ইয়াবা দিয়ে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে ফাঁসানোর অভিযোগ
Published: 4th, February 2025 GMT
হাসান আলী (৩৩) নামে এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে (সিএ) ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর গুলশান লিংক রোডে কয়েকজন ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে। পরে মারধর করে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়। পুলিশ এসে হাসানকে ধরে নিয়ে যায়। ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে পুলিশের যোগসাজশ থাকতে পারে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর স্বজনদের।
রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। অবশ্য পুলিশ মামলায় ঘটনার সময় দেখিয়েছে রাত পৌনে ১২টা। এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
স্বজনরা জানান, হাসান তেজগাঁও-গুলশান লিংক রোডে ইউএস বাংলার একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করেন। রোববার সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাড্ডার বাসায় ফিরছিলেন। সঙ্গে দুজন সহকর্মীও ছিলেন। তিনজন এসকেএস স্কাই ভবনের ফুটপাত ধরে হেঁটে পুলিশ প্লাজার দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় দুজন ব্যক্তি হাসানকে অনুসরণ করেন। হাসান হেঁটে এসকেএস স্কাই ভবনের সামনে গেলে ৮-১০ জন তাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে। হামলাকারীদের একজন হাসানের পকেটে একটি ছোট ‘প্যাকেট’ ঢুকিয়ে দেয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসানের সহকর্মী ইমাম হোসেনের বরাত দিয়ে স্বজনরা জানান, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েকজন পুলিশ সদস্য হাজির হন। আবু ঈসা নামে এক এসআই ছিলেন পোশাক পরা। পুলিশ জানায়, হাসানের পকেটে ইয়াবা পাওয়া গেছে। এরপর তাকে গাড়িতে উঠিয়ে শিল্পাঞ্চল থানায় নিয়ে যায়। এর আগেই হামলাকারীরা সেখান থেকে চলে যায়। তাদের সঙ্গে পুলিশের যোগসাজশ থাকতে পারে। পরদিন পুলিশ হাসানের নামে মাদক মামলা দেয়। ইয়াবা মামলায় হাসানকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে পুলিশের যোগসাজশ থাকতে পারে।
হাসানের মামা মো.
কেন ফাঁসানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসান ইউএস বাংলার একটি প্রতিষ্ঠানে অডিট বিভাগে চাকরি করেন। মাসখানেক আগে তার অডিটের কারণে ওই অফিসের দুজনের চাকরি চলে যায়। ওই দুজন ইয়াবা দিয়ে হাসানকে ফাঁসানোর ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। কারণ এছাড়া হাসানের কোনো শত্রু নেই।
কামরুজ্জামান বলেন, ওই রাতে আমরা তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনারের কাছে যাই। ঘটনা শোনার পর তিনি হাসানকে ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে আমরা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় ছুটে যাই। পুলিশ জানায়, হাসান ইয়াবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় বলেই তাদের ধারণা। সকালে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। হাসানকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে আমাদের কাছ থেকে মুচলেকাও নেয়। কিন্তু পুলিশ তাকে না ছেড়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দেয়। এজাহারে বলা হয়, হাসানের কাছে ১৯৩ পিস ইয়াবা পাওয়া গেছে।
মামলার বাদী তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপপরিদর্শক আবু ঈসা সমকালকে জানান, তিনি রোববার রাতে টহল ডিউটি করছিলেন। তখন দেখতে পান এসকেএস স্কাই ভবনের সামনে কয়েকজন জটলা বেঁধে আছে। তিনি ছুটে যান। এ সময় লোকজন জানায়, হাসানের পকেটে ইয়াবা আছে। এরপর হাসান ১৯৩ পিস ইয়াবা পকেট থেকে বের করে দেয়।
তিনি জানান, হাসানকে দেখে মনে হয়নি ইয়াবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকতে পারে। ঘটনাস্থল থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেন তিনি। কর্মকর্তাদের নির্দেশে হাসানকে থানায় নেওয়া হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আট বছরেও মেলেনি সাংবাদিক শিমুল হত্যার বিচার
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যাকাণ্ডের আট বছরেও বিচার পায়নি তাঁর পরিবার। ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুর পৌর এলাকায় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়। হত্যার বিচার শেষ না হওয়ায় হতাশ স্বজন ও সহকর্মীরা।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পৌরসভার সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরুসহ ৪০ জনকে আসামি করে শাহজাদপুর থানায় মামলা করেন শিমুলের স্ত্রী। ২০১৭ সালের ২ মে ৩৮ জনকে আসামি করে পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়। পরে মামলাটি শাহজাদপুর আমলি আদালত থেকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। এর পর আসামিদের নানা পদক্ষেপের কারণে অভিযোগ গঠন বিলম্বিত হতে থাকে। এর মধ্যে উচ্চ আদালতের আদেশে আসামি অনেক আগেই জামিনে ছাড়া পান। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মামলার জামিনপ্রাপ্ত আসামিরা শাহজাদপুর ছেড়ে পালিয়ে যায়।
শিমুলের স্ত্রী নুরন্নাহার বলেন, মিরুসহ ৩৮ আসামি জামিনে। উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে মামলা তুলে নিতে মিরু ও তার লোকজন প্রায় চাপ দেয়। পালিয়ে থেকেও মিরু ও তার দোসররা নানা কায়দায় চাপ দিচ্ছে। বর্তমানে বিচার পেতে অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি বিমল কুমার কুণ্ডু জানান, ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ ছয় সপ্তাহের মধ্যে শিমুল হত্যা মামলায় হাইকোর্টে স্থগিতাদেশের রুল নিষ্পত্তির আদেশ দেন। এর পরও বিচার কাজ স্থবির হয়ে আছে।
প্রতিবছর ৩ ফেব্রুয়ারি শিমুলকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সহকর্মীরা। শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবে স্মরণসভায় শিমুলের স্বজনকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। এবারও এ আয়োজন করা হয়েছে।