রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় নারী-শিশুসহ ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার
Published: 4th, February 2025 GMT
রাজধানীর ভাটারা, হাজারীবাগ, চকবাজার ও কামরাঙ্গীরচর থেকে পৃথক ঘটনায় শিশুসহ পাঁচ জনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো হলো— চকবাজার থেকে ওয়ার্কশপ শ্রমিক মো.
চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিল্লুর রহমান জানান, নিহতের পরিবার ও তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি নিহত রাকিব কয়েকদিন যাবত মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন। প্রায় সময়ই তিনি আনমনা হয়ে চলাফেরা করতেন। তার কী হয়েছে এ বিষয়ে পরিবারের কেউ জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দিতেন না। গতরাতে রাকিবকে নিজের ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে আমাদের খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে রাকিবের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠায়। তিনি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন বলে পরিবারের স্বজনরা জানিয়েছেন।
অপরদিকে চকবাজার থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. কাউছার জানান, আমরা খবর পেয়ে হোসনিদালান রোডের ছয়তলা ভবনের একটি কক্ষ থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সাজ্জাদ আলী নয়নের মরদেহ উদ্ধার করি। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠাই। প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারি তিনি সিনেমা ফটোগ্রাফির কাজ করতেন। তবে কী কারণে তিনি এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে এ বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
অন্যদিকে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম গৃহবধূ রুপা আক্তারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গৃহবধূ রুপা নিজের ঘরের থেকে দরজা লক করে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকে। পরে তার শাশুড়ি দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনাটি হতে পারে। মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
এদিকে কামরাঙ্গীরচর থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) ইমরান হোসেন জানান, কামরাঙ্গীরচরের খালপাড় অটোস্ট্যান্ড এলাকার একটি বাসার দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সারিকা হোসেন লাবিবার মরদেহ উদ্ধার করি। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠাই। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পারি, সে একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করতো। সেখানে তার লেখাপড়া ভালো লাগতো না। এ কারণে তার বাবা রাগারাগি করতেন। পরে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পারি।
অপর আরেক ঘটনায় ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান জানান, আমরা খবর পেয়ে ভাটারার নূরেরচালা এলাকার নাসির উদ্দিনের টিনশেডের বাসা থেকে রিকশা চালক ইউনুস আলীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করি। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি যে কোনো কারণে সে হতাশাগ্রস্ত ছিল। নিহতের স্ত্রীও এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারেননি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান এসআই আসাদুজ্জামান।
ঢাকা/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চকব জ র করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদের স্ত্রীর করা মামলা খারিজ
ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), দুই উপপরিদর্শকসহ (এসআই) ছয়জনের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেনের স্ত্রীর করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম গত রোববার এই আদেশ দেন। আজ মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হয়। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাঁটলিপিকার দীপেন দাশগুপ্ত।
সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন তামান্না বাদী হয়ে গত ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলার আবেদন করেন। এতে অভিযুক্ত করা হয় বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান, এসআই জগৎজ্যোতি দাস, মনিরুল ইসলাম, ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন, ‘সন্ত্রাসী’ জাবেদ ও পুলিশের সোর্স আনিকা ইসলামকে।
মামলার আবেদনে বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি শারমিন তামান্নার স্বামী সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারে পুলিশ বাসায় অভিযান চালায়। স্বামীকে না পেয়ে এসআই মনিরুল ইসলাম তাঁকে আটক করেন। এ সময় পুলিশ ও সোর্সরা তাঁকে শারীরিকভাবে হেনস্তা ও সন্ত্রাসী জাবেদ পুলিশের সামনে শারমিনকে মারধর করেন। থানার ওসি শারমিনকে লাঠি দিয়ে মারধর এবং এসআই জগৎজ্যোতি দাস বাদীর পেটে লাথি মারেন। বাদী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকায় রক্তক্ষরণে ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাদীকে আদালতে হাজির না করে ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় হাজির করেন। ৮ জানুয়ারি আদালত বাদীকে জামিন দেন। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানান গর্ভে থাকা ভ্রূণ নষ্ট হয়ে গেছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ত্রাসী’ স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স দেখে পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতে মিথ্যা মামলার আবেদন করেছেন সাজ্জাদের স্ত্রী।
সাজ্জাদ হোসেন