শরীয়তপুরে গণমাধ্যম কর্মীদের উপর হাতুড়িপেটা ও হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা। 

মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে অংশ নেন শরীয়তপুর প্রেসক্লাব, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, মফস্বল সাংবাদিক ফোরামসহ অন্যান্য সংগঠনের সাংবাদিকরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচির ঘোষণা দেয় তারা। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন গণমাধ্যম কর্মীরা।

এদিকে হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী সমকালের সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন সোমবার রাতে বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পালং মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলো, নুরুজ্জামান শেখ (৪৫), শামিম শেখ (৪০), ইব্রাহিম মোল্লা (৪০), জিহাদ মোল্লা (২১), মাকসুদা বেগম (৩৫), মনির ঢালী (৩০), সালাউদ্দিন ঢালী (৩৮)।

মানববন্ধনে গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, গত মঙ্গলবার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক কাজী মোহাম্মদ ইলিয়াস এক রোগীর ব্যবস্থাপত্র ছুড়ে ফেলে দেয়। এ ঘটনাটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে গণমাধ্যমকর্মীরা। এ বিষয় নিয়ে স্থানীয় ক্লিনিক ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান শেখ ওই চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সোমবার নুরুজ্জামান শেখ, তাঁর ভাই শামীম শেখসহ ৮ থেকে ১০ জন মিলে ছুরি, হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সমকালের জেলা প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজনের ওপর হামলা চালায়। তাকে বাঁচাতে এলে নিউজ টুয়েন্টি ফোর টেলিভিশন ও জাগো নিউজের প্রতিনিধি বিধান মজুমদার অনি, দেশ টিভির সাইফুল ইসলাম আকাশ ও বাংলা টিভির নয়ন দাসের ওপর হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে সোহাগ খান সুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

শরীয়তপুর প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক মানব জমিনের প্রতিনিধি খলিল শেখ বলেন, সাংবাদিকরা সংবাদ প্রচার করার ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসীরা যেই হামলা চালিয়েছে এটা ন্যক্কারজনক। এমন ঘটনা মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য হুমকি ও গোটা জাতির জন্য অশনিসংকেত। আমরা চাই দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। 

আসামিদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা দিয়ে ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সদস্য সচিব ও চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর টেলিভিশনের সাংবাদিক নুরুল আমিন রবিন বলেন, গতকাল সাংবাদিকদের উপরে যেভাবে হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে এটি পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে। আমি প্রশাসনকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা না হয়, আমরা এর থেকেও বৃহত্তর কর্মসূচির ডাক দিবো।

এই ন্যক্কারজনক হামলার বিচারের দাবি জানিয়েছেন প্রথম আলোর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের উপরে যে হামলাটি হয়েছে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। সাংবাদিকদের উপর এভাবে আক্রমণ ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আমরা চাইনা। আমাদের আহ্বান থাকবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী ও রাষ্ট্রের কাছে, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের নিরাপত্তার জায়গাটি তারা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি হামলার ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হোক।

এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, হামলার ঘটনায় ভুক্তভোগী সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অপরাধীদের গ্রেফতার করতে ইতোমধ্যে পুলিশ মাঠে কাজ করছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের গ্রেফতার করা হবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ গ খ ন স জন দ র উপর ত র কর গণম ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিককে প্রকাশ্যে জবাই করে হত্যার হুমকি

গাজীপুরের শ্রীপুরে অনিয়ম ও চাঁদাবাজির সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মোজাহিদকে প্রকাশ্যে জবাই করে হত্যার হুমকির দেওয়া হয়েছে। 

এর প্রতিবাদে শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে শ্রীপুর থানা মোড় এলাকায় স্থানীয় সাংবাদিকরা মানববন্ধন করেন।

এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, এম এম ফারুক, শাহান শাহাবুদ্দিন, ফয়সাল খান, আব্দুল লতিফ মাস্টার, শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, ফজলে মমিন, রাতুল মণ্ডল, মোতাহার খান (জিটিভি), মাহমুদুল হাসান, মাহফুজুর রহমান ইকবাল, আশরাফুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান মানিক, এস এম জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় শ্রীপুর পৌর শহরে কলেজ ছাত্রদলনেতা গোলজার মণ্ডল, মেহেদী হাসান সাহাদ, মারুফ প্রধান ও তোফায়েলসহ ৪০-৫০ জনের একটি দল বিক্ষোভ মিছিল করে।

মিছিলে তারা সাংবাদিক মোজাহিদকে টার্গেট করে উস্কানিমূলক ও ভয়ঙ্কর স্লোগান দেয়। যার মধ্যে ছিল, ‘একটা একটা মোজাহিদ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর।’ এই মিছিলের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিক মহলসহ সচেতন নাগরিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। 

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। 

একই দিন বাদ জুমা শ্রীপুর পৌর শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে সাধারণ ছাত্রজনতা। তারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও হত্যার হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

ঢাকা/রফিক/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সারাদেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে রূপগঞ্জে ৫ দফা দাবিতে মানববন্ধন
  • ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ
  • কুবিতে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • চাঁদাবাজিতে অসহায় খুলনার ব্যবসায়ীরা
  • মেডিকেল কলেজ বন্ধে ছাত্রদলের প্রতিবাদ
  • বাউল শিল্পীকে মারধরে জড়িতদের শাস্তি দাবি
  • নারীদের ওপর সহিংসতার প্রতিবাদে নারীরা
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির প্রতিবাদে মানববন্ধন, হামলায় আহত ৪
  • সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে হত্যার হুমকি, প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • সাংবাদিককে প্রকাশ্যে জবাই করে হত্যার হুমকি