বাংলাদেশের মতো নাজুক অর্থনৈতিক অবস্থা হলে শ্রীলঙ্কাকে খুঁজেই পাওয়া যেত না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করার পর গণভবন দখলে নেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ ঘটনাতেই অনেকে খুঁজে পান শ্রীলঙ্কার স্মৃতি। কয়েক মাস ধরে চলা আন্দোলনের মুখে ২০২২ সালের ১২ জুলাই রাতে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তাঁর পরিবার দেশ ছেড়ে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে চলে যান। 
অর্থনীতির নিরিখে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে অর্থ উপদেষ্টার। তিনি বলেন, অনেকে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করে। শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশ এক নয়। এখন আমাদের ১২টা ব্যাংক ফাংশনালি এফেক্টিভ। ৬০টি ব্যাংকের মধ্যে বাকি ব্যাংকগুলো চলছে খুঁড়িয়ে। বিশ্বের কোনো দেশে এরকম হয়েছে?
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এক-তৃতীয়াংশ ব্যাংক কাজ করে না। বাংলাদেশের তুলনায় অর্থনীতির দিক থেকে শ্রীলঙ্কায় স্বস্তিকর পরিস্থিতি ছিল। সেখানে এত চ্যালেঞ্জ ছিল না। যে সরকারই আসে, তাদের সাপোর্ট করা হতো। বাংলাদেশে তো অনেক চ্যালেঞ্জ। অনেকে আমাদের পছন্দ করে না, বলে– ‘চলে যান’। এর মধ্যেও সরকার চেষ্টা করছে। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকার যদি কাউন্টার পদক্ষেপগুলো না নিত, তাহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি কিন্তু অকল্পনীয় অবস্থায় চলে যেত। সব ব্যাংক থেকে অর্থ চলে গেছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এমন হয়েছে? আমানতকারীর টাকাসহ নিয়ে গেছে। এখন তো টাকাই নেই। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেওয়া হচ্ছে। সরকার পরিকল্পনা করছে, কীভাবে বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষুদ্র ও মাঝারিসহ অন্যদের দেওয়া যায়।
ভ্যাট বাড়ার কারণে মানুষ চাপে পড়ছে, বিষয়টি অনুভব করলেও কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে এটা করতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা। অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবে যতটা না ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে, ব্যবসায়ীরা তার চেয়ে বেশি হারে দাম বাড়াচ্ছেন বলে তাঁর অভিযোগ। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী বাজেটে ভ্যাটের বিষয়টি সংশোধন করা হবে।
এ ছাড়া চাল, মসুর ডালসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে সরকার আমদানির ব্যবস্থা করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, যেভাবে হোক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে বিদেশি মুদ্রার সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। এসব পণ্যের সরবরাহ সরকার কোনোভাবেই কমতে দেবে না। বৈঠকে সরকারিভাবে চাল, ডাল, সারসহ বেশ কয়েকটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড স ল হউদ দ ন আহম দ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় থাকায় স্বস্তি

গত বছরের তুলনায় এবার পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে স্থিতিশীল আছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।

শুক্রবার (৭ মার্চ) রাজধানীর নিউ মার্কেট ও কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র রমজানের শুরুতে সয়াবিন তেলের যে সরবরাহ সংকট ছিল, তা এখন অনেকটাই কমেছে। তবে, চাহিদা বেশি ও উৎপাদনের মৌসুম না হওয়ায় বেড়েছে লেবুর দাম। এখন বাজারে এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। এখন বাজারে প্রতি কেজি বেগুন মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ২৫ থেকে টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি শসা ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৫০ টাকা, জালি কুমড়া ৫০ টাকা, প্রতি পিস মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা এবং বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকায়। পেঁয়াজের কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, রসুনের কেজি ২৩০ টাকা ও দেশি আদার কেজি ১২০ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং ছোলা ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নদীর মাছ বাদে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে চাষের মাছের দাম কিছুটা কমেছে। এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ২২০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়।

এখন প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ থেকে টাকায়। খাসির মাংসের দাম ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা প্রতি কেজি।

রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডি ডটকম বলেছেন, গতবারের রমজানের তুলনায় এবার অধিকাংশ পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে। তবে, লেবুর দাম বেশি। রমজানে সবাই ইফতারে লেবুর শরবত খেতে চায়। কিন্তু, চাহিদামতো লেবুর সরবরাহ নেই। আশা করি, লেবুর দামও কমবে।

রাজধানীর নিউ মার্কেটর সবজি বিক্রেতা মো. মেহেদী হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন, বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্রায় সব সবজির দাম কমছে। ক্রেতারাও চাহিদা অনুযায়ী সবজি কিনতে পারছেন। লেবুর দাম সামান্য বেশি। এখন লেবুর মৌসুম না থাকায় সরবরাহ কম।

ঢাকা/রায়হান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, অন্য পণ্যের দামও বাড়তি
  • রোজার বাজারে ভিন্ন অভিজ্ঞতা এবার
  • দুই পানি শোধনাগার প্রকল্প ১০ বছর ধরে আটকা, প্রধান উপদেষ্টার বিস্ময়
  • যমুনা সার কারখানার উৎপাদন শুরু, গ্যাসের চাপ কম
  • মানিকগঞ্জে রমজানে তৃষ্ণা মেটায় ‘সাহিদুলের মাঠা’
  • এবার রোজায় বড় ব্যবসা করল ইউরোপের কোম্পানি
  • খুঁটির জোরবিহীন ইউক্রেন
  • ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ২৫ কোটি ডলারের অস্ত্র চুক্তি
  • ১ ঘণ্টার বাজারে কোটি টাকার দুধের বাণিজ্য
  • নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় থাকায় স্বস্তি