টিনের ছাপরার খুপরি ঘরে বয়োজ্যেষ্ঠ মা আঙুর বালা ও বাবা বিশ্বনাথ মণ্ডলকে নিয়ে বাস করেন বিদ্যুৎ মণ্ডল (৩৫)। তারা কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের ভালুকা পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢোল বাজিয়ে যা আয় করেন, তা দিয়েই চলে সংসার। বসতবাড়ির জমি নিয়ে এক প্রতিবেশীর সঙ্গে আদালতে মামলা চলছে তাঁদের। তবে মামলা চলমান অবস্থায় ওই প্রতিবেশী লোকজন নিয়ে এসে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের খুপরি ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।

এর আগে গত সোমবার সকালে বাড়ির প্রবেশপথসহ সড়কের ধারে কয়েকশ মিটার তারকাঁটার বেড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে।

তারকাঁটার বেড়া দেওয়ার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন অভিযুক্ত প্রতিবেশী অধীর বাড়ই (৬০)। তিনি একই এলাকার মৃত অভিনাশ বাড়ইয়ের ছেলে। তবে তিনি ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক যুগ আগে অভিযুক্ত অধীর বাড়ইয়ের বাবা অভিনাশ বাড়ই প্রায় ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ জমি বিক্রি করেন বিদ্যুতের বাবা বিশ্বনাথ মণ্ডলের কাছে। জমির এককোণে খুপরি ঘরের তারা বসবাস করেন। অবশিষ্ট জমিতে বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেন। তবে ওই জমি নিজেদের দাবি করে ২০০২ সালে কুষ্টিয়া আদালতে রেকর্ড সংশোধনীর মামলা করেন অধীর বাড়ই।

বিদ্যুৎ মণ্ডলের পরিবার জানায়, দীর্ঘ শুনানির পর আদালত গত বছরের ২৮ নভেম্বর বিদ্যুৎ মণ্ডলের পক্ষে রায় দিলে অধীর বাড়ই রায়ের বিপক্ষে পুনরায় আপিল করলে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যেই অধীর তার লোকজন নিয়ে এসে জোর করে গত সোমবার তারকাঁটার বেড়া দিয়েছেন। এছাড়াও মঙ্গলবার সকালে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের কৃষ্টপুর-পূর্বাশা মোড়ে ঢুলি বিদ্যুতের বাড়ি। বাড়ির প্রবেশপথসহ সড়কের ধারে কয়েকশ মিটার তারকাঁটার বেড়া। তার টিনের খুপরি ঘরের চাল ও বেড়া ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। সেগুলো পড়ে আছে মাটিতে। আসবাবপত্রগুলো অগোছালো। সুপেয় পানির টিউবওয়েলটিও নেই।

এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে আঙুর বালা বলেন, আমরা গরীব ও নিরীহ মানুষ। লোকবল, টাকা পয়সা নেই। আদালতে মামলা চলছে। তবুও অধীর লোকজন নিয়ে এসে রাস্তার ধারে তারের বেড়া দিয়েছে। আজ সকালে লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে আমাকে মারধর করে ঘরবাড়িতে ভাঙচুর করে স্বর্ণালংকারসহ মালামাল নিয়ে গেছে। কলটাও (টিউবওয়েল) ভেঙে নিয়ে গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

ঢুলি বিদ্যুৎ মণ্ডল বলেন, আমাদের কেনা জমি। তাও অধীর মামলা করেছে। আদালত আমার পক্ষে রায় দিলেও (আজ) পুনরায় আপিল করায় মামলাটি চলমান। তারপরও ক্ষমতা খাঁটিয়ে লোকজন নিয়ে এসে ঘরবাড়ি ভেঙে লুটপাট করেছে। তারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে আমার বাড়ি। আমি বিচারের আশায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

অভিযুক্ত অধীর বাড়ই বলেন, বিদ্যুৎরা বেশি জমি দখল করে নিয়েছে। সেজন্য আমি তারকাঁটার বেড়া দিয়েছি। তবে ভাঙচুর বা লুটপাট করিনি।

পান্টি ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বরের ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা এতেম আলী বলেন, ওই দাগে ৪৮ শতক জমি আছে। তার মধ্যে ৩৪ শতক বিদ্যুতের বাবার কেনা জমি। অবশিষ্ট জমি অধিরের ছোট ভাই আরেকটি পক্ষের কাছে বিক্রি করে ভারতে চলে গেছে। এখন অন্যায়ভাবে অধীর অশান্তি সৃষ্টি করছে। এর একটা সমাধান ও বিচার হওয়া দরকার।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

সোলায়মান শেখ বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগটি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল কজন ন য়

এছাড়াও পড়ুন:

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঈদ পুনর্মিলনী

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসির ঈদ পুনর্মিলনী ৭ এপ্রিল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আবু রেজা মো. ইয়াহিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করে বক্তব্য দেন ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম আজহারুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, মো. কাউছার উল আলম ও আবু নাছের মোহাম্মদ নাজমুল বারীসহ সারাদেশ থেকে ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাহী ও কর্মকর্তারা।

অনুষ্ঠানে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান, ৯টি জোনের জোনপ্রধান, ২০৬টি শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, ১৭৭টি উপশাখার ইনচার্জসহ অন্যান্য নির্বাহী ও কর্মকর্তারা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থেকে পারস্পরিক ঈদ আনন্দ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।

মোহাম্মদ আবদুল মান্নান প্রধান অতিথির ভাষণে ঈদুল ফিতরকে বাংলাদেশের বৃহত্তম ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব উল্লেখ করে বলেন, “রমজান ও ঈদের মূল শিক্ষার আলোকে ধনী-গরীবের বৈষম্য কমানো, দারিদ্র্য বিমোচন ও সংকুলানমূলক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।”

তিনি বলেন, “গত ৬ মাসে ৭ লাখ ৩৩ হাজার নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে মানুষ ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রতি তাদের আস্থার স্বীকৃতি দিয়েছে। আস্থা ফিরে আসায় এই সময়ে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা নতুন আমানত সংগ্রহের পাশাপাশি ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা অনাদায়ী বিনিয়োগ আদায় হয়েছে।” 

ইসলামী ব্যাংকিংয়ের কল্যাণমুখী সেবা সাধারণ মানুষের নিকট পৌঁছে দিয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা/সাজ্জাদ/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ