Risingbd:
2025-04-30@14:39:25 GMT

টলিউডে ফের অচলাবস্থা!

Published: 4th, February 2025 GMT

টলিউডে ফের অচলাবস্থা!

ডিরেক্টরস গিল্ড ও টেকনিশিয়ান ফেডারেশনের দ্বন্দ্বে টলিউডে ফের অচলাবস্থা। বন্ধ হয়ে গেছে শুটিং। পরিচালক জয়দীপ মুখার্জি, কৌশিক গাঙ্গুলির পর এবার টেকনিশিয়ান ফেডারেশনের কোপে পরিচালক শ্রীজিৎ রায়।  

পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, শ্রীজিৎ রায় ফেডারেশনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। আর সে কারণেই আর্ট সেটিং গিল্ডের টেকনিশিয়ানেরা পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে রাজি নন। যার ফলে, শ্রীজিৎ রায়ের নতুন টিভি সিরিয়ালের শুটিং শুরুর আগেই থমকে গিয়েছে। সৃষ্ট দ্বন্দ্বের সমাধান না হলে আগামীকাল থেকে সব সিরিয়ালের শুটিং বন্ধ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

গত ২৭ জানুয়ারি শ্রীজিৎ রায়ের নতুন সিরিয়ালের সেট তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই সেটিং টিমের মধ্যে একটা চাপা অসন্তোষ দেখা যাচ্ছিল। তবে আচমকা সোমবার রাতে সেটের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এখন পর্যন্ত টেকনিশিয়ানদের কেউ কাজে যোগ দেননি। ফলে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

আরো পড়ুন:

টি-বয় থেকে ২৮০ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেতা যশ

ওরা আমাকে মেরেই ফেলত: বিশ্বনাথ

পরিচালক শ্রীজিৎ রায়ের দাবি, “টেকনিশিয়ানদের একটাই বক্তব্য— ‘ক্ষমা চাইতে হবে পরিচালককে। তবেই কাজ শুরু হবে, নতুবা কাজ বন্ধ থাকবে।’ কিন্তু আমি কী এমন করেছি, যার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে?”

অভিযোগকারীদের কাছে প্রমাণ চেয়েছেন শ্রীজিৎ রায়। এ তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমি নাকি ফেডারেশন বিরোধী কথাবার্তা বলেছি। মাদার বডির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। সেই কারণেই ওরা কাজ বন্ধ করেছে। আমি যে কথা বলেছি তার প্রমাণ চেয়েছি। গতকাল রাত পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।”

পরিচালক শ্রীজিৎ একজন প্রযোজকও। সংকটে পড়ে ফেডারেশনকে মেইল করেন তিনি। এ বিষয়ে শ্রীজিৎ বলেন, “প্রযোজক হিসেবে আমি ফেডারেশনকে মেইল করে জানিয়েছি, কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মেইলটা কর্মবিরতির বিরুদ্ধেই করা হয়েছে। তারাও আমার মেইলের উত্তর দেয়নি। আমি জানিয়েছিলাম, এর যথাযথ বিচার করুন ও আমার সঙ্গে কাজটা করুন। ২৪ ঘণ্টা হতে চলল, সেই মেইলেরও উত্তর পাইনি।”

শুটিং বন্ধ থাকলে অর্থনৈতিকভাবে লোকসানের মুখে পড়বেন প্রযোজক শ্রীজিৎ। তার ভাষায়, “সেট বানাতে ২০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছি। আমাকে দেখে বুঝতেই পারছেন আমি বিশাল মাপের মানুষ নই। ২০ লাখ টাকা চলে গেলে আমাকে পথে বসতে হবে। আমার পেটে টান পড়বে; সংসারে অসুবিধা হবে।”

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভে এসে নিজের সঙ্গে হওয়া অবিচার নিয়ে কথা বলেন শ্রীজিৎ। লাইভে ‘দাসানি ১’-এ সমবেত হওয়ার ডাক দেন পরিচালক। খবর পেয়েই স্টুডিও পাড়ায় ছুটে যান ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সুব্রত সেন, সম্পাদক সুদেষ্ণা রায়। সংগঠনের কার্যকরী কমিটির সদস্য রাজ চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও পরমব্রত চ্যাটার্জি প্রমুখ। সকলের মুখে একটাই প্রশ্ন— দোষ কোথায়? কী কারণে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত? এই ঘটনা তো আগামীতে যে কারো সঙ্গে ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

ডিরেক্টরস গিল্ডের সম্পাদক সুদেষ্ণা রায় বলেন, “প্রথমে কৌশিকের ওপর কোপ, পরে জয়দীপের ওপরে। এভাবে পরিচালকদের কাজ বিনা নোটিশে বন্ধ করে দেওয়ার কোনো মানে নেই। শ্রীজিতের অপরাধটা কী সেটা আমরা আগে জানতে চাই। যদি সত্যিই অপরাধ থাকে তাহলে আমরা প্রত্যেকে ক্ষমা চাইব। কথা বলে মিটমাট করতে চাই। তাই কালকের দিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করব, যদি কিছু সুরাহা হয়।”

সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়ে সংগঠনটির কার্যকরী কমিটির সদস্য অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, “এইভাবে হুটহাট কাজ বন্ধ হলে টেকনিশিয়ানদেরও ক্ষতি। তাদের পেট চলে কাজ করে। আমরা অভিযোগ করে অশান্তি করতে চাই না। আলোচনা করে একটা বোঝাপড়ায় আসতে চাই।”

কথার শুরুতে প্রশ্ন ছুড়ে দেন অভিনেতা-নির্মাতা পরমব্রত চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, “একজন পরিচালক, প্রযোজক অনেক কষ্টে একটা বিনিয়োগ নিয়ে আসেন। ইন্ডাস্ট্রিতে একটা কাজ শুরু হয়। তাদের সঙ্গে যে এই বৈমাত্রেয় আচরণ, অপমানজনক আচরণের জবাব কে দেবে? এটা আমার প্রশ্ন।”

“শ্রীজিৎ রায় টিভি ইন্ডাস্ট্রিতে বড় নাম। কোনোটার পরিচালক, কোনোটার প্রযোজক শ্রীজিৎ নিজে। এসব কাজ ঘিরে তিনশ-চারশ লোকের রুজি রোজগার হয়। আজকে সে নতুন একটা সিরিয়াল শুরু করতে যাচ্ছে। তার সেট তৈরি হচ্ছে। একটি গিল্ডের লোকজনদের আসতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে, তারা আসছেন না। প্রতিদিনের সেট ভাড়া, ফ্লোর ভাড়া নষ্ট হচ্ছে। এখানে ভেবে দেখা দরকার, এসবে লাভ বা ক্ষতিটা কার?” বলেন পরমব্রত।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশনা উল্লেখ করে সংগঠনটির কার্যকরী কমিটির সদস্য পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, “আগেও মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘অসুবিধা হলে আলোচনা করা উচিত। কাউকে নিষিদ্ধ, ব্ল্যাক লিস্টেড করা যাবে না।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ক জ বন ধ

এছাড়াও পড়ুন:

টাঙ্গাইলে স্কুল ঢুকে প্রধান শিক্ষককে ‌‘জুতাপেটা’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগে টাঙ্গাইলের মধুপুরে একদল নারী অভিভাবক আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষককে ‘জুতাপেটা’ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে মধুপুরের আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে ঢুকে তারা ওই শিক্ষকের ওপর হামলা করেন। ভুক্তভোগী আব্দুল জব্বার ওই বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক।

অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার স্কুলে ক্লাস করানোর সময় তাদের মেয়েদের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেছেন।

আরো পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’

এবার সিরাজগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

অ‌ভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার বলেন, “আমার মেয়েকে স্থানীয় এক যুবক উত্ত্যক্ত করতো। তাকে বিভিন্ন সময়ে বুঝানো হয়েছে। কথা না শুনায় তাকে শাসন করা হয়েছিল। সেই ছেলে ষড়যন্ত্র করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্ত করলে সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসবে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি শিক্ষার্থীদেরকে সন্তানের মতো দেখি। সেভাবেই আদর-শাসন করি। তদন্ত করে সঠিক বিষয়টি বের করার জন্য ঊর্ধ্বতনদের আহ্বন জানাচ্ছি।”

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রধান শিক্ষক হিসেবে আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত বছর এপ্রিল মাসে যোগ দেন আব্দুল জব্বার। বুধবার দুপুরে হঠাৎ করেই একদল নারী স্কুলে প্রবেশ করে তার কক্ষে যান। তারা আব্দুল জব্বারকে আক্রমণ করেন। এসময় সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগমসহ কয়েকজন প্রধান শিক্ষককে রক্ষার চেষ্টা করেন। ফলে শিক্ষকদের ওপর ক্ষিপ্ত হন হামলাকারীরা। পরে স্থানীয় কয়েকজন যুবক গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। 

প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলায় অংশ নেওয়া ঝুমা বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন, “বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার ক্লাস নেওয়ার সময় আমাদের মেয়ের শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়েছেন।” একই দাবি করেছেন সুমি বেগম নামে অপর এক নারী।

আকাশী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজেদা বেগম বলেন, “আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই হামলাকারীরা অফিসে প্রবেশ করে হামলা করেন। একপর্যায়ে তারা জুতা দিয়ে পেটাতে থাকেন। আমরা অনেক কষ্টে প্রধান শিক্ষককে হামলাকারীদের হাত থেকে উদ্ধার করি।”

মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া ঘটনাস্থলে যান। তিনি ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে অভিভাবকদের আশ্বস্ত করেন।

মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও নাজমুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।”

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ