বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার সাভারে শহীদ হওয়া শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনের মরদেহ উত্তোলনে বাধা দিয়েছে পরিবার। 

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) আদালতের আদেশে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানা পুলিশ কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করতে আসে। তবে পরিবারের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইয়ামিনের মরদেহ উত্তোলন স্থগিত করা হয়। 

২০২৪ সালের ১৮ জুলাই সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শহীদ হন শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন। তাকে ব্যাংক টাউন এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয়। 

আরো পড়ুন:

মুক্তাগাছায় কিশোরের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

নদীতে নিখোঁজ ৩ স্কুলছাত্রের একজনের মরদেহ উদ্ধার

আজ দুপুর ১২টার দিকে ইয়ামিনের মরদেহ উত্তোলনের জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো.

আলী হাসানসহ সাভার মডেল থানা পুলিশ সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় আসেন। তারা ইয়ামিনের মামা মো. আব্দুল্লাহ আল মুনকাদিরের সহযোগিতায় শহীদ ইয়ামিনের কবর শনাক্ত করেন। পরে তারা শহীদের বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মরদেহ উত্তোলনের বিষয়ে আলোচনা করেন। পরিবারের সদস্যরা ইয়ামিনের মরদেহ উত্তোলনে অসম্মতি জানান।

নিহত ইয়ামিনের মামা মো. আব্দুল্লাহ আল মুনকাদির বলেন, “ইয়ামিনের বাবা-মা কেউ চাচ্ছেন না মরদেহ উত্তোলন করা হোক। ইয়ামিনকে শহীদের মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। তাকে হত্যার ভিডিও ফুটেজ, ছবিসহ সব প্রমাণ রয়েছে। এগুলো দিয়েই ন্যায় বিচার পাওয়া সম্ভব। তাই পরিবারের সবার পক্ষ থেকে আমি আদালতের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করেছি, মরদেহ উত্তোলন না করার।” 

তিনি আরো বলেন, “ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় বাদী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও ঢাকার নিম্ন আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেছি।” 

ঢাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হাসান বলেন, “আদালতের নির্দেশ ইয়ামিনের মরদেহ কবর থেকে তুলে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। শহিদ ইয়ামিনের পরিবারের সদস্যরা কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করতে ইচ্ছুক নন। ইয়ামিন শহিদের মর্যাদা পেয়েছেন জানিয়ে মরদেহ উত্তোলনে আপত্তির বিষয়টি উল্লেখ করে তারা লিখিত আবেদন দিয়েছেন।”

তিনি আরো বলেন, “আবেদনের বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মরদেহ উত্তোলন কার্যক্রম আপতত স্থগিত রাখা হয়েছে।” 

শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন রাজধানীর মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

সাড়ে ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলো আমদানিকৃত ৭৪ গাড়ি

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বিদেশ থেকে আমদানি করা ৭৪টি মূল্যবান গাড়ির ঠিকানা হলো রি-রোলিং মিল। ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় ভাঙারি হিসেবে গাড়িগুলো কেটে প্রতি কেজি ২৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি করে দিলো চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমতি সাপেক্ষে উন্মুক্ত নিলামের মাধ্যমে  বিক্রি করা হয়েছে স্ক্র্যাপ করা গাড়িগুলো।

জানা গেছে, নিলামে অংশ নেয় চট্টগ্রামের ১৫টিরও বেশি রি-রোলিং মিল। ৫৮টি লটে ৭৪টি গাড়ি নিলামে বিক্রির জন্য প্রতি টনের ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছিল ৫৩ হাজার টাকা। কিন্তু নিলামে দর ওঠে ২৪ হাজার ৫শ টাকা পর্যন্ত। অবশ্য, ১৩ হাজার টাকা থেকেই শুরু হয়েছিল ডাক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে  চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ৭৪টি গাড়ির কাটা টুকরো বিক্রি হয়েছে। প্রতি টনের ভিত্তি মূল্য ধরা হয়েছিল ৫৩ হাজার টাকা।

সূত্রমতে, গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বরেই স্ক্র্যাপ করতে কাটা হয়েছিল এই ৭৪টি গাড়ি। মামলাসহ বিভিন্ন জটিলতায় গাড়িগুলো আগেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল বলে দাবি চট্টগ্রাম কাস্টমসের।

চট্টগ্রাম কাস্টমস জানায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিলাম না হওয়ার কারণে বন্দর ইয়ার্ডে পণ্য নষ্ট হয়ে যায়। চুরি হয়ে যায় গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ। চট্টগ্রাম বন্দরে ১৫ বছর ধরে পড়ে ছিল আমদানি করা ১২১টি দামি গাড়ি। দীর্ঘ সময় পড়ে থাকায় সেসব গাড়ির আয়ু শেষ হয়ে গেছে। অনেকগুলোর মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি নীতি অনুযায়ী, এত পুরনো গাড়ি নিলামে বিক্রির সুযোগ নেই। এ অবস্থায় বিআরটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত কাস্টমস নিলাম কমিটি ২০২২ সালে ১২১টি গাড়ি ধ্বংসের সুপারিশ করে।

বিকল্প কোনো পথ না থাকায় আমদানি করা গাড়িগুলো কেটে স্ক্র্যাপ হিসেবে কেজি দরে নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় কাস্টমস। কারণ শেডে থাকা ওই গাড়িগুলোতে বিস্ফোরণ বা দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি রয়েছে। প্রথম দফায় ৭৪টি গাড়ি কেটে স্ক্র্যাপ হিসেবে নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি হলে বাকি ৪৬টি গাড়িও কাটা হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার (নিলাম) মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, মামলাসহ বিভিন্ন জটিলতায় গাড়িগুলো আগেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। এজন্য এনবিআরের অনুমতি নিয়ে গাড়িগুলো স্ক্র্যাপ আকারে বিক্রি করা হয়েছে।

এদিকে, মূল্যবান ৭৪টি গাড়ি ভাঙারি হিসেবে বিক্রি করা নিয়ে বিডারদের অভিযোগের শেষ নেই। তারা বলেন, শর্তারোপের মাধ্যমে শুধুমাত্র রি-রোলিং মিলগুলোকেই উন্মুক্ত নিলামে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।

বিএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ