রাজধানীর ভাটারা, হাজারীবাগ, চকবাজার ও কামরাঙ্গীরচর থেকে পৃথক ঘটনায় শিশুসহ পাঁচ জনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত পাঁচজনের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ। 

উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো হলো— চকবাজার থেকে ওয়ার্কশপ শ্রমিক মো.

রাকিব (১৯) ও ফটোগ্রাফার সাজ্জাদ আলী নয়ন (২৪), কামরাঙ্গীরচর থেকে মাদরাসা শিক্ষার্থী সারিকা হোসেন নাবিলা (১৩), ভাটারা থেকে রিকশাচালক ইউনুস আলী (৩৩) এবং হাজারীবাগ থেকে গৃহবধূ রুপা আক্তার (২৬)।

চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিল্লুর রহমান জানান, নিহতের পরিবার ও তার আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি নিহত রাকিব কয়েকদিন যাবত মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন। প্রায় সময়ই তিনি আনমনা হয়ে চলাফেরা করতেন। তার কী হয়েছে এ বিষয়ে পরিবারের কেউ জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দিতেন না। গতরাতে রাকিবকে নিজের ঘরে ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে আমাদের খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে রাকিবের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে পাঠায়। তিনি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন বলে পরিবারের স্বজনরা জানিয়েছেন।

অপরদিকে চকবাজার থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. কাউছার জানান, আমরা খবর পেয়ে হোসনিদালান রোডের ছয়তলা ভবনের একটি কক্ষ থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সাজ্জাদ আলী নয়নের মরদেহ উদ্ধার করি। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠাই। প্রাথমিক তদন্তে  জানতে পারি তিনি সিনেমা ফটোগ্রাফির কাজ করতেন। তবে কী কারণে তিনি এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে এ বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

অন্যদিকে হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম গৃহবধূ রুপা আক্তারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গৃহবধূ রুপা নিজের ঘরের থেকে দরজা লক করে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলে থাকে। পরে তার শাশুড়ি দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনাটি হতে পারে। মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকের মর্গে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।

এদিকে কামরাঙ্গীরচর থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) ইমরান হোসেন জানান, কামরাঙ্গীরচরের খালপাড় অটোস্ট্যান্ড এলাকার একটি বাসার দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় সারিকা হোসেন লাবিবার মরদেহ উদ্ধার করি। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠাই। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পারি, সে একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করতো। সেখানে তার লেখাপড়া ভালো লাগতো না। এ কারণে তার বাবা রাগারাগি করতেন। পরে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানতে পারি।

অপর আরেক ঘটনায় ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান জানান, আমরা খবর পেয়ে ভাটারার নূরেরচালা এলাকার নাসির উদ্দিনের টিনশেডের বাসা থেকে রিকশা চালক ইউনুস আলীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করি। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। 

প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি যে কোনো কারণে সে হতাশাগ্রস্ত ছিল। নিহতের স্ত্রীও এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারেননি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান এসআই আসাদুজ্জামান।

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চকব জ র করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

১৪ বছর আগের ঘটনায় ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বর্তমান এএসপি মো. মিজানুর রহমান এবং একই থানার সাবেক এসআই মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪ বছর আগের একটি ঘটনায় করা মামলা জুডিশিয়াল (বিচার বিভাগীয়) তদন্তের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার বিকেলে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এ.কে.এম ছিফাতুল্লাহ্ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজহারুল ইসলাম। মামলার তদন্ত করবেন ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ইকবাল হোসাইন।

আদালত সূত্র জানায়, ১৭ এপ্রিল ঈশ্বরগঞ্জ থানার সাবেক ওসি মো. মিজানুর রহমান ও একই থানার সাবেক এসআই মো. মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মরিচারচর গ্রামের মৃত শাহেদ আলীর ছেলে। পরে বিচারকের নির্দেশে আবেদনটি আমলে নিয়ে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়।

জানা যায়, মো. মিজানুর রহমান পদোন্নতি পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হয়েছেন। তিনি বর্তমানে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত। আর মো. মাজহারুল ইসলাম পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ পরিদর্শক হয়েছেন।

নিহত শফিকুল ইসলামের ছেলে সুমন বলেন, আমার বাবাকে কয়েকজন মিলে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এর মধ্যে এক নম্বর আসামি ছিলেন নজরুল ইসলাম। তার নাম কেটে দিয়ে অন্যজনের নাম লেখা হয়। এরই মধ্যে চার্জশিট হয়ে গেছে। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নজরুল ইসলামের নাম সরিয়ে দিয়েছেন।

মামলার আইনজীবী শাহজাহান কবির সাজু সমকালকে বলেন, গিয়াস উদ্দিন যে মামলাটি করেছেন, তাতে এক নম্বর আসামির নাম কেটে দেন সাবেক ওসি ও এসআই। তারা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছেন।

মামলা ও বাদী সূত্রে জানা যায়, গিয়াস উদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী নজরুল ইসলামের পরিবারের বিরোধ ছিল। ২০১০ সালের ২৭ নভেম্বর দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শফিকুল ইসলামের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। দীর্ঘদিন ঢাকা ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। পরে ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি মারা যান শফিকুল। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই গিয়াস উদ্দিন থানায় মামলা করতে গেলে ওসি মো. মিজানুর রহমান মামলা নেননি।

অপরদিকে ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ করলে থানায় এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন বিচারক।

বাদীর পরিবারের অভিযোগ, ওসি মো. মিজানুর রহমান এজাহার হিসেবে নথিবদ্ধ না করে এসআই মো. মাজরুল ইসলামের মাধ্যমে বাদী গিয়াস উদ্দিনকে বলেন, মামলাটি থানায় এসেছে, বাদীর টিপসই লাগবে। পরে ভুল বুঝিয়ে তার টিপসই নেওয়া হয়। পরে আদালত থেকে বাদী মামলার কপি তুলে দেখেন, নালিশি মামলার ১ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামের নাম বাদ দিয়ে বাদীর ভাতিজা আবদুর রশিদের নাম লিখে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তিনগরে বাসের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু
  • এক লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ, ওসি ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে নালিশি
  • গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও এক নারীর মৃত্যু
  • গৌরনদী থানার ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
  • পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
  • শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
  • দুই দিনের রিমান্ডে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত
  • ১৪ বছর আগের ঘটনায় ওসি-এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা, জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ