প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়ে লিফলেট বিতরণ করলেন স্ত্রী, গ্রেপ্তার ‘স্বামী’
Published: 4th, February 2025 GMT
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মৌসুমী রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। পরে লিফলেট বিতরণের ছবি দেন ফেসবুকে। এ ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করতে বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু মৌসুমীকে না পেয়ে তার ‘স্বামী' ওহিদুর রহমানকে (৫০) গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে।
তবে পুলিশ বলছে, স্ত্রীকে না পেয়ে স্বামীকে আটকের কথা সঠিক নয়।
সোমবার সন্ধ্যার পর মৌসুমী রহমান বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি করে লিফলেট বিতরণ করেন। তার লিফলেট বিতরণের ছবি আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও শেয়ার করা হয়। এ ঘটনার পর তার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। স্থানীয়রা জনান, তাকে না পেয়ে স্বামী ওহিদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুঠিয়া থানা-পুলিশ।
এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, ৫ আগস্টের পর একটি নাশকতার মামলায় অভিযুক্ত ওহিদুর জড়িত ছিল। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্ত্রীকে না পেয়ে স্বামীকে আটকের কথা সঠিক নয়।
এসব বিষয়ে জানতে মৌসুমী রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার দুটি ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ড ইউন স পদত য গ রহম ন
এছাড়াও পড়ুন:
ছোট বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে গতি কম
অপ্রচলিত বা নতুন বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। তবে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির গতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো বড় বাজারের তুলনায় বেশ কম।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) নতুন বাজারে ৫১২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি হওয়া ৪৮০ কোটি ডলারের তুলনায় ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। অথচ চলতি অর্থবছর এখন পর্যন্ত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ইইউতে ১১ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ শতাংশ ও কানাডায় ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য জানিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৩ হাজার ২৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ইইউতে ৫০, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯, যুক্তরাজ্যে ১১, কানাডায় ৩ ও নতুন বাজারে ১৭ শতাংশ তৈরি পোশাক যায়।
নতুন বাজারের মধ্যে রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে। আবার অস্ট্রেলিয়া ও চীনে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে খুবই কম। ফলে সার্বিকভাবে নতুন বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেছে।
বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে অপ্রচলিত সবচেয়ে বড় বাজার জাপান। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে এ বাজারে বাংলাদেশ থেকে ৯৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি তার আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। দ্বিতীয় বড় বাজার অস্ট্রেলিয়ায় চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৬৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
ভারত বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের তৃতীয় শীর্ষ নতুন বাজার। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে ৫৪ কোটি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। চতুর্থ শীর্ষ নতুন বাজার তুরস্ক। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটিতে ৩৫ কোটি ৭২ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। তুরস্কের কাছাকাছি তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়, ৩৫ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৬৭ শতাংশ কম।
বিজিএমইএর তথ্যানুযায়ী, রাশিয়ার বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে এ বাজারে রপ্তানি হয়েছে ২৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক। গত বছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর বসেছে অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ। ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত করলেও ইতিমধ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে পণ্য রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজারে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদেরা।
বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান গত বৃহস্পতিবার এক সংলাপে বলেন, এশিয়ায় বড় বাজার রয়েছে। চীন বছরে ২ হাজার ৮০০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। ভারত আমদানি করে ৭৫০ কোটি ডলারের পণ্য। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত চীনে ১ বিলিয়ন ও ভারতে ২ বিলিয়ন ডলারের কম রপ্তানি করে। এ জায়গা মনোযোগ দেওয়া গেলে পণ্য ও বাজার বহুমুখী করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো সম্ভব।