নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, গত ১৫ বছর পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের ইশারায় স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার বাংলাদেশের মানুষের উপর যে অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়েছে তা বর্ণনা করার ভাষা আমাদের জানা নেই।

তখন যারা বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিলো তাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন ঘটে এবং জনগণের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। সেই জনগণের রাজত্বে স্বৈরাচারের কোনো স্থান নেই। সেই জনগণের রাজত্বে সাম্রাজ্যবাদী দোসরদের কোনো স্থান নেই।

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নৈরাজ্য প্রতিরোধে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে শহরের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মন্ডলপাড়া ব্রিজে এসে শেষ হয়।

এডভোকেট সাখাওয়াত বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে অনেক স্বৈরশাসকের পতন হয়েছে কিন্তু আওয়ামী লীগের মতো এমন বিপর্যয় আর দুর্যোগ কোথাও দেখা যায় নাই। আওয়ামী লীগ এমন একটা স্বৈরাচারী দল যে দলের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সকলকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।

শেখ হাসিনার মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের পালিয়ে যেতে হয়েছে, তাদের ৩০০ বিনা ভোটের এমপি, রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সকল শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ পালিয়ে গেছে। মানুষ কখন পালিয়ে যায়, যখন তারা অপরাধে লিপ্ত হয়। এই অপরাধীদের স্থান বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।

তিনি বলেন, খুনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী এমপিদের হাতে এখনো ছাত্র জনতা হত্যার রক্ত লেগে আছে। এই গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগকে আর রাজনীতি করতে দেয়া হবে না। 

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের যেসব নিরিহ নেতাকর্মী এখনো দেশে রয়ে গেছেন তাদেরকে সাবধান করে দিয়ে বলতে চাই, পালিয়ে যাওয়ার নেতাদের উস্কানিতে কোনো প্রকার নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না। তাহলে কিন্তু পিঠের চামড়া থাকবে না।

আপনার নেতা কিন্তু আপনাকে বাঁচাতে আসবে না। সুতরাং নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। আওয়ামী লীগের সকল নৈরাজ্য প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সব সময় মাঠে থাকবে।

বিক্ষোভ মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান মিঠু, গোগনগর ইউনিয়ন বিএনপি'র সভাপতি আক্তার হোসেন, আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহমান, সিনিয়র সহ সভাপতি জুলহাস সরদার, মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব ফারুক হোসেনসহ নেতৃবৃন্দ।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ ব এনপ র আওয় ম সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ন্যূনতম সংস্কারের জন্য ধৈর্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত 

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমরা চাই নির্বাচনের জন্য একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হোক। পাশাপাশি নূন্যতম যে সংস্কারগুলো না হলে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত।”

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফেনীর পরশুরামের বল্লামুখা বাঁধ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। 

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “নির্বাচনের ব্যাপারে চিন্তার ভিন্নতা থাকতেই পারে। আমরা মনে করি, এমন একটি নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন যে নির্বাচনে স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে প্রত্যেক ভোটার তার ভোট দিতে পারবেন। পাশাপাশি প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ভোটও নিশ্চিত করতে হবে। সেটি দেশে এবং প্রবাসে। 

আরো পড়ুন:

ধোঁকাবাজ রাজনীতিকদের দিয়ে দেশের পরিবর্তন সম্ভব নয়: শফিকুর রহমান 

নির্বাচনের আগেই বিচার করতে হবে: সাদ্দাম

সরকার পতনের আন্দোলনে প্রবাসীদের বড় অবদান রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই আন্দোলনে ও দেশ গড়ায় প্রবাসী ভাইদের অবদান অস্বীকার করতে পারব না। তাদের বিশাল অবদান রয়েছে। এজন্য আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন বা পঙ্গু হয়েছেন তাদের ন্যায় আমরা প্রবাসীদের কাছেও ঋণী। সবমিলিয়ে পুরো জাতির কাছেই আমরা ঋণী।” 

বিভিন্ন দাবিতে অভ্যুত্থানে আহতদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, “যাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার জন্য আজকে আমরা এমন একটি পরিবেশ পেয়েছি, তাদের প্রতি সম্মান রেখে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে। তার মধ্যে শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানো, আহতদের সুচিকিৎসার জন্য সরকার ও জনগণ মিলে সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে।” 

ফেনীর বন্যায় দলের কর্মতৎপরতা উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা তখনও এসেছিলাম। একটি দল হিসেবে আমাদেরও সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারপরও যতটুকু পেরেছি আমরা করেছি। এখনো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।”

তিনি বলেন, “শুধু এই বেড়িবাঁধ নয়, এখানে পুরো নদীজুড়ো যে ব্লকগুলো দেওয়া হয়েছিল সেগুলো পড়ে গেছে। সেখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। যদি দুর্নীতি না হতো, বছর বছর যে বাজেট হয়েছে তা কাজে লাগতো তাহলে মানুষের দুঃখ দূর হয়ে যেতো। অতীতে যারা এ অপকর্ম করেছে তারাও ফল ভোগ করবে।”

জামায়াতের আমির বলেন, “ভবিষ্যতে আমরা এমন সরকার চাই, যাদের গ্রাম থেকে শুরু করে পার্লামেন্টে দায়বদ্ধতা থাকবে। তাদের হাতগুলো দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকবে এবং জনগণের আমানতের খেয়ানত হবে না। তাহলেই উন্নয়নের জন্য দেশের যে সম্পদ ব্যয় হবে, তা কাজে লাগবে। দেশের চেহারাও বদলে যাবে। দেশ মাথা উঁচু করে করে দাঁড়াবে।” 

এর আগে ফুলগাজীর আনন্দপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শ্রাবণের কবর জিয়ারত করেন জামায়াতের আমির। পরে ফেনী পৌরসভার সুলতানপুর এলাকার এক হিন্দু পরিবারকে বসতঘর উপহার দেন তিনি। 

এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম, কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও সাবেক ফেনী জেলা আমির অধ্যাপক লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, জেলা জামায়াতের আমির মুফতি আবদুল হান্নানসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/সাহাব/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রমজানে কম লাভ করে জনগণের পাশে দাঁড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
  • পোশাক বদলালেই কি পুলিশ বদলাবে?
  • নির্বাচন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সুযোগ নেই: অনিন্দ্য ইসলাম
  • পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে কানাডার সহায়তা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
  • বইমেলায় আফরোজা খাতুনের ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’
  • বিশৃঙ্খলা ঘটানোর চেষ্টা করলেও সফল হবে না আ.লীগ: আসিফ মাহমুদ
  • ন্যূনতম সংস্কারের জন্য ধৈর্য ধরে সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত 
  • সংস্কারের আলাপ যত, সংকট তত: তারেক রহমান
  • নারায়ণগঞ্জে নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে সেমিনার