স্ত্রী মডেল বিয়াঙ্কা সেন্সরিকে নিয়ে এবাররে গ্র্যামির লাল গালিচায় হাজির হন মার্কিন র‍্যাপার কানইয়ে ওয়েস্ট। রোববার রাতে এই তারকা দম্পতির যে ঘটনা ঘটিয়েছেন তাতে রীতিমতো অবক হওয়ারই মত। কারণ, পরনে ত্বকের রঙের ছোট পোশাক থাকলেও ক্যামেরায় বিয়াঙ্কার শরীর পুরোপুরি উন্মুক্ত বোঝা যাচ্ছিল। এমন বিতর্কিত কাণ্ড ঘটানোর জন্য নাকি স্ত্রী বিয়াঙ্কাকে নির্দেশ দেন কানইয়ে।

সিবিএস মর্নিং থেকে শেয়ার করা একটি ভিডিওযতে দেখা যায়, ক্যামেরার সামনে একটি কালো রঙের বিশাল বড় জ্যাকেট পরে আসেন বিয়াঙ্কা সেন্সরি। পাশে ছিলেন স্বামী কানইয়ে। ক্যামেরার সামনে দুজনকে কোনও গোপন আলোচনা করতে দেখা যায়। স্বামীর নির্দেশ পাওয়া মাত্রই বিয়াঙ্কা পিছনে মুখ ফিরে দাঁড়ান এবং গায়ে থাকা কোট নামিয়ে দেন। কালো পোশাকটি সরে যেতেই বোঝা যায় একেবারে নগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন বিয়াঙ্কা।

কনইয়ে তার স্ত্রীকে কী নির্দেশ দিয়েছিলেন তা বোঝা না গেলেও অনুমান করা হচ্ছে তিনি বলেছিলেন, এমন একটি দৃশ্য তৈরি করার জন্য যাতে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। স্বামীর কাছ থেকে গায়ের কোট ফেলে দেওয়ার নির্দেশ পেয়ে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানানোর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে অর্ধনগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে পড়েন বিয়াঙ্কা। এ ঘটনার পর এই দম্পতিকে আর অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। শোনা যাচ্ছে, সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ কানইয়ে ও বিয়াঙ্কাকে অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেন।

রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, ক্যামেরার সামনে নগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে পড়ার প্রধান উদ্দেশ্য হল ইয়ের ‘ভুল্টুন ওয়ান’ অ্যালবামের প্রচার। অ্যালবামের কভারেও বিয়াঙ্কাকে এমন একটি পোশাকে দেখা যায়।

কেউ কেউ সেন্সরির মানসিক সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেছেন, কেউ কেউ আবার বিয়াঙ্কাকে এই অসুস্থ সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছেন। সূত্র: হিন্দুন্থান টাইমস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘সংসার চালানোই মুশকিল, ইফতার কিনবো কিভাবে’

গাইবান্ধা শহরে কুলির কাজ করেন সদর উপজেলার পূর্ব কোমরনই মিয়াপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলাম। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় করেন। কাজকর্ম তেমন না থাকায় অতিরিক্ত আয়ও হয়না। তবুও কষ্ট করে ৭০ থেকে ৮০ টাকার ইফতার কিনতে হয়। তা দিয়েই চলে পরিবারের চারজনের ইফতার। 

শুধু জাহিদুল ইসলাম নন, তার মতো আরও অনেক মানুষের আয় কমে যাওয়ায় এবার তাদের অনেকেই  ইফতার সামগ্রী কিনতে পারছেন না। 

সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া প্রায় প্রত্যেক পেশাজীবির আয় কমেছে। এর মধ্যে দিনমজুর, অটোভ্যান-রিকশা চালক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অন্যতম। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির তুলনায় তাদের আয় বাড়েনি, বরং কমেছে। যার প্রভাব পড়েছে পবিত্র রমজান মাসের ইফতার সামগ্রী বিক্রির দোকানেও।

গাইবান্ধা ডিবি রোডের রড সিমেন্টের দোকানে কুলির কাজ করেন শফিকুল ইসলাম। সারাদিনে আয় করেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তিনি বলেন, “এই টাকা দিয়ে সংসার চালানোই মুশকিল। ইফতার কিনবো কিভাবে? এবছর এক দিনও ইফতার কিনিনি। ভাত-তরকারি দিয়েই ইফতার করি।” 

ডিবি রোডের কাচারি বাজার এলাকায় সড়কের পাশে ভ্রাম্যমাণ ইফতার বিক্রেতা শুভ মিয়া। তিনি বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর বেচা-বিক্রি অনেক কম। গত বছর সারাদিনে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার ইফতার বিক্রি করেছিলাম। এ বছর ৩ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মানুষের হাতে টাকা নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যও ভালো না।” 

মাঠ বাজার এলাকার আজাদ মিয়া জর্জ কোর্টে চাকরি করেন। বিকেলে ইফতার কিনতে এসেছেন। তিনি বলেন, “আগের মতো আর ইফতার কিনতে পারিনা। এখন বুট, বুন্দিয়াসহ তিন-চারটা আইটেম ৮০ টাকায় কিনেছি। বাসায় মুড়ি আছে, এসব দিয়েই পরিবারের সবাই ইফতার করবো।” 

তিনি বলেন, “চাল, ডাল, তেল, মাছ-মাংসসহ  নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুরই দাম বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় মানুষের আয় বাড়েনি। সবকিছু কেমন যেন থমকে আছে। যারা ব্যবসা করেন, তারাও ভালো নেই। তাই, ইফতারের পিছনে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করা সবার পক্ষে সম্ভব নয়।” 

রমজানে শহরের ডিবি রোড, স্টেশন রোড, পার্ক মোড়, কাচারি বাজার, পুরাতন বাজার মোড়, জেলা পরিষদ মোড়, হাসপাতাল রোড, বাস টার্মিনাল, খন্দকার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় বসেছে অস্থায়ী এসব ইফতার সামগ্রীর দোকান।

ইফতারের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ১০০ গ্রাম ছোলা বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, বেগুনি ৫ টাকা, পিঁয়াজু ৫ টাকা, প্রতি পিস জিলাপি আকার ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা, চিংড়ির বড়া ১০ টাকা, গ্রিল চিকেন সিঙ্গেল ৮৫ টাকা, বুন্দিয়া ১০০ গ্রাম ১৫ টাকা, খাসির কার্টলেট ৩০ টাকা, চিকেন ফ্রাই কোয়ার্টার ১২০ টাকা, হালিম হাফ ৮০ টাকা, চিকেন বিরানি ১৫০ টাকা, খাসির কাচ্চি ১৫০ টাকা, বিফ রোল ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

ভ্রাম্যমান ইফতার বিক্রেতা ডি বি রোডের সিয়াম বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রি কমেছে। গত বছর রোজার শুরু থেকেই ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার ইফতার বিক্রি করেছি। এবছর ছয় রোজা পার হলেও একদিনে ৫ হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছে না।” 

সদর উপজেলার মিয়াপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম রড সিমেন্টের দোকানে কুলির কাজ করেন। সারাদিনে আয় করেন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। তিনি জানান, এই টাকা দিয়ে সংসার চালানোই মুশকিল। ইফতার কিনবো কিভাবে? 

রড সিমেন্টের দোকানে কাজ করেন শহরের মিতালিবাজার এলাকার কবির মিয়ার ইফতার কেনার সামর্থ্য নেই 

শহরের মিতালিবাজার এলাকার ভ্যানচালক কবির মিয়া। বিভিন্ন দোকানে কুলির কাজ করেন। তিনি বলেন, “আগের মতো আয়, রোজগার নাই। এখন সারাদিনে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কামাই করি। ইফতার কেনার সামর্থ্য নেই। ভাত খেয়েই ইফতার করি।”

শহরের বড় মসজিদ এলাকার ভ্রাম্যমাণ ইফতার বিক্রেতা বাদশা মিয়া গত বছর ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা ইফতার বিক্রি করতেন। এ বছর ৩ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারছেন না তিনি। 

বিক্রেতা বাদশা মিয়া বলেন, “এবছর যে বেচা-বিক্রি হচ্ছে, তাতে করে দোকানের কর্মচারীদের বেতন দিতেই শেষ। আগে কখনো এত কম বিক্রি হয়নি। ব্যবসার অবস্থা একেবারেই খারাপ।”

ঢাকা/মাসুম/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ