‘ঘুষের লেনদেন’ নিয়ে বিরোধ, ববিতে কর্মকর্তাকে জুতাপেটা কর্মচারীর
Published: 4th, February 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) অর্থ ও হিসাব শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামকে জুতাপেটা করেছে প্রকৌশল শাখার দৈনিক মজুরিতে চাকরি করা কর্মচারী মতিউর রহমান। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহিদুল তার দপ্তরে বসা অবস্থায় মতিউর হঠাৎ ঢুকে জুতাপেটা করে সটকে যান। কয়েকজনকে চাকরি দেওয়ার জন্য ঘুষ বাবদ নেওয়া ৩২ লাখ টাকা ফেরত না দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে মতিউর স্বীকার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অর্থদপ্তরে নিজ কক্ষে বসে ছিলেন শহিদুল ইসলাম। এসময় মতিউর ডেস্কে গিয়ে শহিদুলকে জুতাপেটা করে দ্রুত পালিয়ে যান। বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
মতিয়ার বলেন, ‘২০১৬ সালে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার জন্য কয়েকজনের কাছ থেকে ৩২ লাখ ৬০ হাজার টাকা এনে শহিদুলকে দেন। চাকরি দিতে পারেননি তিনি। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে ঘুরাচ্ছেন। তাকে একটি ফাঁকা চেক দিয়েছেন। সম্প্রতি শহিদুল তার বিরুদ্ধে বন্দর থানায় জিডি করেছেন। এ কারণে তিনি শহিদুলকে জুতাপেটা করেছেন।’
তবে কর্মকর্তা শহিদুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘অফিস চলাকালীন সহকর্মীদের সামনে মতিউর জুতাপেটা করে পালিয়ে যায়। তিনি এ ঘটনায় হতাশ ও বিস্মিত। বিচার চেয়ে তিনি ভিসি, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।’ ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
অর্থ ও হিসাব দপ্তরের উপপরিচালক আতিকুর রহমান বলেন, অফিস চলাকালে ডেস্ক এসে কাউকে লাঞ্ছিত করা কাম্য নয়। তারা রেজিস্ট্রারের কাছে বিচার চেয়েছেন।
কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নেতৃত্ব দেওয়া সেকশন অফিসার নাদিম মল্লিক বলেন, তাদের সহকর্মী শহিদুলকে জুতাপেটার ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করে বিচার চেয়েছেন। লেনদেন থাকলে তা ক্যাম্পাসের বাইরের বিষয়। কিন্তু একজন দৈনিক মজুরির কর্মচারী কর্মকর্তাকে জুতাপেটা করতে পারে না। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা, কর্মচারী ক্ষুব্ধ।
অপরদিকে কর্মকর্তাদের নেতৃত্ব দেওয়া পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের উপপরিচালক আবু হাসান বলেন, কর্মকর্তাকে জুতাপোটার ঘটনা নিন্দনীয়। চাকরি দেওয়ার নামে লেনদেন করলে তাও দুর্নীতির পর্যায়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত হবে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনা একটা ঘটেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গানে-ছন্দে বর্ষবরণে মেতেছিলেন প্রথম আলোর কর্মীরা
‘আলোকের এই ঝর্নাধারায় ধুইয়ে দাও/ আপনাকে এই লুকিয়ে-রাখা ধুলার ঢাকা ধুইয়ে দাও’, ‘গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু মুসলমান/ মিলিয়া বাউলা গান আর মুর্শিদি গাইতাম’—এমন সব গানে বাংলা নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রথম আলোর কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার আনন্দমুখর পরিবেশে প্রথম আলোর কর্মীদের নিয়ে উদ্যাপিত হলো বাংলা নববর্ষ ১৪৩২।
মানবসম্পদ বিভাগের উদ্যোগে বৈশাখের দ্বিতীয় দিন বিকেলে কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠানটি। এতে প্রথম আলোর বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা কাজের ফাঁকে গান-আবৃত্তি, রম্য কথনে মেতেছিলেন। বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে আসা প্রথম আলোর কর্মীদের মধ্য থেকে সেরা সাজের জন্য চারজনকে পুরস্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানস্থল প্রগতি ভবনের সাততলা সাজানো হয়েছিল নববর্ষের মোটিফ আর লোকজ নকশার রঙিন কাগজে। প্রথম আলো ট্রাস্টের মাহবুবা সুলতানার কণ্ঠে ‘আলোকের এই ঝর্নাধারা’ গান দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। ভিডিও বিভাগের খন্দকার শামসউজজোহা নিজের লেখা কবিতা আবৃত্তি করেন। উন্মুক্ত পর্বে গান ও রম্য কথনে অংশ নেন তিন সহকর্মী।
সম্পাদনা সহকারী বিভাগের রাশিদুজ্জামান দুটি গান পরিবেশন করেন। পুরুষেরা পাঞ্জাবি-ফতুয়া, নারীরা শাড়ি, মাথায় ফুলের মালা, হাতে রঙিন চুড়িতে সেজেছিলেন। সেরা সাজের জন্য ‘সুবেশী’ হিসেবে পুরস্কার জেতেন দুজন নারী ও দুজন পুরুষ সহকর্মী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে প্রথম আলোর কর্মীদের বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান অভিনেতা আফজাল হোসেন, অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন, চলচ্চিত্র পরিচালক এন রাশেদ চৌধুরী, চিত্রগ্রাহক কামরুল হাসান খসরু।
অনুষ্ঠানে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক ও সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন কর্মীদের সঙ্গে নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন তপতী বর্মণ।
খৈ, মুড়ি, বাতাসা, চিড়া-মুড়ির মোয়া, মুড়ালি, চানাচুর মাখা, কাঁচা আমের শরবতের মতো ঐতিহ্যবাহী খাবার আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ অনুষ্ঠান।