এক সমন্বয়কসহ তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের এক শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের হুমকি দিয়ে হল ছাড়তে বাধ্য করেন অভিযুক্তরা। বর্তমানে একই হলের অন্য কক্ষে সহপাঠীর কাছে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ভুক্তভোগীর কক্ষে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রক্টরিয়াল বডির কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী মো.

রাহিম। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

অভিযুক্তরা হলেন– সমন্বয়ক এমরান হোসেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু।

অভিযোগপত্রে রাহিম উল্লেখ করেন, তিন মাস ধরে তিনি একদল শিক্ষার্থীর মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সর্বশেষ ১ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার পর একদল শিক্ষার্থী স্লোগান দিতে দিতে তাঁর কক্ষের সামনে এসে দরজায় কড়া নাড়ে। দরজা খোলার পর তারা কক্ষে ঢুকে বলেন ‘১০ মিনিটের মধ্যে রুম খালি কর, নইলে রুম তালা দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছু না, আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেটাই চূড়ান্ত’। এক পর্যায়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘রুম না ছাড়লে ছাত্রলীগের মতো কইরা পিটামু, তোকে মারা ওয়ান-টু ব্যাপার।’

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এর আগে ৩১ জানুয়ারি রাত ১২টা ৫০ মিনিটে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিব রাহিমকে ডাইনিং সংলগ্ন সিঁড়ির সামনে ডেকে নিয়ে হেনস্তা করেন। সে সময় তারা বলেন, ‘১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রুম না ছাড়লে সব জিনিসপত্র ফেলে দেব। পারলে তোর কোনো বাপ আছে নিয়ে আসিস!’

রাহিম জানান, তিনি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে টিউশন হারিয়েছেন, ফলে তাঁর থাকার বিকল্প কোনো জায়গা নেই। কিন্তু বারবার হুমকি ও মানসিক নির্যাতনের কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত হাসিব বলেন, ‘হিট অব মোমেন্টে এই কথা বলেছি। ৫ আগস্টের পর যারা হলে উঠবে, তারা সবাই রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য হলে উঠবে। তাই হল থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আন্দোলনের পরে ওঠা শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দেওয়া হবে।’

একজন শিক্ষার্থী হয়ে আরেকজন শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের মতো করে মারার হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হাসিব বলেন, ‘আপনি আপনার সুবিধার্থে এই নিউজ করতেছেন।’ এরপরই ফোন কল কেটে দেন।

অভিযুক্ত এমরান হোসেন জানান, হল থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, ৫ আগস্টের পর হলে উঠেছে এ রকম শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হবে। তাই এমন কথা বলেছেন তারা। ছাত্রলীগের মতো করে মারার হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এ কথা বলা হয়েছে। তবে সঙ্গে সঙ্গে আমি তাঁকে বলেছি এ ধরনের কথা না বলার জন্য।’

এ বিষয়ে নজরুল হলের প্রাধ্যক্ষ মো. হারুনের ভাষ্য, শিক্ষার্থীদের এ রকম আচরণ কাম্য নয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। তাঁর কাছে কোনো লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগ আসেনি।

সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান রাহাত বলেন, ‘একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি বসে ব্যবস্থা নেব। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেব।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমন বয়ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে একদল আরেকদলকে আক্রমণ করছি’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় সারা দেশ যখন ক্ষোভে উত্তাল, তখন ঘটনাটি ঘিরে মন্তব্য করলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফারুকী এ প্রসঙ্গে আজ একটি পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “জুলাইতে ওরা শত শত স্বাধীনতাকামী মানুষকে খুন করেছে। তারপর ভারতে পালিয়ে গিয়েও খুনের হুমকি দিচ্ছে, খুন করছে। ওদের ‘খুনের জুলাই’ চলমান। আর আমরা কি করছি? নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে একদল আরেকদলকে আক্রমণ করছি, রেটোরিকের লড়াই চালাচ্ছি। মনে রাখবেন, আমাদের অনৈক্যই খুনীদের শক্তি।’’

“এখনই সময় আবার ঘন হয়ে আসার, গোল হয়ে আসার। ফ‍্যাসিবাদীরা বিচারের মুখোমুখি হওয়া তো দূরের কথা কোনো অনুশোচনা বোধ করে নাই। বরং খুনের রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেয়ার-ফ‍্যাসিবাদীদের আর এক চুলও ছাড় নয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে বিনয়ের সাথে একটু খেয়াল করিয়ে দিতে চাই-আপনারা যদি কেবল ইলেকশনকেই পুলসিরাত মনে করেন মহা ভুল করবেন। বাংলাদেশের পুলসিরাত আগামী দশ বছরের লম্বা পথ। বি ওয়াইজ। অ‍্যাক্ট রেসপন্সিবলি। অ‍্যান্ড প্রটেক্ট দ‍্য ভেরি স্পিরিট অব জুলাই। লং লিভ বাংলাদেশ।” লিখেছেন ফারুকী।

তিনি আরো লিখেছেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী শক্তির প্রতি একটাই বার্তা- জুলাই আমাদের বদলে দিয়েছে চিরতরে। বাংলাদেশ আর কারো দাসত্ব করবে না। হাদী একজন না। হাদীরা হাজারে হাজার, কাতারে কাতার।’’
 

ঢাকা/রাহাত//

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘নির্বাচন যতো ঘনিয়ে আসছে একদল আরেকদলকে আক্রমণ করছি’