বই পেয়ে খুশি বেদে সম্প্রদায়ের শিশুরা, শিক্ষা সহায়তায় এগিয়ে এলো প্রশাসন
Published: 4th, February 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় যাযাবর জীবনযাপন করা বেদে সম্প্রদায়ের শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পৌরসভার ২ নম্বর সদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৫ জন বেদে শিশুকে ফুল দিয়ে বরণ করে তাদের হাতে বই ও শিক্ষা উপকরণ তুলে দেওয়া হয়।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, বেদে সম্প্রদায়ের শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে দূরে রয়েছে। তাদের স্কুলে পাঠানোর দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসন নিয়েছে, যাতে কোনো সম্প্রদায় শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়।
বই হাতে পেয়ে শিশু রেক্সোনা, ববি আক্তার ও হায়দার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলে, বই পেয়ে আমরা খুব খুশি, কাল থেকে নিয়মিত স্কুলে যাবো ও লেখাপড়া করবো।
বেদেনী সর্দার শাহীনূর বেগম বলেন, আমাদের জীবন যাযাবর হলেও আমাদের সন্তানরা শিক্ষিত হয়ে সমাজের সবার সঙ্গে চলতে পারবে। প্রশাসন আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, এতে আমরা অনেক খুশি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো.
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি 'ঠান্ডা বাতাসে কেঁপে কেঁপে উঠি মোরা' শিরোনামে সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বেদে সম্প্রদায়ের দুর্দশার চিত্র উঠে আসে। এরপরই উপজেলা প্রশাসন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়।
এ উদ্যোগের ফলে বেদে সম্প্রদায়ের শিশুরা নতুন করে স্বপ্ন দেখছে, শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে তারা সমাজের মূল স্রোতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় ছুরিকাঘাতে অপূর্ব নামের এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। তিনি পঞ্চবটির বিসিক শিল্পনগরীর টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক ছিলেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত ছাত্রদলের মিছিল শেষে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রদল কর্মীরা সম্রাট নামের একজনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা নিহত ও হামলাকারী দুইজনকেই ছাত্রদল কর্মী বললেও, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হামলাকারী বিএনপির কেউ না। তাদের কর্মসূচি বানচাল করতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া মোহাম্মদ ইয়ামিন জানান, ধর্ষণের প্রতিবাদে ছাত্রদলের মিছিলের কর্মসূচি শেষ করে তারা চাষাড়াস্থ শহীদ মিনারের পেছন দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দিকে যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি দেখতে পান, পপুলারের পেছন দিকে নিহত অপূর্ব ও হামলাকারী সম্রাটের মধ্যে বাকবিতণ্ডা চলছে। এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি লেগে যায়। এসময় তিনি অপূর্বকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখেন। পরে তার বুকে ছুরিবিদ্ধ দেখতে পান।
তিনি জানান, হামলার পরে সম্রাট পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। তাকে ছাড়িয়ে নিতে তার ভাই আসলে তাকেও গণপিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সম্রাটকে উদ্ধার করে। এসময় অপূর্বকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ও সম্রাটকে পুলিশ নারায়ণগঞ্জ তিনশ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক অপূর্বকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা মাসদাইর জামালের গ্যারেজ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ খোকন ও নিহতের স্ত্রী সাথী আক্তার জানান, নিহত যুবক বিসিকের টি-শার্ট গার্মেন্টসের শ্রমিক। তিনি ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট ছিলেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার জাবুটিয়া গ্রামে। কি কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না।
হাসপাতালে সম্রাট হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে জানান, যারা হামলা করেছিল তারা চলে গেছে। তিনি শহীদ মিনারের পাশের বেইলি টাওয়ারের একটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জানান, সারাদেশে ধর্ষণের বিভিন্ন ঘটনার প্রতিবাদে ধর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের মিছিলে নিহত অপূর্ব এসেছিল। যে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তিনি বিএনপির কেউ না। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তাদের কর্মসূচি বাতিল করতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।