সার সংরক্ষণের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে বাফার গুদাম নির্মাণ এবং শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর কদমরসুল সেতু ও  বাকেরগঞ্জ উপজেলার পান্ডব নদীর ওপর ৬৭৮.৪০ মিটার সেতু নির্মাণের পৃথক তিনটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৬৪০ কোটি ৩৬ লাখ ২২ হাজার ২৫৪ টাকা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় এসব প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্রে জানা যায়, ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় মাগুরায় একটি ও চাঁদপুরে একটি বাফার গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এ দুটি বাফার গুদাম নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব জমা দেয়। তার মধ্যে দুটি প্রস্তাব আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) এআইএল এবং (২) এলসিএল, ফরিদপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১২৮ কোটি ২১ লাখ ৮৮ হাজার ২৫৪ টাকা।

‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর গুদারাঘাটের কাছে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর কদমরসুল ব্রিজ নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এ প্রকল্পের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে চারটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দেয়। চারটি প্রস্তাবই কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) জিবিসি; এবং (২) জিএসডিসি, চায়না প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ৩৯৪ কোটি ৭৪ লাখ ৩৪ হাজার ৭৭৮ টাকা।

‘পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় পান্ডব নদীর উপর ৬৭৮.৪০ মিটার সেতু নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্প বাস্তবায়নে দরপত্র আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দেয়। তার মধ্যে দুটি  কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে (১) মো. মঈনুদ্দিন লিমিটেড, (২) মেসার্স হামীম ইন্টারন্যাশনাল এবং (৩) মো.রাশেদউজ্জামান সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র

এছাড়াও পড়ুন:

৭ এপ্রিল থেকে ঢাকায় ৩ দিনের ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’

আগামী ৭ এপ্রিল থেকে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে তিনদিন ব্যাপী ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূস সামিটের উদ্বোধন করবেন। 

সামিটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রতিবেশী দেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশসমূহ, ইউরোপ, আমেরিকার নামী বিনিয়োগকারীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারী, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি দূতাবাস, দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিভিন্ন চেম্বার, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা প্রতিনিধিদের যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কর্মশক্তি, বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সুযোগ-সুবিধা ও প্রধান উপদেষ্টার বিশ্বব্যাপী পরিচিতি কাজে লাগিয়ে দেশের শীর্ষ বিনিয়োগ প্রচার ও প্রসারকারী সংস্থা (আইপিএ) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর নেতৃত্বে বেজা, বেপজা, হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এর অন্যান্য সংস্থাসমূহের সহযোগিতায় এই  ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’ আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ প্রতিবেশী দেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশসমূহ, ইউরোপ, আমেরিকার নামী বিনিয়োগকারীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারী, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি দূতাবাস, বাংলাদেশে পথিকৃৎ দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিভিন্ন চেম্বার, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাসমূহসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা প্রতিনিধিদের এই সামিটে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সামিটে কৃষি, আইসিটি, বস্ত্র শিল্প, চামড়া শিল্প, পর্যটন, স্বাস্থ্য ও সেবা, ফার্মাসিউটিক্যাল, ইত্যাদি খাতসহ সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাতে আগ্রহী শিল্প উদ্যোগক্তাগণ অনুষ্ঠেয় এ অংশগ্রহণ করবেন মর্মে আশা করা যাচ্ছে। 

বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা ও সাফল্যের উপর ভিত্তি করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্যক্তিগণ এ সম্মেলনে তাদের মূল্যবান মতামত ও দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন। এ অনুষ্ঠানে সুনির্দিষ্ট খাতভিত্তিক দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের উদ্দেশ্যে ই২ই আলোচনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দেশে খাতভিত্তিক বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধা আলোচনার লক্ষে এ সামিটে একাধিক ব্রেক আউট সেশনসহ অন্যান্য যথাযথ অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাবস্থা থাকছে। এছাড়া এ সামিটে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থার পর্যবেক্ষণের জন্য সুনির্দিষ্ট শিল্পাঞ্চল ও শিল্প প্রতিষ্ঠান ভ্রমনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এই সামিটটি যথাযথ ভাবগম্ভীরে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে এর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত কার্যাদি সম্পাদনের জন্য বিডা’র দাপ্তরিক ব্যয় প্রাক্কলন কমিটি কর্তৃক প্রাক্কলিত ব্যয় ২,১২,০০,০৫৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। 

সে অনুযায়ী ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অব বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০১৫ অর্গানাইজড বাই বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেল্পমেন্ট অথরিটি (বিডা) শীর্ষক  ভৌত সেবা উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি (ওটিএম) [প্রকিউরমেন্ট অব নন-কনসাল্টিং সার্ভিসেস] উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ক্রয়ের জন্য গত ২২ জানুয়ারি তারিখে পত্রিকায় দরপত্র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। দরপত্রের শর্তানুযায়ী মোট ১১ (এগার) টি দাখিলকারী প্রতিষ্ঠানের দরপত্র দলিল নির্ধারিত নির্ণায়কের মানদণ্ডে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে কোন প্রতিষ্ঠানই সব শর্তাদি পূরণ না করায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ বিধি ৯৮ এর ১৫ (গ) বিধি মোতাবেক দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক নন-রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি কর্তৃক পিপিআর ২০০৮ এর ৩৩ (২)(ঘ) বিধি মোতাবেক সব দরপত্র, প্রস্তাব বা কোটেশন অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হওয়ায় সুপারিশের ভিত্তিতে ক্রয়কারী কার্যালয় প্রধান সব দরপত্র বাতিল করেন।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর ৩৪ (১) বিধি অনুযায়ী পুনঃদরপত্র আহ্বান, মূল্যায়ন এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম প্রক্রিয়াকরণের লক্ষ্যে ন্যুনতম প্রায় ০১ (এক) মাস সময় প্রয়োজন হবে। আসন্ন সামিট সংক্রান্ত অধিকাংশ কার্যক্রমই ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বিধায় চলতি মার্চ এর ১ম সপ্তাহ  ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু অত্যাবশ্যক।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬-এর ৬৮ ধারায় বলা হয়েছে ‘রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে, ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকারি ক্রয় সম্পর্কিত বিশেষ বিধান- (১) সরকার, রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে বা বিপর্যয়কর কোন ঘটনা মোকাবেলার জন্য, জনস্বার্থে, সরকার কর্তৃক গঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশক্রমে, ধারা ৩২ এ বর্ণিত সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি বা অন্য কোন ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া ক্রয়কার্য সম্পন্ন করিতে পারবে’। তাছাড়া, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি-৭৬(২) এ সরকার আইনের ধারা ৬৮ অনুসারে জরুরি প্রয়োজনে তফসিল-২ এ [বিধি-৭৬ (১) এর বিপরীতে] বর্ণিত মূল্যসীমার উর্ধ্বে ক্রয়ের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশক্রমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করে ক্রয়কার্য সম্পন্ন করতে পারবে।

ঢাকার বনানীস্থ ইন্টিগ্রেটেড মার্কেটিং সার্ভিস লিমিটেড (আইএমএস) বাংলাদেশের অন্যতম অভিজ্ঞ ও দক্ষ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান, যা ২০০৯ সাল থেকে শীর্ষস্থানীয় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করে আসছে। গ্রামীণফোন, নেসলে বাংলাদেশ, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোসহ বহু দেশি ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগকারী, বহুজাতিক কোম্পানির প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গত ১৬ জানুয়ারি তারিখে আয়োজিত নেটওয়ার্কিং প্রোগ্রামটি আইএমএস কর্তৃক সফল ও সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দেশি ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং ও ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনে অভিজ্ঞতা থাকায় আগামী ৭-১০ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের ইভেন্ট পরিচালনার জন্য ইন্টিগ্রেটেড মার্কেটিং সার্ভিস লিমিটেড (আইএমএস)-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সম্প্রতি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হলে কমিটি তাতে অনুমোদন দিয়েছে।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৭ এপ্রিল থেকে ঢাকায় ৩ দিনের ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’