‘নিখোঁজ’ শিশু সুবা নওগাঁ থেকে উদ্ধার
Published: 4th, February 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে নিখোঁজ স্কুলছাত্রী আরাবি ইসলাম সুবাকে আরজী-নওগাঁ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সুবার বন্ধুর বাসা থেকে পুলিশের সহায়তায় র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করেন। পরে সুবাকে জয়পুরহাট র্যাব ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নওগাঁ সদর থানার ওসি নুরে আলম সিদ্দিকী।
বিস্তারিত আসছে.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের আইনগুলো কার্যকর নয়
দুঃশাসন মানুষকে হতভাগ্য আর উদ্ধত করে তোলে। দুঃশাসনের একটি ভয়ানক ডমিনো ইমপ্যাক্ট থাকে। এতে জুলুম পর্যায়ক্রমে সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের দিকে আবর্তিত হতে থাকে, যা সুশাসনের ঠিক বিপরীত।
পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র কার্যকর কিনা, তা বুঝতে হলে আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে প্রতিটি ক্ষেত্রে তুলনামূলক পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্রমিক অগ্রগতির গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী কিনা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশ গত ৫৩ বছরে এসব ক্ষেত্রে কিছু পোস্টার পার্সন তৈরি করা ছাড়া মৌলিক অগ্রগতি আনতে পারেনি।
দেশের নারী জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ অংশ পিছিয়ে পড়াদের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া, মজলুমদের মধ্যে সবচেয়ে নিপীড়িত। নারীদের এই দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে পুঁজিপতি ও শিল্পমালিকরা তাদের সস্তাশ্রমের ওপর ভর করে কারখানা ও করপোরেট প্রতিষ্ঠান স্থাপন করছে। শ্রমবাজারে ব্যাপক নারী শ্রমিকের উপস্থিতির কারণে পুরুষদের মজুরিও ব্যাপক হারে সংকোচন করতে সক্ষম হয়েছে। গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানের মতো স্বাভাবিক জৈবিক কাজ দেশের স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থার জন্য নারীদের জন্য বিপর্যয়কর হয়ে উঠেছে।
এ দেশে নবজাতকের মৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুহার এখনও সন্তোষজনকভাবে কম নয়। এ দেশের বেটাগিরি রাজনৈতিক সংস্কৃতি নারীদের রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারণী পরিসরগুলোতে প্রকৃত অংশগ্রহণের পথ রুদ্ধ করে প্রতীকী প্রতিনিধিত্বে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে।
নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে প্রণীত আইনগুলো স্পষ্টতই কার্যকর নয়। সহিংসতার শিকার নারী বিচার চাইতে গিয়ে পুনরায় সহিংসতার শিকার হচ্ছে। স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুশাসনগুলোকে প্রায়ই নারীদের নিয়ন্ত্রণ ও বৈষম্যকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করে থাকে।
বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির প্রশ্ন নারী মুক্তির প্রশ্ন থেকে আলাদা নয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ দেশের প্রতিটি নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কোনো রাষ্ট্রকাঠামো আমরা গড়ে তুলতে পারিনি, কিন্তু সামাজিক নিরাপত্তার যত বলয় আমাদের সমাজে ছিল, তার প্রতিটিই সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে।
এ থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী-পুরুষের ন্যায়ানুগ সমতার বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব বাড়ানোর জন্য সংরক্ষিত আসনের পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী পদে নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
অর্থনৈতিকভাবে নারীদের জন্য কর্মসংস্থান, প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা উন্নয়নের সুযোগ বাড়াতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কর্মক্ষেত্র ও প্রকাশ্যে তাদের অংশগ্রহণ সহজ করতে হবে। নারীর নিরাপত্তায় আইনের কঠোর বাস্তবায়ন ও সামাজিক মনোভাবের পরিবর্তনের মাধ্যমে বৈষম্য দূর করে সমতাপূর্ণ সমাজ গঠন সম্ভব।
এর জন্য অবশ্যই পরিবার ও সমাজে পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জবাবদিহিমূলক কার্যকরী রাষ্ট্রকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।
লেখক : সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, জাতীয় নাগরিক পার্টি