আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, ‘‘ওই দিন থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ শুরু করবে। একই সঙ্গে কমিশন ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে পারে।’’

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংকালে এসব তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা ড.

আসিফ নজরুল। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম, উপ প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘আজ ছয়টি কমিশনের প্রধানরা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ছয়টি কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট কমিশনগুলোর প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।’’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘৮ ফেব্রুয়ারি একইসঙ্গে সংস্কার কমিশনের প্রধানরা সংস্কার কমিশনে আশু করণীয় কী, মধ্যম মেয়াদি কী আছে এবং দীর্ঘ মেয়াদি কী আছে সেগুলো পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী করণীয় কী আছে সেগুলো পর্যালোচনা, কমিশনগুলো রিপোর্ট, সব রাজনৈতিক দল, জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলো যারা আছেন তাদের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’

পরবর্তীতে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জাতীয় ঐক্য কমিশনের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশা করছি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন কমিশনের প্রধান এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

সংবিধান বাতিল নাকি পুনরায় লেখা হবে জানতে চাইলে আসিফ নজরুল বলেন, ‘‘সংবিধান বাতিল সংশোধনী ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ছয়টি কমিশনের প্রধানদের কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যাত্রা শুরু হবে। এরপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে যারা বসবেন তারা কমিশনের প্রধান নয় জাতীয় কমিশনের সদস্য হিসেবে বসবেন। সংবিধানের ব্যাপারে কোন পদ্ধতিতে ঐকমত্য পৌঁছানো হবে, সেই বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত হবে।’’

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন উপদ ষ ট র জন ত ক

এছাড়াও পড়ুন:

১৬৬ সুপারিশসহ ৩৪ রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্য কমিশনের চিঠি

ছয়টি সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনসহ ৩৪টি রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। চিঠিতে দলগুলোকে আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে তাদের মতামত জানাতে বলা হয়েছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে সংস্কার বিষয়ে আলোচনা শুরু হবে। এরপর একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা হবে।

আজ সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ। 

তিনি বলেন, যখন যে দলের মতামত পাওয়া যাবে, সে সময় থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে। আশা করছি, ১৩ মার্চের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের মতামত জানাবে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন থাকলে তারা কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। কমিশন এ বিষয়ে সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।

সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সুপারিশগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার সংক্রান্ত ২৭টি, বিচার বিভাগ সংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত ২৬টি ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ ৩৪টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশ সংস্কার কমিশন মনে করে, তাদের সুপারিশগুলো প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

ড. আলী রীয়াজ বলেন, প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে। প্রথমটি হলো সংশ্লিষ্ট সুপারিশের বিষয়ে একমত কি না। এতে তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো- ‘একমত’, ‘একমত নই’ এবং ‘আংশিকভাবে একমত’। এ তিনটি বিকল্পের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায়ের বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে ছয়টি বিকল্প আছে। সেগুলো হলো ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে’, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ এবং ‘গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে’। এসব ঘরের যেকোনো একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি সুপারিশের পাশে দলগুলোর ‘মন্তব্য’ দেয়ার একটি জায়গাও রাখা হয়েছে।

এ সময় রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ব্যাপারে নাগরিকদের মতামত জানার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান ড. আলী রীয়াজ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সংস্কার’ নির্বাচনের আগে নাকি পরে, ১৩ মার্চের মধ্যে মতামত চায় কমিশন
  • স্বল্প সময়ের মধ্যে ‘জাতীয় সনদ’ তৈরি করতে চায় ঐকমত্য কমিশন
  • ১৬৬ সুপারিশসহ ৩৪ রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্য কমিশনের চিঠি
  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে: এবি পার্টি
  • নির্বাচনের আগে ‘জুলাই সনদ’ কার্যকর দেখতে চায় এনসিপি