অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গে আজ বুধবার থেকে সব পেট্রোল পাম্পে তেল বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় মালিক ও শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিনা নোটিশে বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প উচ্ছেদ করায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে উত্তরবঙ্গ ট্যাঙ্কলরি শ্রমিক ইউনিয়নের বাঘাবাড়ী অফিসে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে রাজশাহী বিভাগীয় পেট্রোল পাম্প ও ডিলার মালিক সমিতি, সিরাজগঞ্জ জেলা পেট্রোল পাম্প ও ডিলার মালিক সমিতি, বাঘাবাড়ী ঘাট পাম্প মালিক সমিতি ও উত্তরবঙ্গ ট্যাঙ্কলরি সমবায় সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

নেতারা বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো নোটিশ ছাড়াই বেশ কয়েকটি পেট্রোল পাম্প পরিদর্শনের পর অবৈধ ঘোষণা করে মাইকিং করে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ফয়সালা করলেও, নতুন করে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কয়েকটি পাম্প ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অথচ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছ থেকে বৈধভাবে লিজ নিয়ে ব্যবসা করে আসছে সবাই। বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিছু কর্মকর্তা লিজের পরিবর্তে ওই জায়গা কিনে নিতে বলছে। তেল ব্যবসায়ীরা জায়গা কিনে নিতে রাজি হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা জায়গা লিখে দেবেন না বলে জানান। এ নিয়ে মতপার্থক্যের কারণে তারা স্বেচ্ছাচারীভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। অথচ এ নিয়ে  হাইকোর্টে মামলা চলমান। এই স্বেচ্ছাচারের প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরাঞ্চলে সব ধরনের তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভারী গাড়ি উঠলেই শুরু হয় কাঁপাকাঁপি

ভারী যানবাহন উঠলেই কাঁপাকাঁপি শুরু হয় বেইলি ব্রিজটির। যে কোনো সময় ধসে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। কয়েক বছর আগে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। সেখানে কোনো সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দেওয়া হয়নি। এ কারণে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শত শত যানবহন। এ সেতু পারাপারে ভয় লাগে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
২০০৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঢাকা-বাঞ্ছারামপুর-মুরাদনগর সড়কের চরছয়আনি গ্রামে একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রামে যাতায়াতে বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার হয় সড়কটি। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত বাস, মিনিবাস, মালবাহী ট্রাক ও মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার চলাচল করছে। এ সড়কের বেইলি ব্রিজটি কয়েক বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। কিন্তু সেতুটির দুই পাশে নেই কোনো সতকর্তামূলক সাইনবোর্ড। অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই গাড়ি পারাপারের সময় সেতুটি ধসে পড়তে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
চরছয়আনি গ্রামের সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, যানবাহন পারাপার হওয়ার সময় কাঁপাকাঁপি করছে সেতুটি। সেতুর অনেক অংশে লোহার শিট দিয়ে ওয়েল্ডিং করে জোড়া দিয়ে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। কয়েক বছর আগে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। সেতুটির দৈর্ঘ্য দেড়শ ফুটের মতো। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের বাধানিষেধ অথবা ঝুঁকিপূর্ণ এ বিষয়টি উল্লেখ করে কোনো সাইনবোর্ড দেওয়া হয়নি। যেকোনো সময় অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহন যাতায়াতের কারণে ভেঙে পড়তে পারে বেইলি ব্রিজটি।
ফরদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা সুজন মাহমুদ জানান, কয়েক বছর ধরে বেইলি ব্রিজটির অবস্থা ভালো নয়। বছর দেড়েক ধরে কোনো সংস্কার করা হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেতুর দুই পাশে সড়ক ও জনপথের লোকজন কোনো সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দেয়নি। প্রতিদিন শত শত ট্রাক, বাসসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করছে। যে কোনো সময় সেতুটি ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মাসুদ মিয়ার ভাষ্য, পারাপার হওয়ার সময় সেতুটি দোল খায়। বছর দেড়েক আগে এটি সংস্কার করা হয়েছিল। এরও আগে কয়েকবার সংস্কার করা হয় সেতুটি। এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে এ সেতু। দুর্ঘটনা ঘটে হতাহত হলে দায় নেবে কে– এমন প্রশ্ন তাঁর।
ট্রাকচালক ফরিদ মিয়া বলেন, ‘বেইলি ব্রিজ দিয়ে পারাপারের সময় ভয়ে থাকি কখন যেন নিচে পড়ে যাই। চলাচলের সময় সেতুটি কাঁপে। বিভিন্ন জায়গায় ওয়েল্ডিং করে জোড়া দিয়ে রাখা হয়েছে।’ 
উজানচর কেএন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক গাজী আব্দুল হাই জানান, এ সেতু দিয়ে যাওয়ার সময় ভয় লাগে। ভারী কোনো গাড়ি উঠলে কাঁপতে 
থাকে সেতুটি। এভাবে চলতে থাকলে যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে পড়তে পারে। জরুরি 
ভিত্তিতে নড়বড়ে বেইলি ব্রিজ অপসারণ করে সেখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজামুদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, দ্রুত সময়ের মধ্যে বেইলি ব্রিজটির দুই পাশে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড লাগানো হবে। ওই জায়গায় পাকা সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। অনেক সময় নাটবল্টু চুরি হয়ে যাওয়ার কারণে সেতুর মধ্যে ঝাঁকুনি হতে পারে। বিষয়গুলো দেখার জন্য লোক পাঠানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারী গাড়ি উঠলেই শুরু হয় কাঁপাকাঁপি