রমজানে কম লাভ করে জনগণের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
Published: 4th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
আসন্ন রমজান মাসে লাভের পরিমাণ কমিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়িতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভা শেষে এসব বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা ইফতার পার্টি করবে, এটা করবে সেটা করবে। এসব না করে কীভাবে জিনিসপত্রের দাম কম থাকে এটার ব্যবস্থা করুক।
প্রতিবছর রমজানের আগে সরকার থেকে আশ্বাস দেওয়া হয় নিত্যপণ্যের দাম নাগালের মধ্যে থাকবে। কিন্তু আশ্বাস কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবায়ন হয় না- এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সরকার মনেপ্রাণে চায় যেন নিত্যপণের দাম কোনো অবস্থাতেই না বাড়ে। আপনারা যদি অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করেন এবং আমাদের দেশে দেখেন যেমন খ্রিস্টানরা তারা তাদের ক্রিসমাসের সময় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে দেয়। অন্যান্য ধর্মের মানুষও দাম কমিয়ে দেয়। কিন্তু আমাদের বিজনেসম্যানরা ভাবেন যে এটাই বুঝি তাদের আয়ের মাস। এটা আপনাদেরকেই বলতে হবে যে তোমরা এই সময়ে প্রফিট মার্জিনটা (লাভের পরিমাণ) কমিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াও। এটা কিন্তু একটা বড় ধরনের সওয়াব হবে। আমাদের তো হয় উল্টো। রোজার মাসেই কিন্তু ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি আয় করতে চান। এটা যেন না করে এ বিষয়ে আপনাদের সজাগ হতে হবে।
তিনি বলেন, এবার আমাদের ছোলা বা অন্যান্য পণ্য অনেক বেশি আমদানি করা হচ্ছে। আমাদের মনে হয় না কোনো অসুবিধা হবে এবং জিনিসপত্রের দাম একটা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। নাগালের মধ্যে থাকবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রমজানের সময় সবজির একটু ট্রানজিট পিরিয়ড হবে। সিজিনাল সবজি শেষ হয়ে যাবে, খামারের সবজি আসবে। এই ট্রানজিট পিরিয়ডটার দিকেও একটু খেয়াল রাখতে হবে। এই শীতকালীন সবজি সংরক্ষণ করার জন্য নতুন একটা কোল্ডস্টোরেজ করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কনটেইনারে যেন ৬ মাস ৮ মাস ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, গাজর রেখে দিতে পারে সে বিষয়ে আমাদের চিন্তাভাবনা আছে। কাজ শুরু হয়ে গেছে, কিছুদিনের মধ্যে আমরা রাখার ব্যবস্থা করবো। এমনকি আমরা ফলও রেখে দিতে পারবো।
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সারের দাম বাড়ানো হচ্ছে এবং কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সবখানেই তদবির বাণিজ্য, পদোন্নতি এবং পদবঞ্চিত করার অভিযোগ উঠছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমি এখানে আসার পর আপনারা একটা উদাহরণ দেন যে এটা করা হয়েছে। পদোন্নতি প্রপার জায়গা (যোগ্য ব্যক্তিকে) না দিয়ে যোগ্যছাড়া দেওয়া হয়েছে। এমন একটা উদাহরণ আপনারা দেখিয়ে দেন। আমি যদি দুর্নীতি করি আপনারা লিখে দেন। আপনারা সত্যি কথা লিখবেন এটাই আমরা চাই। তবে হ্যাঁ চাঁদাবাজির কারণে অনেক সময় জিনিসের দাম বেড়ে যায়। চাঁদাবাজির মাধ্যমে যাতে জিনিসপত্রের দাম না বাড়ে সেজন্য চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, আমি উপদেষ্টা হওয়ার পর থেকে আমার আত্মীয়স্বজনের সংখ্যাও বেড়ে গেছে, বন্ধুবান্ধবের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। যারে আমি কোনোদিন দেখিনি সেও এসে বলে ভাই আপনার সঙ্গে একসঙ্গে পড়াশুনা করছি। কিছু কিছু বাঙালির এই সমস্যা। এজন্য আমাদেরও কেয়ারফুল (সতর্ক) থাকতে হয়।
রমজানের সময় যদি কোনো সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়ায় সেক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যদি সিন্ডিকেট করে তাহলে সে শুধু জনগণের কাছে না আল্লাহর কাছেও কিন্তু দায়ী থাকবে। তাছাড়া এই ক্ষেত্রে আপনারা সবাইকে সচেতন করবেন এবং যতটা অ্যাকশন (ব্যবস্থা) নেওয়ার আমরা ততটাই নেবো।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: জ ন সপত র র দ ম জনগণ র ব যবস আপন র রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য যেন প্রকৃতপক্ষেই জাতীয় হয়ে ওঠে: আলী রীয়াজ
সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করাই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছেন এই কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, শুধু কোনো বিশেষ সমাজের বা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর বা বিশেষ কোনো অংশের প্রতিনিধিত্ব নয়—এমন ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে, তা যেন প্রকৃতপক্ষেই জাতীয় হয়ে ওঠে।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এ কথাগুলো বলেন। ঐকমত্য কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির পর আজ থেকে আবারও সংস্কার প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল আজ আলোচনায় অংশ নেয়। কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। আগামীকাল বেলা তিনটায় নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
এবি পার্টির সঙ্গে আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করাই তাঁদের প্রচেষ্টা, যাতে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নের দিকে মনোনিবেশ করা যায়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি সংস্কার বিষয়ে কীভাবে সাধারণ নাগরিকদের অংশগ্রহণের পথ উন্মুক্ত করা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কমিশন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনগণের মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা করছে। তা ছাড়া সর্বস্তরের মানুষের মতামত নিশ্চিত করতে একটা জরিপ শুরু করার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। খুব শিগগির সুনির্দিষ্টভাবে এ ব্যাপারে জানানো হবে।
নমনীয় থাকবে এবি পার্টিঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা শেষে এবি পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বৈঠকে জানান, জাতীয় ঐক্য ও একটি গ্রহণযোগ্য সংস্কার প্রস্তাবে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বার্থে এবি পার্টি নমনীয় অবস্থানে থাকবে। দলের পক্ষ থেকে যে ৩২টি প্রস্তাবে দ্বিমত ও ২৬টি বিষয়ে আংশিক একমত পোষণ করা হয়েছিল, তার ব্যাখ্যাসহ দলের মতামত বৈঠকে তুলে ধরা হয়। এবি পার্টি জানায়, সার্বিক আলোচনার পর দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের ব্যাপারে এবি পার্টির যে ভিন্নমত ছিল, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।