Samakal:
2025-02-05@06:48:46 GMT

গ্রন্থাগারজুড়ে পাঠকশূন্যতা

Published: 4th, February 2025 GMT

গ্রন্থাগারজুড়ে পাঠকশূন্যতা

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পাঠক সংকটে ভুগছে  গ্রন্থাগার। সরকারি পর্যায়ে দুটি গ্রন্থাগার গড়ে উঠলেও পাঠকের উপস্থিতি কম। একই কারণে বেশির ভাগ বেসরকারি গ্রন্থাগার বন্ধ হয়ে গেছে।
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো দিবসটি উদযাপন করা হয়। জনগণের পাঠাভ্যাস সৃষ্টির লক্ষ্যে ও সরকারি-বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোর কার্যক্রম গতিশীল করতে দিবসটি উদযাপন করা হয়। একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে গ্রন্থাগারের বিকল্প নেই। 
বইয়ের প্রতি পাঠকের আগ্রহ বাড়াতে সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এবং পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর বাড়িতে জেলা পরিষদের অর্থায়নে গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে গ্রন্থাগার থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে খুব কম দেখা যায়। বর্তমানে সোনারগাঁ গঙ্গাবাসী ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি গ্রন্থাগার রয়েছে, তবে সেটিও প্রায় পাঠকশূন্য। তিনটি গ্রন্থাগারে ৩১ হাজারের বেশি বই, ম্যাগাজিন ও পত্রিকা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে সেগুলো অবহেলায় পড়ে রয়েছে।
গ্রন্থাগারের সহকারী গ্রন্থাগারিকদের মতে, খুব কম পাঠকই বই পড়তে আসেন। অনেকে এলেও শুধু বই হাতে নিয়ে সেলফি তুলে চলে যান। পাঠকদের মধ্যে পড়ার অভ্যাস কমে গেছে। 
লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের গ্রন্থাগার
১৯৯১ সালে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে লোক ও কারুশিল্পের ওপর গবেষণার জন্য লাইব্রেরি ও ডকুমেন্টেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে প্রায় ১২ হাজার দেশি-বিদেশি লেখকের প্রবন্ধ, কবিতা, গবেষণা গ্রন্থ, ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে। গবেষক ও দর্শনার্থীরা এখান থেকে গবেষণার জন্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে পারেন। এটি সব পাঠকের জন্য উন্মুক্ত।
জ্যোতি বসু মেমোরিয়াল গ্রন্থাগার
২০১০ সালে জ্যোতি বসুর মৃত্যুর পর তাঁর স্মৃতি ধরে রাখতে বারদী ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামে ২০১১ সালের ৪ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের অর্থায়নে ১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি গ্রন্থাগার নির্মাণ করা হয়, যা ২০১৩ সালের ২৪ আগস্ট উদ্বোধন করা হয়। সেখানে প্রায় ২ হাজার ৬০০ দেশি-বিদেশি বই সংরক্ষিত রয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগার
সোনারগাঁয়ের শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ গঙ্গাবাসী ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে একটি গ্রন্থাগার রয়েছে, যেখানে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার বই রয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ কমতে থাকায় এই গ্রন্থাগারটিও কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের গ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ১২ হাজার দেশি-বিদেশি গল্প, উপন্যাস, ভ্রমণ কাহিনী ও গবেষণাধর্মী বই থাকলেও পাঠকশূন্যতা বিরাজ করছে। প্রতিদিন ১০-১৫ জন পাঠক বই পড়তে এলেও প্রায় ২০০ দর্শনার্থী প্রবেশ করেন, যাদের অধিকাংশই বই হাতে নিয়ে ছবি তুলে চলে যান।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন পাড়া, মহল্লা ও সংগঠনের উদ্যোগে গড়ে ওঠা গ্রন্থাগার। পাঠকের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হলে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। 
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের লাইব্রেরিয়ান ও ক্যাটালগার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মো.

মনিরুজ্জামান বলেন, পাঠকশূন্যতায় রয়েছে গ্রন্থাগার। অধিকাংশ দর্শনার্থী বই হাতে নেন না। 
জ্যোতি বসু মেমোরিয়াল গ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মাজেদা বেগম জানান, মানুষের বইয়ের প্রতি আগ্রহ নেই। বেশির ভাগ সময় গ্রন্থাগার ফাঁকা থাকে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাদের অলস সময় কাটাতে হয়। 
সোনারগাঁ গঙ্গাবাসী ও রামচন্দ্র পোদ্দার ইনস্টিটিউশন মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক মানিক চন্দ্র দাস বলেন, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা পাঠক সংখ্যা কমার অন্যতম কারণ।
প্রতিষ্ঠানটির সহকারী লাইব্রেরিয়ান বিপ্লব চন্দ্র বর্মণ বলেন, শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্য তালিকা করে বই বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। লাইব্রেরি রুমে বসে পড়ার আগ্রহ না থাকায় বিকল্প উপায় খোঁজা হচ্ছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পটুয়াখালীতে সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় জহিরুল ইসলাম মিরন নামের এক সাংবাদিককে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাসার সামনে ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে কুয়াকাটার তুলাতলী ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জহিরুল ইসলাম মিরন কুয়াকাটা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাভিশনের কুয়াকাটা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। পাশাপাশি তিনি কুয়াকাটা পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাস থেকে নেমে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা দেন জহিরুল। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক বরিশালে পাঠান। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রেফার করা হয়েছে।

মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ফিলিং স্টেশন ও আশেপাশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে চিহ্নিত করতে না পারলেও শিগগিরই সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’’

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘‘একজন সাংবাদিকের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনও ব্যথিত। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশকে উপজেলা প্রশাসন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।’’

ঢাকা/ইমরান/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ