শেখ হাসিনার সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে রাজপথে আছি : টিপু
Published: 4th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড . আবু ইউসুফ খান টিপু বলেছেন, গত ১৬টি বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা রাজপথে সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছি।
এরই ধারাবাহিকতায় জুলাই আগস্ট এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য প্রতিরোধে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মন্ডলপাড়া ব্রিজে এসে শেষ হয়।
অ্যাডভোকেট টিপু বলেন, গণহত্যা করে পালিয়ে গিয়েও থেমে থাকেননি খুনি শেখ হাসিনা। সে বিদেশে বসে বাংলাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির লক্ষ্যে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে এবং দেশের গণতন্ত্রকে আবারো ধ্বংস করে দিতে চাইছে।
তাই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে দেশ বিরোধী কর্মসূচি দিয়েছে। আমরা দেশের মানুষকে সাথে নিয়ে শেখ হাসিনার সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে আগের মতই রাজপথে আছি।
তিনি বলেন, খুনি হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, গডফাদার শামীম বাহিনী ওসমান বাহিনী, গডফাদার সেলিম ওসমান বাহিনী, গডফাদার আইভী বাহিনী কাউকে আমরা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেব না। এ লক্ষ্যে আমরা প্রতিদিন মিছিল সমাবেশ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে বিক্রম মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আপনারা নিজ নিজ এলাকায় সতর্ক থাকবেন। শেখ হাসিনার সন্ত্রাসী বাহিনী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ এদের কাউকে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে দেবেন না। তাদের তালিকা তৈরি করে আমাদের কাছে অথবা প্রশাসনের কাছে জমা দেবেন।
আমরা তাদেরকে আইনের হাতে তুলে দেবো কিন্তু নিজেরা আইন হাতে তুলে নেবো না। আমরা সাধারণ মানুষের পাশে থাকবো, সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়াবো। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় কেউ যাতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে সেই লক্ষ্যে আমরা নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও এর সকল অঙ্গ সংগঠন নেতাকর্মীরা রাজপথে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
বিক্ষোভ মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান মিঠু, গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি আক্তার হোসেন, আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহমান, সিনিয়র সহ সভাপতি জুলহাস সরদার, মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র সদস য র জপথ
এছাড়াও পড়ুন:
মাফিয়াতন্ত্র এখন বিএনপির দখলে : রফিউর রাব্বি
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেছেন, শেখ হাসিনা সাড়ে এগারো বছর ত্বকী হত্যার বিচারের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছিলেন। বর্তমান সরকার পূনরায় কাজ শুরু করলেও তাতে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয় নাই।
অন্যদিকে ঘাতক ওসমান পরিবারের সকলে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার দায় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা, বাহিনী এড়াতে পারে না। আমরা আগামী তিন মাসের মধ্যে ত্বকী হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমান সহ সকল ঘাতকদের অভিযোগপত্রের আওতায় এনে একটি নির্ভুল অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করার দাবি জানাচ্ছি।
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪৫ মাস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা দেশে বিচার-ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে রেখে গেছে। তার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এখনো হয় নাই। শেখ হাসিনার সহযোগিতায় ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। সে মাফিয়াতন্ত্র এখনো বহাল রয়েছে। এখন তা বিএনপির দখলে।
বিএনপির লোকজন শামীম ওসমানের বহু লোকদের নিরাপত্তা দিয়ে চলেছে। ওসমান পরিবারের ছত্রছায়ায় নীট কনসার্ন বিগত সরকারের সময়ে নারায়ণগঞ্জে লুটপাটের রাজত্বকায়েম করেছিল। এখন ওসমানদের ফেলে যাওয়া সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে ফকির গ্রুপ।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরিবতর্কনের পরেও দেশে সকল ধর্মের, সকল মত ও পথের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাধা অপসারিত হয় নাই।
দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম প্রশ্ন রেখে বলেন, ওসমার পরিবার পালিয়ে যায় কী ভাবে? শামীম ওসমানের নির্দেশে ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের কাছ ত্বকী সহ সকর হত্যার বিচার চাই।
সমাবেশে বক্তারা নারায়ণগঞ্জের আশিক, চঞ্চল, বুলু, মিঠু সহ ওসমান পরিবার দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যার বিচার দাবি করেন, সাংবাদিক সাগর-রুনী ও তনু হত্যার বিচার চান।
সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায়, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক শীবনাথ চক্রবর্তী, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুর সুজন, বাসদ জেলা সংগঠক সেলিম মাহমুদ, জাতীয় নাগরিক পার্টির জেলা সংগঠক শওকত আলী ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে।
অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু এর তিন মাস পর শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে ওসমান পরিবারের পাশে থাকার ঘোষণা দিলে বিচার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সে অভিযোগপত্র আজো পেশ করা হয় নাই।
ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।