পদায়নপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে প্রত্যাহার দাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 4th, February 2025 GMT
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে জামাল উদ্দীন ভূঁইয়াকে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত রোববার এক অফিস আদেশে জামাল ভূঁইয়াকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজের আয়-ব্যয়ের ক্ষমতাসহ অধ্যক্ষ ও অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ওই পদের ‘যোগ্য নন’ বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষার্থীরা। জামাল ভূঁইয়াকে অযোগ্য আখ্যায়িত করে শিক্ষার্থীরা সোমবার আন্দোলন শুরু করেন।
গতকাল মঙ্গলবারও তারা অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, জামাল ভূঁইয়াকে পদায়নের আদেশের কপি মেহেদী হাসান নামে এক শিক্ষার্থী তাঁর ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করায় তাঁকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। খান মুহাম্মদ মফিজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি হুমকি দেওয়ার পরপরই গত রোববার মেহেদী গাজীপুর মহানগরের সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। জামাল ভূঁইয়াকে প্রত্যাহারের দাবিতে তাদের আন্দোলন চলবে বলেও জানায় শিক্ষার্থীরা। কোনোভাবেই জামাল ভূঁইয়াকে অধ্যক্ষের চেয়ারে দেখতে চান না তারা। পদায়নপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জামাল ভূঁইয়া বলেন, তিনি নিজের ইচ্ছায় এই দায়িত্ব নেননি। কর্তৃপক্ষ দিয়েছে। তারা যদি প্রত্যাহার করে তাহলে চলে যাবেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইজতেমার জন্য কর্মসূচি শিথিল করলেন তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা
বিশ্ব ইজতেমার কথা বিবেচনা করে ‘ব্লকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি শিথিল করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আন্দোলনরত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোববার দুপুর ১২টায় ক্যাম্পাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনে সম্মুখ সারিতে থাকা ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আলি আহমদ।
তিনি বলেন, আজ বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ছিল। এতে সারা দেশ থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন। তাই তাদের কথা চিন্তা করে আমরা শুধু আজকের জন্য আমরা রেলপথ ও ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়ের ব্লকেড কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি। কিন্তু নর্থ সিটির ভেতরে অন্য সড়কগুলোতে ব্লকেড কর্মসূচি চলমান থাকবে।
আলি আহমদ বলেন, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি গত ২৮ বছরের। জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে গঠিত সরকারের কাছে নতুন করে দাবি পূরণের আবদার করেছি। এজন্য যতগুলো মাধ্যম ছিল সবগুলো মাধ্যমেই আমরা দাবি জানিয়েছি। সেখান থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে সর্বশেষ আমরা অনশন কর্মসূচি দেই। আজ অনশনের পঞ্চম দিনে এসেই রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ কোনো সাড়া দেয়নি। এখন আমাদের ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী দেখছে তাদের ভাইয়েরা এখানে অনশন করে মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে কিন্তু রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ সাড়া দিচ্ছে না। তাই তারা আল্টিমেটাম দিয়েছে ব্লকেড টু ঢাকা নর্থ সিটি।
তিতুমীর কলেজে কেন আন্দোলন-অনশন
সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে বেশ কয়েকমাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে মিছিল, সড়ক-রেলপথ অবরোধ, স্মারকলিপি প্রদান, ক্লাস বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ কমিটিও গঠন করা হয়। তবে সম্প্রতি এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেয়ে গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
যদিও পরদিন বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবিগুলো হচ্ছে—
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।
৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় আইন এবং জার্নালিজম বিষয় সংযোজন করতে হবে।
৫. একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।
৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।