও চোয়ালের ব্যথা
মুখ ও চোয়ালের (ওরাল ও ম্যাক্সিলোফেসিয়াল) ব্যথা নানা কারণে হতে পারে। এই ব্যথা অনেক সময় সাধারণ অসুবিধা থেকে শুরু করে গুরুতর শারীরিক সমস্যার লক্ষণও হতে পারে। তবে মুখ ও এর আশপাশে ব্যথা খুবই অস্বস্তিকর ও কষ্টদায়ক। অনেক সময় এতে খাবার গ্রহণ ও পুষ্টিতে সমস্যা হয়।
দাঁতের ব্যথা: দাঁতের ব্যথা সাধারণত ক্যাভিটি, মাড়ি সংক্রমণ বা দাঁতের ক্ষয় থেকে সৃষ্টি হয়। দাঁতের সঠিক যত্ন না নিলে এটি ক্রমে বাড়তে পারে এবং সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। দাঁতের কারণে সৃষ্ট ব্যথা গাল, চোয়াল, গলা এমনকি মাথা পর্যন্ত ছড়াতে পারে। তাই মুখ ও এর আশপাশে ব্যথা হলে দাঁতে কোনো সমস্যা আছে কি না, তা প্রথমে পরীক্ষা করা জরুরি।
চোয়ালের বা গালের ওপর দিকে আছে প্যারেটিড গ্রন্থি। এই গ্রন্থিতে অনেক সময় প্রদাহ ও সংক্রমণ হতে পারে। তখন মুখ-চোয়ালজুড়ে ব্যথা হয়।চোয়ালের ব্যথা: চোয়ালের সন্ধির নাম টেমপোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্ট। চোয়ালের ব্যথা তাই সাধারণত এই টেমপোরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টের (টিএমজে) সমস্যার কারণে হয়। অতিরিক্ত চাপ, দাঁত ঘষা বা চোয়ালের মাংসপেশির সমস্যার কারণে এটি দেখা দিতে পারে। আবার কিছু বাতরোগের কারণেও এই সন্ধিতে প্রদাহ হতে পারে।
মুখের ভেতরে ঘা: মুখের ভেতরে ঘা, ক্ষত বা আলসার এবং সংক্রমণ থেকে মুখগহ্বরে জ্বালা ও ব্যথা হতে পারে। এটি তীব্র অ্যাসিডিক বা গরম খাবারের কারণে হতে পারে। আবার নানা রকম জটিল রোগেও মুখে ঘা হয়।
ট্রাইজেমিনাল নিউরালজিয়া: এতে মারাত্মক ব্যথা হয়, যা মুখ ও চোয়ালের স্নায়ু ট্রাইজেমিনাল নার্ভের প্রদাহ বা চাপের কারণে হয়। এটি তীক্ষ্ণ, তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে। মুখ নাড়লে যেমন টুথব্রাশ করতে গেলে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়।
মাড়ির সমস্যা: মাড়ির রোগ যেমন জিঞ্জিভাইটিস বা পেরিওডন্টাইটিস, মাড়িতে ব্যথা ও রক্তক্ষরণের কারণ হতে পারে।
গ্ল্যান্ডের ব্যথা: চোয়ালের বা গালের ওপর দিকে আছে প্যারেটিড গ্রন্থি। এই গ্রন্থিতে অনেক সময় প্রদাহ ও সংক্রমণ হতে পারে। তখন মুখ-চোয়ালজুড়ে ব্যথা হয়। এর একটি পরিচিত উদাহরণ মাম্পস। এই ভাইরাসের সংক্রমণে প্যারোটিড গ্রন্থি ফুলে যায় ও তীব্র ব্যথা হয়। মুখ হাঁ করতেও কষ্ট হয়।
প্রতিকার ও পরামর্শ
মুখ, মাড়ি, দাঁত বা হাড়ের যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। দাঁতের সঠিক যত্ন, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, নিয়মিত মুখ পরিষ্কার রাখা এবং স্ট্রেস কমানোর মাধ্যমে এ ধরনের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। জটিল ক্ষেত্রে ডেন্টিস্ট বা ওরাল ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মুখ ও চোয়াল এবং আশপাশের ব্যথা অবহেলা করলে এটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় রূপ নিতে পারে। তাই প্রাথমিক অবস্থাতেই সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
ডা. জেবিন জান্নাত জুঁই: ডেন্টাল ইউনিট, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম