ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে জয়ী তারা
Published: 4th, February 2025 GMT
প্রতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয়ে থাকে বিশ্ব ক্যানসার দিবস। বলিউডের বেশ কজন তারকা ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হয়েছেন। তাদের সাহসী মনোবল এই লড়াইয়ে জয়ী হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাদের লড়াকু মনোভাব লাখো ক্যানসার আক্রান্তকে আশার আলো দেখিয়েছে। বিশেষ দিনে বলিউডের এমন সাত তারকাকে নিয়ে এই প্রতিবেদন।
কিরণ খের
২০২১ সালে অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ কিরণ খেরের মাল্টিপল মাইলোমা ধরা পড়ে। এটি এক ধরনের রক্তের ক্যানসার। মুম্বাইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। চিকিৎসা চলাকালীনও টেলিভিশন রিয়ালিটি শোয়ের বিচারকের দায়িত্বও পালন করেছেন এই অভিনেত্রী। এই সংগ্রামে জয়ী হয়ে কাজেও পুরোদমে কাজে ফিরেছেন কিরণ।
রাকেশ রোশান
২০১৯ সালে বলিউড পরিচালক, অভিনেতা হৃতিক রোশানের বাবা রাকেশ রোশানের গলায় স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা ধরা পড়ে। হৃতিক রোশান ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছিলেন, “বাবা সম্ভবত আমার দেখা সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ। কয়েক সপ্তাহ আগে ক্যানসার ধরা পড়লেও পুরো উদ্যমে এই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।”
আরো পড়ুন:
বলিউডের ব্যয়বহুল ৬ বিবাহবিচ্ছেদ
আসছে ‘মুন্না ভাই থ্রি’, যা বললেন পরিচালক
সোনালি বেন্দ্রে
২০১৮ সালে বলিউড অভিনেত্রী সোনালি বেন্দ্রের মেটাস্ট্যাটিক ক্যানসার ধরা পড়ে। চতুর্থ স্টেজে তার ক্যানসার শনাক্ত হয়। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে সোনালি লিখেছিলেন, “একেবারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে এই লড়াই লড়ছি। কারণ আমার পাশে রয়েছে আমার পরিবার ও বন্ধুরা।” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে দীর্ঘ চিকিৎসার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হন সোনালি।
সঞ্জয় দত্ত
২০২০ সালের আগস্টে বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তর ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে। স্টেজ ফোরে ক্যানসার শনাক্ত হলেও কয়েক মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন। আবেগঘন এক পোস্টে তিনি লেখেন, “শেষ কয়েকটা সপ্তাহ আমার পরিবার ও আমার জন্য খুব কঠিন ছিল। কিন্তু যেমনটা বলা হয়ে তাকে, ঈশ্বর সবচেয়ে কঠিন লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ তার সবথেকে শক্তিশালী সৈনিকদেরই দেন।”
মহিমা চৌধুরী
‘পরদেশ’খ্যাত বলিউড অভিনেত্রী মহিমা চৌধুরী স্তন ক্যানসার আক্রান্ত হন। ২০২২ সালে অভিনেতা অনুপম খের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়ের খবর দেন। পাশাপাশি তাকে ‘হিরো’ বলেও মন্তব্য করেন অনুপম। পরে এক ভিডিও বার্তায় মহিমা বলেন, “আমার কোনো লক্ষণ ছিল না। প্রতিবছরই নিয়ম করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাই। এবার পরীক্ষার সময় চিকিৎসক সন্দেহবশত স্তনের টিস্যুর কিছুটা অংশ বায়োপসি পরীক্ষা করতে দেন। পরীক্ষায় ফল নেগেটিভ আসে। কিন্তু সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন। অস্ত্রোপচারের পর পুরো টিস্যুর বায়োপসি করানো হয়, তখন খুব সূক্ষ্ম একটা অংশে ক্যানসারের উপস্থিতি পাওয়া যায়।” তবে এ লড়াইয়ে জয়ী হয়েছেন মহিমা।
মনীষা কৈরালা
২০১২ সালে বলিউড অভিনেত্রী মনীষা কৈরালার জরায়ুতে ক্যানসার ধরা পড়ে। চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন। ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এখন কাজ করছেন তিনি। এমনকি নিজের সংগ্রামের জার্নি নিয়ে একটি স্মৃতিকথাও লিখেছেন এই অভিনেত্রী।
তাহিরা কাশ্যপ
২০১৮ সালে অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানার স্ত্রী তাহিরা কাশ্যপ ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করেন। তার ডাক্টাল কার্সিনোমা ইন সিটু (DCIS) ধরা পড়ে। যেখানে তার ডান স্তনে উচ্চ-গ্রেডের ক্যানসার কোষ ছিল। চিকিৎসার পর ক্যানসারমুক্ত হন। ২০২৪ সালে পরিচালক হিসেবে তার অভিষেক ঘটে।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সন্দেহভাজন নীরব মোদির সহযোগী চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার
ভারতের পলাতক জুয়েলারি ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ভারতের অন্যতম বড় ব্যাংক জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য প্রকাশ্যে আসার সাত বছর পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো। আজ সোমবার তাঁর আইনজীবী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তিনি মুক্তি পেতে আদালতে আপিল করবেন।
ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ভারত সরকার চোকসিকে গ্রেপ্তারের আগেই তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য বেলজিয়াম সরকারের কাছে অনুরোধ পাঠিয়েছিল।
সম্পদের দিক থেকে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (পিএনবি)। ২০১৮ সালে এই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, মুম্বাইয়ের একটি শাখা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে চোকসি ১৮০ কোটি মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিয়েছেন বলে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে।
ব্যাংকটি ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার কাছে একটি ফৌজদারি অভিযোগ জমা দিয়েছে। অভিযোগে ধনকুবের জুয়েলারি ব্যবসায়ী নীরব মোদি এবং তাঁর চাচা ও গীতাঞ্জলি জেমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহুল চোকসিসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে বলা হয়, তাঁরা পিএনবির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় পুলিশ চোকসি, নীরব মোদি এবং অন্যান্যের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে। এসব লেনদেনে পিএনবির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এই দুই হীরা কারবারি তাঁদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০১৮ সালে চোকসি এক চিঠিতে বলেন, আগাম একটি ধারণা নিয়ে সংস্থাগুলো তদন্ত করছে এবং এর মাধ্যমে তারা বিচারপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করছে।
চোকসির আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল আজ সোমবার রয়টার্সকে বলেন, তাঁর মক্কেল ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাঁর পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেই—এই কারণ দেখিয়ে তাঁর মুক্তির জন্য আপিল করা হবে। তিনিও আরও বলেন, চোকসি বেলজিয়ামে কোনো অপরাধ করেননি।
নীরব মোদির বিরুদ্ধে পিএনবির মামলার বিস্তারিত প্রকাশ্যে আসার আগেই তিনি ২০১৮ সালের ভারত থেকে পালিয়ে যান। তিনিও ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যে গ্রেপ্তার হন এবং এখনো তিনি সেখানে আটক আছেন। যদিও এর মধ্যে তিনি একবার প্রত্যর্পণের আপিলে হেরেছেন।
মোদি বেলজিয়ামের হীরা প্রক্রিয়করণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আন্তওয়ার্পেনে বড় হয়েছেন। অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার আগে থেকেই চোকসি নিয়মিত ওই শহরে যাতায়াত করতেন।
মুম্বাইয়ের হীরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চোকসির আশ্রয় নেওয়ার আদর্শ জায়গা হতে পারত আন্তওয়ার্পেন। কারণ, তিনি সেখানে অনেককে চেনেন এবং সেখানে যাঁরা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, এমন অনেকের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক রয়েছে।