দরপত্র লুটের ঘটনায় মামলা, আসামি অজ্ঞাত
Published: 4th, February 2025 GMT
ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ও হাতবোমা ফাটিয়ে রাজশাহীর পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয় থেকে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্সের দরপত্র লুট করার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে ওই ঘটনা ঘটলেও মামলার এজাহারে কোনো আসামির নাম নেই।
রাজশাহীর শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমা মোস্তারিন বলেন, “ঘটনার পর রাতে পবা উপজেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। তবে আসামি হিসেবে কারো নাম নেই। অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
তবে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি বলেও জানান ওসি।
এর আগে সোমবার দুপুরে পবার ইউএনওর কার্যালয়ের নিচতলা থেকে টেন্ডার বাক্স বাইরে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। এরপর ভেতরে থাকা দরপত্র লুট করার ঘটনা ঘটে। ১৪৩২ বঙ্গাব্দের জন্য পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে এই টেন্ডার বাক্সে দরপত্র জমা নেওয়া হচ্ছিল।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যমতে, ওই ১২টি হাটের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খড়খড়ি হাট। এই হাট প্রতিদিনই বসে। এই হাট থেকেই প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্তে শাক-সবজি যায়। স্থানীয় পাঁচটি গ্রুপ এই হাট ইজারা নিতে চায়।
সূত্র জানায়, ওই পাঁচটি গ্রুপের মধ্যে আলোচনা ছিল যে তাদের পক্ষ থেকে একটি দরপত্রই জমা দেওয়া হবে। এতে কম টাকায় হাট যেমন ইজারা পাওয়া যাবে, তেমনি সমঝোতা করে সবাই হাটের অংশীদার থাকবেন। কিন্তু স্থানীয় এক যুবদল নেতা এই সমঝোতা মানেননি।
দরপত্র দাখিলের শেষ দিন দুপুরে ওই যুবদল নেতা তার অনুসারীদের নিয়ে টেন্ডার বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যান। এ সময় তাকে অপর চারটি গ্রুপের লোকজন দরপত্র জমা দিতে বাধা দেন। তারপরও ওই যুবদল নেতা বাক্সে দরপত্র ফেললে টেন্ডার বাক্স ভেঙেই সব দরপত্রই লুট করা হয়। এ সময় ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ছুরিকাঘাতে আহত হন এক যুবদল নেতাও। এ বিষয়গুলো নিয়ে কোনোপক্ষই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চায় না। ওই ঘটনার পর টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আপাতত স্থগিত রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।
পবার ইউএনও আরাফাত আমান আজিজ বলেন, “দরপত্র জমা দানের একটা নতুন তারিখ দিয়ে নতুন করে জমা নেওয়া হতে পারে। অথবা এ ব্যাপারে আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নতুনভাবেই ইজারা প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এ ব্যাপারে একটা কমিটি আছে। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হবে।”
ঢাকা/কেয়া/ইমন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য বদল ন ত উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নিজ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করলেন প্রধান শিক্ষক; তদন্তে কমিটি
নওগাঁর মান্দায় ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে করে ভাইরাল প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসীকে নিয়ে মানববন্ধন করেন অভিভাবকরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজ স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ আলম মিয়া আজ মঙ্গলবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
এর আগে গত রোববার বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হলে দুজন দু’ধরনের বক্তব্য দেন। ইউএনও অভিযোগ পেয়েই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে জানালেও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হলে আজ মঙ্গলবার তড়িঘড়ি করে তিন সদস্যের কমিটি করেন ইউএনও। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- চক-কামদেব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ ও স্থানীয় অভিভাবক সদস্য রিপন। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন নিজ প্রতিষ্ঠানের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ে করেন। জন্মসনদ অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীর বয়স ১৬ বছর ৬ মাস। গত ২৬ মার্চ তাকে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন প্রধান শিক্ষক। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে। স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকেরা মানববন্ধন করে প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ বিচার দাবি করেন। তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও দেন। এরপর ১৩ দিন পেড়িয়ে গেলেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন বলেন, আকরাম হোসেনের প্রথম স্ত্রী স্কুল শিক্ষক। দ্বিতীয় স্ত্রীও তার ছাত্রী ছিলেন। অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে বিয়ে করেন। এরপর আবারও ছাত্রীকে বিয়ে করেছেন। এবারও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম সরওয়ার স্বপন বলেন, ঘটনাটি নিয়ে শিক্ষক সমাজ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সাড়া মেলেনি। বিদ্যালয়ে গিয়েও তার দেখা পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ আলম শেখ বলেন, আজ চিঠি পেয়েছি। যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
ইউএনও শাহ আলম মিয়া বলেন, তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি নিয়ে অসত্য তথ্য দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।