রান্না-ভাজা নানাভাবে প্রতিদিন মাছ খাওয়া হয়। স্বাদে ভিন্নতা আনতে ঘরে তৈরি করতে পারেন মাছের বারবিকিউ। রেসিপি দিয়েছেন সীমা পুষ্প
রূপচাঁদা
উপকরণ: রূপচাঁদা মাছ ১টি, দই ১ টেবিল চামচ, বারবিকিউ মসলা ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১/২ চা চামচ, লালমরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/৩ চা চামচ, ধনে গুঁড়া ১/২ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১/২ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া সামান্য পরিমাণে, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: মাছ ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। পাত্রে দই, আদা-রসুন বাটা, লবণ, মরিচ গুঁড়া, হলুদ, ধনে, জিরা, গরম মসলা মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই মসলার মিশ্রণটি মাছে ভালো মতো মেখে ঘণ্টাখানেক রেখে দিন। বারবিকিউ গ্রিল কয়লার ওপর বসিয়ে মাছ দিন। বারবার তেল ব্রাশ করুন। মাছ হয়ে গেলে লেটুস পাতা, লেবু ও কাঁচামরিচ দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
তেলাপিয়া
উপকরণ: তেলাপিয়া মাছ ১টি, টক দই ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, বারবিকিউ মসলা ১ চা চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১/২ চা চামচ, লালমরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/৩ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া সামান্য, সরিষার তেল ও লবণ পরিমাণমতো।
প্রস্তুত প্রণালি: ভিনেগার দিয়ে মাছ ভালোমতো মাখিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে দিলে মাছের গন্ধ দূর হবে। মেরিনেশন: একটি বাটিতে টক দই, রসুন-আদা বাটা, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, লালমরিচ গুঁড়া, হলুদ, গরম মসলা, বারবিকিউ মসলা, লবণ ও তেল মিশিয়ে একপাশে রেখে দিন। তেলাপিয়া মাছের গায়ে হালকা করে ছুরি দিয়ে কেটে নিতে হবে। এতে মসলা ভালোভাবে ঢুকবে। এবার আগে করে রাখা মসলাগুলো মাছের গায়ে ভালোভাবে মাখিয়ে ৪০-৫০ মিনিট রেখে দিন। পরে কয়লার আগুনে বারবিকিউ গ্রিলে মাছ রাখুন এবং মাঝে মধ্যে তেল ব্রাশ করুন। ১০-১২ মিনিট পর উল্টে দিন। আরেক পাশ গ্রিল করুন। হয়ে গেলে গ্রিল থেকে নামিয়ে লেটুস পাতা, কাঁচামরিচ ও লেবু দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
কোরাল
উপকরণ: কোরাল মাছ ১টি, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, টক দই ১ টেবিল চামচ, আদা-রসুন বাটা ১চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১/২ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, বারবিকিউ মসলা ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, সরিষা তেল অথবা অলিভ অয়েল ২ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালি: কোরাল মাছ ধুয়ে নিন। ছুরির সাহায্যে মাছের গা চিরে নিন। লেবুর রস ও লবণ দিয়ে মাখিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন। এরপর সব মসলা ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে মাছের ওপর ভালোভাবে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। বারবিকিউ গ্রিলে মাঝারি আঁচে ২০-২৫ মিনিট গ্রিল করে নিন। মাঝে মধ্যে তেল ব্রাশ করুন। হয়ে গেলে লেটুস পাতা, টমেটো, লেবু দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বৈশাখের কয়েক পদ
আসছে পহেলা বৈশাখ। বাংলা বছরের নতুন দিনটি বরণ করে নিতে বাঙালিয়ানা পোশাকের সঙ্গে চলে খাবারের রকমারি আয়োজন। পহেলা বৈশাখে ঘরে তৈরি করতে পারেন এমন কয়েক পদ খাবারের রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী মিতা আজহার ও আফরোজা খানম মুক্তা
ইলিশ মাসালা
উপকরণ: ইলিশ মাছ ৪ টুকরা, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, টকদই ২ টেবিল চামচ, চিনি সামান্য, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, কাঁচামরিচ ৪টি, তেল আধা কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি: মাছ ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। তেল, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ বাদে সব উপকরণ দিয়ে মাছ ম্যারিনেট করে রেখে দিন আধা ঘণ্টা। এবার চুলায় ফ্রাইপ্যান বসিয়ে তেল দিন, গরম হলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে বাদামি করে ভেজে ম্যারিনেট করা মাছ দিয়ে রান্না করুন। উল্টে দিন, আধা কাপ পানি দিন, কাঁচামরিচ ফালি করে দিন, তেল ওপরে ভেসে এলে নামিয়ে নিন। ভাত ও পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করুন মজাদার ইলিশ মাসালা।
কাঁচা আমে টেংরা মাছের ঝোল
উপকরণ: টেংরা মাছ ১০টি, কাঁচা আম ২টি, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, মরিচ গুঁড়া সামান্য, ধনে গুঁড়া আধা চা চামচ, জিরা গুঁড়া সামান্য, পাঁচফোড়ন গুঁড়া চা চামচের চার ভাগের ১ ভাগ, কাঁচামরিচ ২/৩টি, লবণ স্বাদমতো, তেল ২ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: মাছ কেটে ধুয়ে নিন। আম কেটে ফালি করে নিন। ফ্রাইপ্যানে তেল দিয়ে গরম হলে রসুন কুচি দিয়ে বাদামি রং করে ভেজে অল্প একটু পানি দিয়ে পেঁয়াজ বাটা দিয়ে নেড়েচেড়ে দিন। এবার পাঁচ ফোড়ন গুঁড়া ও কাঁচামরিচ বাদে একে একে বাকি সব উপকরণ দিয়ে কষিয়ে পানি দিয়ে ঝোল ঝোল করে রান্না করুন। পাঁচ ফোড়ন গুঁড়া ও কাঁচামরিচ ফালি দিয়ে দিন। এভাবে তৈরি করে নেন কাঁচা আমে টেংরা মাছের ঝোল।
রসগোল্লা
উপকরণ: ১. ছানা–২০০ গ্রাম, ২. সুজি–১ চা চামচ, ৩. ময়দা–৩ চা চামচ, 8. এলাচ গুঁড়া–১ চিমটি, ৫. চিনি অর্ধেক চা চামচ, ৬. সিরা চিনি–২৫০ গ্রাম, ৭. পানি দেড় কাপ।
প্রণালি: ১ লিটার তরল দুধ ফুটে উঠলে টক দই বা লেবুর রস বা সিরকা দিয়ে ছানা তৈরি করে নিন। পরে চালনিতে পাতলা কাপড় রেখে ৩০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখতে হবে। ছানা, সুজি, ময়দা, চিনি, এলাচ গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে হাতে তেল মাখিয়ে ১৬টি ভাগ করে মিষ্টি বা বল বানিয়ে নিন। চিনি, পানি একসঙ্গে জাল দিয়ে সিরা তৈরি করে নিতে হবে। সিরা ফুটে উঠলে সব মিষ্টি ছেড়ে চুলার তাপ বাড়িয়ে ১০ মিনিট ঢাকনাসহ রান্না করুন। পরে চুলার তাপ মিডিয়াম করে ঢাকনাসহ ২০ মিনিট রান্না করুন। চুলা থেকে নামিয়ে সিরার ভেতর ৮-১০ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর পরিবেশন করুন। তৈরি হয়ে গেল রসগোল্লা।
শুঁটকি ভর্তা
উপকরণ: টেংরা, পুঁটি, ছোট মাছের শুঁটকি ১ কাপ, পেঁয়াজ টুকরো করে কাটা ২টি, রসুনের কোয়া
৬/৭টি, কাঁচামরিচ ৭/৮টি, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ১ চা চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে ফ্রাই প্যানে তেল দিয়ে রসুন, পেঁয়াজ একটু ভেজে নিন। এবার কাঁচামরিচ দিয়ে ভেজে উঠিয়ে নিন। ওই প্যানে শুঁটকি ভেজে নিন। লবণ দিয়ে পাটায় বেটে অথবা ব্ল্যান্ডারে অল্প সময় ব্ল্যান্ড করে নিন। তৈরি হয়ে গেল শুঁটকি ভর্তা। ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন মজাদার ঝাল ঝাল শুঁটকি ভর্তা।
নারকেলের নাড়ু
উপকরণ: নারিকেল ২টা, গুড় বা চিনি ১ কাপ, এলাচ ও দারচিনি ২/৩ পিস করে, গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ, মুড়ি বা চাল ভাজা গুঁড়া আধা কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে নারকেল কুরিয়ে নিতে হবে। কোরানো নারকেল, গুড়, চিনি, এলাচ ও দারচিনি একসঙ্গে মাখিয়ে ঘণ্টাখানেক রেখে দিন। পরে চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে নারকেলের মিশ্রণ দিয়ে নাড়াচাড়া করে এমন অবস্থায় নামাতে হবে যেন নারকেল ও গুড় বা চিনি আঠালো হয়ে আসে। পরে গুঁড়া দুধ ও মুড়ি বা চাল ভাজা গুঁড়ো দিয়ে আবারও নেড়ে নামিয়ে নিন। হাতে ঘি মাখিয়ে গরম গরম গোল করে নাড়ু বানিয়ে মুড়ির গুঁড়োয় গড়িয়ে মাখিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেল নারকেলের নাড়ু।
শজিনা ডাঁটায় মসুর ডাল
উপকরণ: শজিনা ডাঁটা ১ আঁটি, মসুর ডাল ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২টি, রসুন কুচি ১ টেবিলে চামচ, কাঁচামরিচ ৪/৫ টি, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, জিরা গুঁড়া আধা চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ৩ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি: শজিনা ডাঁটা টুকরো করে কেটে ধুয়ে নিন। মসুর ডাল ধুয়ে নিন। এবার চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে তেল দিন, গরম হলে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে নেড়েচেড়ে বাদামি রং হলে শজিনা দিয়ে মসুর ডালসহ একে একে বাকি উপকরণ দিয়ে কষিয়ে নিন। পরিমাণমতো পানি দিন, শজিনা ডাঁটা ও ডাল সেদ্ধ হয়ে মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিন। গরম ভাতের সঙ্গে খেতে মজা শজিনা ডাঁটার মসুর ডাল।