নাটোরে মহাসড়কে বিক্ষোভ, বিএনপি নেতার কুশপুতুল দাহ
Published: 4th, February 2025 GMT
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে নবগঠিত নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কাশেমের পদ বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা আবুল কাশেমের কুশপুতুল দাহ করেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নাটোর সদর উপজেলার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের দত্তপাড়া এলাকায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রচার সম্পাদক জুয়েল রানা বলেন, “নতুন যে জেলা বিএনপির কমিটি হয়েছে, সেখানে আবুল কশেম নামে একজনকে সদস্য করা হয়েছে। তিনি যে বিএনপি করেন এটাই আমরা জানি না। তাকে গত ১৭ বছরে দলীয় কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে দেখা যায়নি। তাকে কমিটিতে রাখায় হতাশ হয়েছেন ত্যাগী নেতাকর্মীরা। তাই আমরা বলতে চাই, ১ সেকেন্ডের জন্যও কাসেমকে দত্তপাড়ার মাটিতে দাঁড়াতে দেব না। আমাদের নেতা তারেক রহমানের কাছে আবেদন জানাই, দ্রুত নাটোর জেলা কমিটি সংশোধন করে কমিটিতে ত্যাগীদের স্থান দেওয়া হোক।”
আরো পড়ুন:
স্টল বরাদ্দের দাবিতে বরিশালে ফল ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
নাটোরে বিএনপির ৩ নেতাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ
সদর থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোন্তাজ আলী প্রামাণিক বলেন, “আওয়ামী লীগের সর্বশেষ নির্বাচনে শিমুলের নির্বাচন করেছেন কাশেম। আওয়ামী লীগকে অর্থ যোগানদাতা ছিলেন তিনি। অথচ তাকে করা হয়েছে জেলা বিএনপির সদস্য। ১৭ বছর কোথাও তাকে দেখিনি। তিনি কীভাবে পদ পেলেন। আমরা তাকে নাটোরের মাটিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলাম।”
এ সময় জেলা শ্রমিকদলের সহ-সভাপতি হানিফ মোল্লা, বড় হরিশপুডর ইউনিয়ন শ্রমিকদের সভাপতি গোলাপ মোল্লা, দত্তপাড়া শাখা অফিসের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির সদস্য আবুল কাশেম বলেন, “২০১৩ সালে দিনাজপুরে দুলু (রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু) সাহেবের নির্দেশে আমার ওপর হামলা হয়েছিল। পরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে আমাকে সিঙ্গাপুর যেতে হয়েছিল। বিষয়টি তারেক রহমানসহ সবাই জানতেন। পরে ম্যাডাম খালেদা জিয়া আমাকে বলেছেন, এখন থেকে তোমার আর নাটোরে যাওয়ার দরকার নেই। তুমি ঢাকায় রাজনীতি করো। আমার বর্তমান পোস্ট হচ্ছে, আমি ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনের উপদেষ্টা। সেই সঙ্গে ২০১৩ সাল থেকে পুরো গাজীপুরের দায়িত্বে রয়েছি আমি।”
ঢাকা/আরিফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রলোভন দূরে সরিয়ে ক্রিকেট সাধনা কর’
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) আজীবন সম্মাননা পেলেন শচীন টেন্ডুলকার। গত শনিবার মুম্বাইয়ে বিসিসিআইর বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সিকে নাইডু পদক তুলে দেওয়া হয় কিংবদন্তি এ ব্যাটারের হাতে। এই সম্মাননা নিতে গিয়ে খেলোয়াড়ি জীবনের কথা মনে পড়েছে শচীন টেন্ডুলকারের। মনে পড়েছে অবসর জীবনের কথা। সেদিনগুলোর আলোকে তরুণদের পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। সব প্রলোভন দূরে সরিয়ে একমনে ক্রিকেট সাধনা করার পরামর্শ দিয়েছেন টেন্ডুলকার।
১৯৮৯ সালে অভিষেক হওয়া শচীন অবসর নেন ২০১৩ সালে। দুই যুগের ক্যারিয়ারে খেলেছেন ২০০ টেস্ট ও ৪৬৩টি ওয়ানডে; যা দুই ফরম্যাটেই সর্বোচ্চ। এই দুই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি রান এবং একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ১০০ সেঞ্চুরি আছে তাঁর। সেই শচীন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে মূল্যবোধের গুরুত্ব কতটা।
নিজের উদাহরণ দিয়ে তরুণদের পরামর্শও দিয়েছেন লোভ-লালসা দূরে সরিয়ে ক্রিকেট সাধনার, ‘নব্বইয়ের দশকে দুই বছর আমার ব্যাটের কোনো স্পন্সর ছিল না। তার পরও মদ কিংবা তামাকের বিজ্ঞাপন করিনি। কারণ, আমার জীবনে মূল্যবোধের বড় ভূমিকা রয়েছে। পারিবারিক শিক্ষা সব সময় আমাকে সামনে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।’ উঠতি ক্রিকেটারদের মূল্যবোধ মাথায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে অভিষেকের পর থেকে ক্রিকেটই নাকি পথ দেখাচ্ছে। আর যেই ব্যাট দিয়ে তিনি বিশ্বের তাবড় তাবড় বোলারকে শাসন করেছেন, সেই ব্যাটকে এখনও ভীষণ যত্নে রাখেন তিনি। এখনও সেই ব্যাটকে প্রণাম করেন। অবশ্য জীবনে কোনো কিছুকেই হালকাভাবে নেননি তিনি। গুরুত্ব দিয়েছেন সবকিছুতে।
তবে সবকিছুর আগে রেখেছেন ক্রিকেটকে, ‘ক্রিকেট না থাকলে এই ঘরে আমরা বসে থাকতাম না। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় উপহার। আমাদের কাছে ব্যাট-বল আছে। শক্ত করে তাদের ধরে রাখতে হবে। মুঠো আলগা করলে চলবে না। যদি মুঠো আগলা হয়ে যায়, তাহলে ক্যারিয়ারও ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাবে।’
সে কারণে মনোসংযোগ ধরে রাখার কথা বলেছেন শচীন। কোনো প্রলোভনে পা না বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন, ‘আমি শুধু বলব, মনোসংযোগ ধরে রেখে এক লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে। ক্যারিয়ারে অনেক প্রলোভন আসবে। তাতে পা দিলে হবে না। সবার আগে দেশ। দেশের জন্য সবটুকু দিয়ে খেলতে হবে। আর অবসরের পর বোঝা যায় খেলার মাঠ কত আনন্দের ছিল।’
২০১৩ সালে ছেলেবেলার স্মৃতিবিজড়িত মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে উইন্ডিজের বিপক্ষে বিদায়ী টেস্ট শেষে একটা ভাষণ দিয়েছিলেন শচীন। সেদিনের কথা নাকি এখনও মনে পড়ে তাঁর, ‘ওই মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। কী করব বুঝতে পারছিলাম না। ধোনি বলল, ওরা আমার জন্য কিছু ব্যবস্থা করেছে। তার পর দেখলাম, মাঠে আমাকে ঘিরে উল্লাস হলো, আমাকে গার্ড অব অনার দিল। বুঝতে পারছিলাম, এটাই শেষবার। এর পর আর দেশের হয়ে নামা হবে না। এই অনুভূতি বলে বোঝানো যায় না।’