Samakal:
2025-02-05@07:01:12 GMT

এ সময়ে ত্বকের যত্ন

Published: 4th, February 2025 GMT

এ সময়ে ত্বকের যত্ন

বসন্তের সময়গুলো কেমন যেন। সবাই ভাবে বসন্তে চারপাশে বইবে প্রশান্তির সুবাতাস। অথচ এ সময়টায় কখনও ঠান্ডা অনুভব হয়, আবার কখনও বা ভ্যাপসা গরম। সেই সঙ্গে বাতাসে ভেসে বেড়ায় ধুলাবালি, ফুলের রেণু। এসব থেকে অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যায়। বেড়ে যায় চুলকানি ও ত্বকের অন্যান্য সমস্যা। তাই বসন্তে ত্বকের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে। নয়তো অল্পতেই ব্রণ, অ্যাগজিমাসহ নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।
ভেষজ পণ্যের প্রতিষ্ঠান আমলকীর সিইও নন্দিতা শারমিন জানান, সারাবছরই ত্বকের যত্ন সঠিকভাবে নিতে হবে। ঘুম থেকে ওঠে, বাইরে থেকে ফিরে ভালো মানের ক্লিনজার কিংবা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। সেই সঙ্গে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। 
তিনি জানান, শীত-গরম কিংবা বসন্ত, সবসময়ই ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখতে হবে। বসন্তে হালকা বাতাস থাকার কারণে ত্বকে টানটান অনুভব হয়। তাই শীতে যে ধরনের লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা হয়, এ সময়ও সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। যাদের ব্রণের সমস্যা নেই তারা চাইলে তেল মালিশ করতে পারেন। বসন্তে বাইরে রোদের দাপট থাকে। বাইরে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। ট্যান দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন। বেসনের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া ও দুধ মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। এতে রোদে পোড়া দাগ দূর হবে। আবার ধুলাবালি থেকে ত্বকে সমস্যা হলে তা দূর হবে– জানান নন্দিতা। 
কোন ধরনের ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার?    
শিওর সেল মেডিকেলের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা.

তাওহীদা রহমান ইরিন জানান, বসন্তে ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন ভিন্ন হবে। বসন্তকালে সকালে জোজোবা অয়েলযুক্ত ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুতে পারেন। এতে ত্বক ভালো থাকবে। রাতে গ্লাইকোলিক এসিডযুক্ত বা স্যালিসালিক এসিডযুক্ত ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলে উপকার পাবেন। শুষ্ক ত্বকের অধিকারীরা সারাবছর গোট মিল্ক বা ক্যামোমাইলের নির্যাসযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন।
ইরিন জানান, যাদের ত্বক স্বাভাবিক তারা ভিটামিন-ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্য সব ঋতুতে ত্বকে হায়ালুরনিক এসিডযুক্ত সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সব ধরনের ত্বকের জন্য মানানসই। শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের ক্ষেত্রে এর সঙ্গে আরও কিছু ময়েশ্চারাইজার উপাদান মেশাতে হবে। যাদের ত্বক অনেক শুষ্ক, তারা সিরামাইড, লিপিড ফ্যাটি এসিডযুক্ত ক্রিমি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। 
প্রাকৃতিক উপাদানে রূপচর্চা
lত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে ঘরে বসেই রূপচর্চা করতে পারেন। এ জন্য শসা কুচি করে তা থেকে রস বের করে নিন। এর সঙ্গে এক চামচ চিনি ভালো করে মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। এটি ত্বকে মেখে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। শসার রস ত্বককে সতেজ ও কোমল করবে। এর ব্যবহারে ত্বকের পোড়া ভাব দূর হবে। 
lএকটি টমেটো চটকে তার সঙ্গে আধা চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এই প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের দাগছোপ মিলিয়ে যাবে।
lচাইলে মসুর ডাল দিয়েও রূপচর্চা করতে পারেন। এ জন্য দুই চামচ মসুর ডাল সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে তা বেটে নিন। তার সঙ্গে অল্প দুধ ও আমন্ড তেল মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এই প্যাক মুখে মেখে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। মসুর ডাল ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে কাজ করবে।  
lএকটি ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়েও ত্বকে লাগাতে পারেন। ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতেও ত্বক কোমল ও টানটান হবে। যাদের লেবুর রসে এলার্জি হয়, তারা এটি এড়িয়ে চলুন।
lযাদের ত্বক অনেক শুষ্ক তারা পাকা কলা বা পাকা পেঁপের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে নিন। এটি মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন।
lযাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা শসা, আপেল, কমলার রস ও টক দই একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। 
lসপ্তাহে একদিন ত্বক স্ক্রাব করা জরুরি। এ জন্য চিনি, লেবুর রস, অলিভ অয়েল ও চালের গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ দিয়ে কিছুক্ষণ ত্বক ম্যাসাজ করে ধুয়ে নিন। 
বাড়তি টিপস 
ত্বক সতেজ ও সুন্দর রাখতে আর্দ্রতা রক্ষা করতে হবে। এ জন্য প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। মৌসুমি ফল ও সবজি বেশি করে খেতে হবে। ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার বাদ দিতে হবে। রাত না জেগে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। কেননা ঠিকভাবে না ঘুমালে ত্বকের কোলাজেন কমে যায়, ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে। v
মডেল: হৃদি; ছবি: আর্কাইভ

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ব যবহ র করত ১০ ম ন ট এ জন য ধরন র বসন ত সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই

ছোটবেলা থেকেই চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করার ইচ্ছা ছিল সুশোভনের। সন্তানকে ভবিষ্যতে একজন ভালো মানুষ আর সৎ চিকিৎসক হিসেবে দেখার স্বপ্ন বুনতেন বাবা-মাও। স্বপ্নপূরণের প্রাথমিক ধাপ যে স্বপ্নের মতো হবে, তা কখনও কল্পনাতে ছিল না। 
সহপাঠীদের তাক লাগিয়ে দিয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা হয়েছেন খুলনার ছেলে সুশোভন বাছাড়। সবাইকে ছাড়িয়ে ৯০ দশমিক ৭৫ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন তিনি।

সুশোভনদের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে। থাকেন খুলনা নগরীর বড় বয়রা এলাকায়। তাঁর বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় খুলনার টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। মা বন্দনা সেন একসময় শিক্ষক ছিলেন। ১৪ বছর আগে একমাত্র সন্তানের দেখভালের জন্য চাকরি ছেড়ে দেন। সুভাস চন্দ্র ও বন্দনা সেন দম্পতির একমাত্র সন্তান সুশোভন।
সুশোভন বলেন, কখনও প্রাইভেট ব্যাচ বা বাইরের শিক্ষকদের কাছে পড়িনি। শিক্ষক বাবাই পড়াতেন, বাকিটা মা দেখিয়ে দিতেন। বাবা-মার চেষ্টাতেই স্কুলে-কলেজে প্রতিবছর ভালো ফল করেছেন। তিনি বলেন, আমি কখনও সময় ধরে বা রাত জেগে পড়াশোনা করিনি। পড়ার বাইরে খেলাধুলা করতাম। আমি বই পড়া খুব পছন্দ করি, প্রচুর বই পড়ি। 
ভবিষ্যতে এমন একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন রয়েছে সুশোভনের সেখানে গরিব-অসহায় মানুষেরা বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাবে। নিজের সাফল্যে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতার পাশপাশি কৃতিত্ব দেন বাবা-মা, বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনকে। 

ছেলেকে নিয়ে স্বপ্নটা এখন আরও বড় বাবা-মায়ের। চিকিৎসক হয়ে দেশের গবিব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে, এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। তার এমন সাফল্যে বাঁধভাঙা আনন্দের জোয়ার বইছে এলাকাতে। মিষ্টিমুখের পাশাপাশি ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়েছে তাঁকে।


সুশোভনের মা বলেন, শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে আনন্দে কেঁদে ফেলেছি। আমার সন্তান যেন মানুষের ডাক্তার হয়- সেই প্রার্থনা আমাদের। তিনি বলেন, জীবনে কখনও প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েনি সুশোভন। নিজে পড়া তৈরি করেছে, আমরা সহযোগিতা করেছি। 
বাবা সুভাস চন্দ্র বাছাড় বলেন, আমি তাকে বই কিনে দিতে কখনও কার্পণ্য করিনি। তার মা তাকে সব সময় অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ছোটবেলা থেকেই ছেলের স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবে, মানুষের সেবা করবে। বাবা-মা হিসেবে আমরা খুবই গর্বিত।

ভবিষ্যতে মেডিকেল ভর্তিচ্ছুদের উদ্দেশে সুশোভন বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার পর সময় নষ্ট করা যাবে না। কোথায় নিজের দুর্বলতা রয়েছে খুঁজে বের করে সেখানে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, মূল বই ফোকাস দিতে হবে। মূল বই শেষ করে কনসেপ্ট ক্লিয়ার করতে হবে। মূল বই শেষ করতে না পারলে যতই কোচিং বা সহায়ক বই পড়া হোক না কেন কোনো কাজে লাগবে না। 
২০২২ সালে যশোর বোর্ডের টিঅ্যান্ডটি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০২৪ সালে সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সুশোভন। দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ৫ পেয়েছেন তিনি। এর আগে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা হয়েছিলেন খুলনার মেয়ে সুমাইয়া মোসলেম মীম।
আগামী দিনের পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে সুশোভন বলেন, বুঝে পড়াশোনা করতে হবে। সবাই ভাবে মুখস্থ করতে হবে। কিন্তু না; যা পড়ছ সেই বিষয়টা পরিষ্কার বুঝতে হবে। মুখস্থ করলে পরদিন ভুলে যেতে পার। কিন্তু বুঝে পড়লে সেটা কাটিয়ে ওঠা যায়।  কিছু বিশেষ টপিক, অধ্যায়, ছক থেকে প্রতিবার প্রশ্ন এসে থাকে। সেসব  গুরুত্ব সহকারে পড়তে হবে। মনে রাখতে হবে, কেউ মেধাবী হয়ে জন্মায় না। সবার ভেতরেই মেধা সুপ্ত ও ঘুমন্ত থাকে। জীবনের লক্ষ্য স্থির করে নিজের সুপ্ত মেধাকে জাগানোর জন্য সাধনা করতে হবে। স্বপ্ন ছোঁয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। সময়ের কাজ সময়েই করতে হবে। আর পাঠ্যবইয়ের বাইরেও পৃথিবীকে জানতে হবে। তাহলেই সাফল্য মিলবে।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। তাই মূল বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। পরীক্ষার পূর্বমুহূর্তে মডেল টেস্টের মাধ্যমে নিজেকে যাচাই করে নিতে হবে। প্রতিটি বই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তে হবে। জীববিজ্ঞানে ভালো করার জন্য একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই ভালো করে পড়া উচিত। রসায়ন বিষয়ও যথেষ্ট আয়ত্তে রাখতে হবে। তাই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নব্যাংকসহ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের অধ্যায়ে দেওয়া প্রশ্নগুলো চর্চা করতে হবে । আগের বছরের প্রশ্নগুলোতে যা এসেছে, সেগুলো তো বারবার পড়বেই, অন্য বিষয়গুলোও পড়তে হবে। v
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যারা কোনোদিন মন থেকে মুছবে না
  • পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই
  • উদিতের একাধিক চুমুকাণ্ড, বাদ যাননি অলকা-শ্রেয়াও
  • অনেক তো বিরহ হলো, এবার একটু অ্যাকশন হয়ে যাক...