ঢাকায় এসে নিখোঁজ ১১ বছরের আরাবি ইসলাম সুবার খোঁজ পাওয়া গেছে। শিশু সুবা তার এক বন্ধুর সঙ্গে নওগাঁ জেলায় অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান।
তিনি বলেন, আমরা সুবার অবস্থান শনাক্ত করেছি। সে বর্তমানে রাজশাহী বিভাগে নওগাঁ জেলায় অবস্থান করছে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা অবস্থান পরিবর্তন করেছে। তবে দ্রুতই তাদের পুলিশ হেফাজতে আনতে পারব বলে আশা করছি।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বলেন, বিষয়টি শিশুর পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে।
এর আগে মায়ের চিকিৎসার জন্য দুই মাস আগে বরিশাল থেকে ঢাকায় এসেছিল ১১ বছরের আরাবি ইসলাম সুবা। রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বয়সে ছোট ফুফাতো ভাইয়ের সঙ্গে বাসা থেকে বের হয় সে। এরপর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট এলাকা থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়।
এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, কৃষি মার্কেট এলাকায় একটি ছেলের হাত ধরে রাস্তা পার হয় সুবা।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে নিখোঁজ সুবার বিষয়ে আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া বলেছিলেন, মেয়েটিকে উদ্ধারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। সে বর্তমানে আমাদের নিরীক্ষণে আছে।
সুবার পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি বলেছিলেন, যে ছেলেটির সঙ্গে দেখা গেছে সেই ছেলের সঙ্গে সুবার সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে চলে যায়। ছেলেটির মোবাইল নম্বর দিয়েছে মেয়েটির পরিবার।
মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মেয়েটির অবস্থান শনাক্ত করা হয় বলেন জানান তিনি।
এদিকে সুবার বাবা ইমরান রাজীবের একটি আবেগঘন ফেসবুক পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনেক নেটিজেন তাকে খুঁজে পেতে পরিবারকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে পোস্টটি শেয়ার করেছিলেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রীষ্মের বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হাজির কৃষ্ণচূড়া
ঋতুচক্রে প্রকৃতিতে এখন গ্রীষ্মকাল। সেই গ্রীষ্মের বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হাজির কৃষ্ণচূড়া। কাঠফাটা রোদ্দুরকে যেন সহনীয় করে দেয় কৃষ্ণচূড়া!
গ্রামবাংলার নানা প্রান্তে প্রকৃতিতে রং ছড়াচ্ছে বর্ণিল কৃষ্ণচূড়া। তবে শুধু গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেই নয়, ইট-পাথরের নগরেও দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়ার। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের কয়েকটি এলাকা ঘুরে আগুনরঙা হয়ে কৃষ্ণচূড়া ফুটে থাকতে দেখা গেছে।
জাতীয় পরিবেশ পদকপ্রাপ্ত কুমিল্লার পরিবেশ ও কৃষি সংগঠক মতিন সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা ফুলপ্রেমী মানুষ, তাঁদের কাছে কৃষ্ণচূড়া বেশ পছন্দের ফুল। বাংলা কাব্য, সাহিত্য ও সংগীতে এসেছে এই ফুলের কথা। শুধু কবি–সাহিত্যিক নয়, কুমিল্লার পথচারী থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চোখ জুড়িয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়া।
কুমিল্লা নগরের ধর্মসাগরপাড়, নগর উদ্যান, বাদুরতলা, অশোকতলা, হাউজিং এলাকা, রানির দিঘির পাড়, জেলা স্কুল রোড, চর্থা, উনাইসার, বিমানবন্দর এলাকা, দিশাবন্দ, ছোট ধর্মপুর এলাকা এবং জেলার ১৭টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কমবেশি দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়ার। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলাচলের সময় কুমিল্লা সদর দক্ষিণের সুয়াগাজী এলাকা, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়াবাজার, মিরশ্বান্নি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য চোখে পড়ছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রীষ্মকাল শুরুর আগে থেকেই কৃষ্ণচূড়া ফুলটি ফুটতে শুরু করে। নানা জাতের পাখির আনাগোনা বাড়তে থাকে গাছটিকে ঘিরে। বিশেষ করে জাতীয় পাখি দোয়েল, টুনটুনি, চড়ুই, বুলবুল পাখির সরব উপস্থিতি থাকে সারা বেলা। শরীরে রক্তিম আভা মেখে কৃষ্ণচূড়া সারাক্ষণ সবুজ বনভূমি–তৃণভূমিকে আলোকিত করে রেখেছে। কৃষ্ণচূড়ার তুলনা শুধু কৃষ্ণচূড়াই। রঙে, রূপে, উজ্জ্বলতায় ও কমনীয়তায় কোনো কিছুই যেন কৃষ্ণচূড়ার সমকক্ষ নয়।
মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, বসন্তের শেষ দিকে সাধারণত কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে পত্রহীন বাঁকানো ডালগুলোতে দেখা যায় কলির আভাস। অন্যান্য ফুল গাছে যখন নতুন পাতা আসে, কিন্তু ফুল আসে না; ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়ার সব পাতা ঝরে গিয়ে ফুলের কলি দেখা দেয়। আর গ্রীষ্মের শুরুর সময়টাতে দেখা যায় লালের আভাস।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কৃষ্ণচূড়া ফোটার এই সময়টা তাঁর অন্য রকম ভালো লাগে। এ ভালো লাগার কথা মুখে বলে প্রকাশ করা যাবে না।