লিফলেট বিতরণ: আলোচিত শিক্ষক মুকিব মিয়া গ্রেপ্তার
Published: 4th, February 2025 GMT
আওয়ামী লীগের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ চেয়ে ঢাকায় লিফলেট বিতরণ করায় লালমনিরহাটের আলোচিত কলেজ শিক্ষক মুকিব মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
সোমবার রাতে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইলিয়াসুর রহমানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) রেজাউল করিম মল্লিক।
তিনি বলেন, শিক্ষক মুকিব মিয়াকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা হস্তান্তর করা হয়েছে। ওই থানায় তার নামে একটি মামলা রয়েছে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত মুকিব মিয়া বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মুকিব ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুল কমিটির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
গত শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবিতে তার লিফলেট বিতরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা শুরু হয়। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর থেকে দলের প্রধান শেখ হাসিনাসহ অনেক শীর্ষ নেতাই দেশের বাইরে। তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধেরও মামলা হয়েছে।
ঢাকার শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে শিক্ষক মুকিবকে থানায় হস্তান্তর করেছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হয়। পরে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। মুকিবকে রিমান্ডে আনা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল: বেনাপোল বন্দর থেকে ফেরত গেছে ৪ ট্রাক
বাংলাদেশকে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট সুবিধা প্রত্যাহার করেছে ভারত। এই ট্রানজিটের মাধ্যমে ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য পাঠাতে পারত বাংলাদেশি রপ্তানিকারকরা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) জারি করা নির্দেশনা কাস্টমস এর মাধ্যমে কার্যকর হওয়ায় ভুটান, নেপাল এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্রুত ও স্বল্প খরচে বাণিজ্য করার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এ ঘটনায় বেনাপোল বন্দর থেকে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ৪টি রপ্তানি পণ্য বোঝাই ট্রাক ফেরত গেছে ঢাকায়।
ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়াডিং এজেন্টস ষ্টাফ ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তি বলেন, “স্থলবন্দর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধা বন্ধের জন্য ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে কাস্টমস। এ চিঠির আলোকে ট্রানজিট সুবিধার পণ্য বেনাপোল থেকে পেট্রাপোল বন্দরে প্রবেশ বন্ধ রয়েছে।”
আরো পড়ুন:
ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে সমস্যা বোধ করছি না: বাণিজ্য উপদেষ্টা
ভারতে মুসলিম ওয়াকফ বিল ২০২৫ পুনঃবিবেচনার দাবি বিএনপির
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট ষ্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, “ভারত সরকার ট্রানজিট সুবিধা বাতিল করায় আজ বেনাপোল থেকে ৪টি রপ্তানি পণ্য বোঝাই ট্রাক ফেরত গেছে।
বেনাপোল স্থল বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) শামীম হোসেন বলেন, “ট্রানজিট সুবিধা বাতিল করায় পেট্রাপোল কাস্টমস থার্ডকান্ট্রির পণ্য কার্পাস ইস্যু করেনি। ভারতের ট্রানজিট সুবিধার বাতিল করায় ট্রাকগুলো বেনাপোল বন্দর থেকে ফেরত গিয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে সকল প্রকার রপ্তানিবাহী ট্রাক যাওয়া স্বাভাবিক আছে।”
এর আগে, মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক বোর্ড (সিবিআইসি) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুন দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট–সংক্রান্ত আদেশটি বাতিল করা হয়েছে।
এর মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে স্থলপথে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারে পণ্য রপ্তানির সুযোগ বাতিল হয়ে যায় বাংলাদেশের।
পরবর্তীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে, ভারতের বিমানবন্দরগুলো ব্যবহার না করলে স্থলপথে নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।
বাণিজ্য উপদেষ্টা যা বললেন
অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের কারণে আমরা কোনো সমস্যা বোধ করছি না।”
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “এটা (ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল) আমাদের ওপর হঠাৎ করে আরোপিত হয়েছে। সাথে সাথেই আমাদের সব অংশীজন নিয়ে গতকাল আমি মিটিং করেছি। এটাতে আমরা কোনো সমস্যা বোধ করছি না। আমাদের নিজস্ব সক্ষমতা, প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় যাতে কোনো ঘাটতি না হয় এবং আমাদের রপ্তানির ক্ষেত্রে যাতে যোগাযোগের কোনো ঘাটতি না পড়ে, সেক্ষেত্রে আমরা সব ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি আশা করি, এটা আমরা উতরে যাব।”
কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে-এ প্রশ্নের জবাবে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “আমি এই মুহূর্তে আপনার সঙ্গে শেয়ার করব না। প্রতিযোগিতায় আমাদের যে প্রতিবন্ধকতাগুলো আছে, সেগুলো কিছু কাঠামোগত, কিছু খরচের দিক থেকে—সব জিনিস সমন্বয় করে আমরা সক্ষমতা বৃদ্ধি করব। আমি এখানে কোনো সমস্যা দেখছি না।”
ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য তৃতীয় কোনো দেশে যাওয়ার জন্য ২০২০ সালের ২৯ জুন একটি চুক্তি করেছিল ভারত।
ঢাকা/রিটন/সাইফ