অনুমতি না নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় প্রবেশ করায় পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ভিয়েতনামের মালিকানাধীন ‘এমটি ডলফিন-১৯’ নামের জাহাজটি পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে সোমবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় ঢুকে পড়ে। জাহাজটি জ্বালানি তেল নেওয়ার সময় বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় কোস্টগার্ড আটক করে।  

বন্দরসচিব মো.

ওমর ফারুক বলেন, জাহাজটি মোংলা বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সেটি চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় চলে আসে। বন্দরের জলসীমায় এলে সেটি সংশ্লিষ্ট বন্দরকে অবহিত করতে হয়; কিন্তু এমটি ডলফিন সেটি না করায় ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, জাহাজটিতে ১১ হাজার ৬০০ টন মোলাসেস আমদানি করে মোংলার পি অ্যান্ড পি ট্রেডিং। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৪৫ দশমিক ৫০ মিটার ও প্রস্থ ২৩ মিটার।

সোমবারের ঘটনায় জাহাজটি বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে জরিমানা পরিশোধ করেছে। এর পরই বন্দরের ছাড়পত্র নিয়ে মঙ্গলবার রাতে মোংলার উদ্দেশে রওনা হয়।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চৈত্রের বৃষ্টিতে দুই বছর পর ভালো ফলনের আশা

আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আগের দুই বছর আমের ফলনে বিপর্যয় হয়েছে। এবার মুকুলের সময় আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। চৈত্র মাসের শুরুতেই বৃষ্টি হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছেন চাষি। তারা বলছেন, শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় গুটি ঝরা কমবে। সামনের দিনে কোনো দুর্যোগ না হলে গত দুই বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হবে। এ অবস্থায় স্প্রের পরামর্শ কৃষি বিভাগের।

চলতি বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। এতে ২ লাখ ৬০ হাজার টন উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। গত বছর প্রায় একই পরিমাণ বাগান থাকলেও অনুকূল আবহাওয়া না থাকায় ফলন বিপর্যয় হয়। ২০২৩ সালে দীর্ঘ সময় শীত থাকায় মুকুল ঠিকমতো বের হয়নি। গত বছর মুকুল বের হওয়ার সময় বৃষ্টিপাত হওয়ায় নতুন পাতা গোজায়। কিছু আগাম মুকুল গাছে থাকায় সেগুলো পচে শুকিয়ে যায়।

গত বছর ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ গাছে মুকুল ছিল। এ কারণে মৌসুম শুরু হয় চড়া দামে। শেষ হয় আরও বেশি দামে। ফলে অনেকে ঠিকমতো মধুফল আমের স্বাদ নিতে পারেননি। এবার শুরু থেকে আবহাওয়া ভালো। অন্য বছর চৈত্রে অতি তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা, খরা ও তাপদাহের কবলে ফলন বিপর্যয় হয়েছিল। এবার মুকুলের শুরু থেকেই আবহাওয়া ভালো।

গুটি মোটরদানা হওয়ার পর চৈত্রের খরায় ঝরতে থাকে বলে জানান পুঠিয়ার আমচাষি সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ সময় গাছের গোড়ায় সেচ দিতে হয়। এতে বাড়তি টাকা খরচ হতো। এবার সেই খরচ লাগেনি। সম্প্রতি বেশ ভালো বৃষ্টি হয়েছে। এতে সেচের খরচ বেঁচে গেছে। গুটি ঝরাও থাকবে না বলে আশা করা হচ্ছে। এবার ফলনের জন্য ভালো পরিবেশ আছে। 

চাষিরা বলছেন, এবার মুকুল বের হওয়ার সময় ঘন কুয়াশা বা বৃষ্টি হয়নি। গড়ে ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ গাছে এসেছে মুকুল। ফুল ফুটে গুটি মোটরদানা হতেই মিলেছে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি। ফলে গুটিঝরা রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই। তারা দিনরাত যত্ন নিচ্ছেন। ছত্রাক ও পোকার আক্রমণ থেকে আম রক্ষায় নিয়মিত স্প্রে করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন আসবে।

বানেশ্বরের আমচাষি মো. আলম হোসেন বলেন, আগের দুই বছর আবহাওয়া খারাপ থাকায় মুকুলের বদলে নতুন পাতা বের হয়েছিল। এবার প্রায় ৭৫ শতাংশ গাছে মুকুল এসেছে। আবহাওয়া এখন পর্যন্ত ভালো আছে। 

কৃষি বিভাগ বলছে, এবার ফল ধারণের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। গাছে ভালো গুটি এসেছে। এ গুটি টিকিয়ে রাখতে দ্রুত ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। বৃষ্টির কারণে এখন মাটির রস আছে। খরার কবলে পড়লে রস শুকিয়ে যাবে। এমন পরিবেশে ১৫ দিন পরপর গাছের গোড়ায় সেচ দিতে হবে। এর আগে গাছে অনুমোদিত মাত্রায় সার দিতে হবে। বালাইনাশক, সার ও সেচ দিতে পারলে আম দ্রুত বড় হবে।

শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে জানিয়ে রাজশাহী ফল গবেষণাগারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, গাছের আমের গুটি মোটরদানা হয়েছে। এখনই নির্ধারিত মাত্রায় কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক একসঙ্গে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এ স্প্রে না করলে পোকায় আক্রমণ করবে, নষ্টও হবে। ছত্রাকও আক্রমণ করতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ