সার নিয়ে অনিয়ম করলে ছাড় নয়: যশোরের ডিসি
Published: 4th, February 2025 GMT
যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আজাহারুল ইসলাম বলেছেন, “ নীতির সঙ্গে ব্যবসা করতে হবে। তাই সার বিতরণে কোনো প্রকার অনিয়ম বা অস্থিরতা তৈরি করা যাবে না। যারা এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।”
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) যশোরের অভয়নগর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সার আমদানিকারক, বিএফএর প্রতিনিধি, স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
আজাহারুল ইসলাম বলেন, “অভয়নগর থেকে ৭০ শতাংশ সার দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। গত বছরের ৫ আগস্টের আগের সব অনিয়ম-দুর্নীতির চিহ্ন মুছে ফেলে নতুন করে কাজ করতে হবে। আমাদের সবার চিন্তা চেতনার পরিবর্তন আনতে হবে। কৃষকের চাহিদা মোতাবেক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। সার ব্যবস্থাপনা ও ওজনের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের আরো সচেতন হতে হবে। তাহলেই আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গিকার বাস্তবায়ন হবে।”
উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়দেব চক্রবর্তী। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএফএর প্রতিনিধি আব্দুল আওয়াল, আমদানিকারক নোয়াপাড়া গ্রুপের প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম, নওয়াপাড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি এস এম মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান দপ্তরী, সার পরিবেশকদের পক্ষে কাজী ফারুক, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল ফারুক, অভয়নগর থানার ওসি মো.
ঢাকা/প্রিয়ব্রত/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভোটেই ড্যাবের নতুন কমিটি, আলোচনায় ১ ডজনের বেশি প্রার্থী
বিএনপিপন্থি পেশাজীবী সংগঠনগুলোর অন্যতম চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত ‘ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)’। চলতি মাসেই সম্মেলনের মাধ্যমে ড্যাবের নতুন কমিটি গঠন করতে চায় বিএনপি। সেই লক্ষ্যে ৩ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচনকে প্রাধান্য দিচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার জানান, তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ড্যাবের কাউন্সিল করবেন এবং সম্মেলনের মাধ্যমে একটি সুন্দর কমিটি উপহার দেবেন।
এবার ড্যাবের সম্মেলনে ১৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম আলোচনায়। যাদের অধিকাংশই কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। তারা নিয়মিত কথা বলার চেষ্টা করছেন এবং বিগত দিনের আন্দোলন-সংগ্রামে নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে অবহিত করছেন। অবশ্য এসব ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্যানেল ঘোষণা করা হতে পারে।
কয়েকজন কাউন্সিলর বলেন, যারা বিগত দিনে রাজপথে এবং কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন তাদেরকেই তারা মূল্যায়ন করবেন।
২০১৯ সালের ২৪ মে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ সভাপতি এবং ডা. মো. আব্দুস সালাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। হারুন-সালামের নেতৃত্বাধীন প্যানেল নিরঙ্কুশ বিজয়ী হয়। ২০২৪ সালের ২৫ মে এই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় গত ২৪ মার্চ পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে ড্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত করার কথা জানায় বিএনপি। পাশাপাশি সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য ১২ সদস্যের সম্মেলন প্রস্তুতি ও কাউন্সিল পরিচালনা কমিটিও গঠন করা হয়। কমিটিকে ৪৫ দিনের মধ্যে ড্যাবের সম্মেলন আয়োজনের কথা বলা হয়।
ড্যাবের সম্মেলন প্রস্তুতি ও কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক লুৎফর রহমান সদস্য সচিব এবং সদস্যরা হলেন- বিজন কান্তি সরকার, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. এরফান আহমেদ সোহেল ও ডা. মোস্তফা আজিজ সুমন।
এই কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকারকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম এবং অধ্যাপক মামুন আহমেদকে নিয়ে ৩ সদস্যের একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক লুৎফর রহমান জানান, তারা বুধবার রাতে ড্যাবের কেন্দ্রীয় অফিস পরিদর্শন শেষে বৈঠকে বসে সম্মেলনের বিষয়ে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ৯ মে’র মধ্যেই তারা ড্যাবের সম্মেলন সম্পন্ন করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ড্যাবের সম্মেলন সফল হলে পরবর্তী সময়ে অন্যান্য পেশাজীবী এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কমিটিও সম্মেলনের মাধ্যমে গঠন করা হবে।
এবার ড্যাবের নতুন কমিটির শীর্ষ পদের জন্য আলোচনায় আছেন সাবেক সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদ, সাবেক মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ রেজা কাকন ও ডা. নজরুল ইসলাম, ড্যাবের উপদেষ্টা ডা. রফিকুল কবির লাবু, সহ সভাপতি ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন ও ডা. সাইফুদ্দিন নিসার আহমেদ তুষান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসান, যুগ্ম মহাসচিব ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা. শেখ ফরহাদ, ডা. শাকুর খান প্রমুখ। তবে এসব ব্যক্তির সমন্বয়েই প্যানেল গঠনের সম্ভাবনাও রয়েছে।
বর্তমানে ড্যাবের প্রায় ৩ হাজারের মতো সদস্য (ভোটার) রয়েছেন। যাদের সবাই ৫ আগস্টের পূর্বের সদস্য। নতুনভাবে কাউকে ভোটার না বানিয়ে আগের সদস্যদের নিয়েই কাউন্সিল করার দাবি ড্যাব নেতাদের। তা না হলে রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় থাকা ত্যাগী ও নির্যাতিতদের মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে না।
এ বিষয়ে ড্যাবের সদ্য সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি করলে গণতান্ত্রিক চর্চা বিকশিত ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। কেননা কাউন্সিলে প্রকৃত নেতাদের মূল্যায়নের সুযোগ থাকে। জয়ী এবং পরাজিত প্যানেলের লোকজন মিল-মিশে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়। এই চর্চা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে সর্বত্র অব্যাহত রাখলে দলের লাভ হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির দুঃসময়ে আমরা চিকিৎসকদের সরাসরি ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে ড্যাবের দায়িত্ব গ্রহণ করি। যে সময় মহামারি করোনায় বিশ্ব বিপর্যস্ত ছিল। সে সময় দায়িত্ব নিয়েই ড্যাব নেতারা বিগত আন্দোলন সংগ্রামে প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি করোনাভাইরাস এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় মাঠে নিরলসভাবে সক্রিয় ছিলাম। প্রান্তিক মানুষের মাঝে ড্যাবের উদ্যোগে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প, ত্রাণ ও ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। ড্যাবের নেতাকর্মীরা সেসবের মূল্যায়ন করবেন ইনশাআল্লাহ।
ড্যাবের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রধান পাঁচটি পদে ব্যক্তি কেন্দ্রিক নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। তিনি সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ড্যাবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানকে বলেছেন, কোনো প্যানেলভিত্তিক নির্বাচন না করে প্রধান পাঁচটি পদে ব্যক্তিকেন্দ্রিক মনোনয়ন হলে ড্যাবের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কমানো সম্ভব। কারণ নির্বাচনে বিজয়ী প্যানেল ও পরাজিত প্যানেলের প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে শত্রুভাবাপন্ন বিভাজন তৈরি হয় এবং তা পররর্তী সময়ে কর্মসূচিগুলোয় ব্যাপক প্রভাব ফেলে। যা সংগঠনের জন্য খুবই বিপজ্জনক ও ক্ষতিকর। বিষয়টা বিবেচনা করার জন্য বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি।
জানা যায়, ১৯৮৯ সালে অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক এবং অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারকে সদস্য সচিব করে ড্যাবের প্রথম কমিটি গঠন করা হয়। এরপর প্রথম ১০ বছরের মধ্যে চারটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। পর্যায়ক্রমে ড্যাবের দায়িত্বে আসেন বেশ কয়েকজন নেতা। সর্বশেষ এমএ আজিজ ও এজেডএম জাহিদের নেতৃত্বে চলছিল ড্যাব। দেড় যুগ পর ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আজিজ-জাহিদ কমিটি বিলুপ্ত করে ডা. ডোনারকে আহ্বায়ক করে ১৬১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে ২০১৯ সালের ২৪ মে কেন্দ্রীয় সম্মেলন সম্পন্ন করে নবনির্বাচিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে।