রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে বখাটের হেনস্তা, বাউফলে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
Published: 4th, February 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফলে ইতি দাস (১৯) নামে এক শিক্ষার্থী বন্ধুর সঙ্গে রেস্তোরাঁয় নাস্তা কারার সময় বখাটেদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৭টার দিকে নিজ বাড়ির দোতলা থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন স্বজনরা।
মারা যাওয়া ইতি উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমির দাসের মেয়ে। তিনি বরিশাল বিএম কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ঝালকাঠিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ
বৈষম্যবিরোধী কমিটিতে ‘প্রকৃত বিপ্লবীরা’ স্থান না পাওয়ায় বিক্ষোভ
পরিাবরের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার সকালে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে বের হন ইতি। দুপুর ১২টার দিকে তারা পাবলিক মাঠ সংলগ্ন ঢাকাইয়া ফাস্টফুড নামে এক রেস্তোরাঁয় যান। সেখানে হৃদয় রায়হান নামে এক যুবক তাদের দেখে জিজ্ঞাসাবাদ এবং উত্যক্ত করেন। এক পর্যায়ে হৃদয় ইতি এবং তার বন্ধুর পরিবারকে ডেকে নিয়ে যেতে বলেন।
তাদের পরিবারের লোকজন হৃদয় রায়হানের ভয়ে ওই রেস্টুরেন্টে না গিয়ে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান। বাউফল থানার এসআই শাহিন গিয়ে ইতি ও তার বন্ধুকে থানায় নিয়ে যান। কিছু সময় পর সেখান থেকে তাদের ছেড়ে দেন তিনি। বিকেল ৪টার দিকে ইতি বাড়িতে গিয়ে কাউকে কিছু না বলে বাড়ির দোতালায় চলে যান। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে খাবার খাওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যরা ইতিকে ডাকাডাকি করেন। কোনো শব্দ না পেয়ে তার (ইতি) মা দোতলায় গিয়ে মেয়েকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
এসময় তিনি চিৎকার দিলে স্বজনরা এসে ইতিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইতিকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইতির বাবা সমীর দাস বলেন, “এ বিষয়ে আমার কিছুই বলার নেই। তবে আর যেন কোনো মেয়ে বখাটেদের হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।”
হৃদয় রায়হান বলেন, “ওই মেয়ে ও ছেলেকে আপত্তিকর অবস্থায় পেয়েছি। পরে পরিবারকে খবর দিয়ে তাদের নিয়ে যেতে বলি। তারা না এসে উল্টো পুলিশ পাঠায়। ফলে বিষয়টা জানাজানি হয় বেশি। একপর্যায়ে মেয়েটি কান্না করতে করতে চলে যান।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইতির বান্ধবীরা জানান, ইতি খুব হাস্যমুখ এবং আড্ডা প্রিয় মানুষ ছিল। সামান্য কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারে না। তার মৃত্যুর আসল রহস্য খুঁজে বের করার দাবি জানান তারা।
বাউফল থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, “ইতি দাসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র ব উফল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে চিকিৎসায় অবহেলা, রোগী মৃত্যুর অভিযোগ
রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার মুঞ্জু হাসপাতালে চিকিৎসা অবহেজলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসক-নার্স না থাকায় অক্সিজেনের অভাবে বেনু বেগম (৭০) নামে অপারেশন করা ওই নারীর মৃত্যু হয়।
বুধবার (৯ এপ্রিল) সকাল সাতটার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মারা যাওয়া বেনু বেগমের বাড়ি মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার সুজানগর মিতালী ক্লাব এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত মতিনের কন্যা এবং মৃত বশির আহম্মেদের স্ত্রী।
বেনু বেগমের স্বজনরা জানান, পায়ের হাড় ভেঙ্গে গেলে গত ৬ এপ্রিল তাকে মঞ্জু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার পায়ের হাড়ের অপারেশন করেন ডা. হাবিবুল হাসান। কিন্তু অপারেশন পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তাকে কোন পর্যবেক্ষণ কক্ষে না রেখে সরাসরি ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। বুধবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে বেনু বেগমের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এসময় তার জরুরি অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। কিন্তু হাসপাতালে কোন চিকিৎসক বা নার্স ছিলেন না। অক্সিজেন সিলিন্ডারও ছিল না। রোগীর স্বজনরা দায়িত্বশীল কাউকেই পাননি। একসময় ছটফট করতে করতে রোগী বেনু বেগম মারা যান।
এদিকে অবহেলায় বেনু বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ঘেরাও করে ভাঙচুর করার জন্য তৎপর হন। এসময় হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমারসহ অন্যান্য স্টাফরা পালিয়ে যান। পরে সেখানে ছুটে যান পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা। এরপর বিএনপি নেতারা ক্লিনিক মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমঝোতা করে দেন।
নিহত বেনু বেগমের ছেলে সনি বলেন, “অপারেশনের পর আমার মা সুস্থ ছিলেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ার পর চিকিৎসক এবং নার্স ছিলেন না। সময়মত সঠিক চিকিৎসা পেলে আমার মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেন না। চিকিৎসা অবহেলায় আামার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।”
চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে হাসপাতালের পরিচালক মিঠুন কুমার বলেন, “রোগীর স্বজনরা যেসব অভিযোগ করছেন, সেগুলো সঠিক না। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরেও রোগী মারা গেছেন। মৃত্যুর উপরে কারও হাত নেই।”
এ ব্যাপারে রাজশাহীর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মাহাবুবা খাতুন বলেন, “এ বিষয়ে আমি জানি না। যদি রোগীর স্বজনেরা সিভিল সার্জন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন তবে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হলে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।”
মহানগরীর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, “আমি ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিক সেখানে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে রোগীর স্বজনেরা এখনো কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/কেয়া/এস