২৮তম বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা সিনেমার পুরস্কার জয় করে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ‘বলী’। পরে আন্তর্জাতিক অনেক চলচ্চিত্র উৎসবে সুনাম কুড়িয়েছে সিনেমাটি। আগামী শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
সিনেমাটির প্রযোজক পিপলু আর খান গণমাধ্যমকে জানান, ৭ ফেব্রুয়ারি দেশের হলে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। সেভাবেই এখন সব প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সেন্সর সার্টিফিকেশন সনদ পায় ‘বলী’।
পিপলু আর খান জানান, তাদের পরিকল্পনা ছিল আরও সপ্তাহখানেক পেছানোর।
১৪ ফেব্রুয়ারি বেছে নিয়েছিলেন মুক্তির তারিখ। পরে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে, বেশ কিছু কারণে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ৭ তারিখে মুক্তি দেওয়াই এখন লক্ষ্য নির্মাতাদের। পরিচালক ইকবাল হোসাইন চৌধুরী জানান, সিনেমা মুক্তি নিয়েই তিনি ব্যস্ত।
২০২১ সালে বাংলাদেশ সরকারের অনুদান পায় ‘বলী’। পরে সিনেমাটির চিত্রনাট্য পড়ে ভারতের এনএফডিসি ফিল্ম বাজারসহ বেশ কিছু আয়োজনের কো-প্রোডাকশন মার্কেটেও নির্বাচিত হয়। পরের বছরই কক্সবাজারের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শুরু হয় সিনেমাটির শুটিং। বুসানে নির্বাচিত হওয়ার পর পরিচালক সিনেমা নির্মাণের খবরটি জানান।
সিনেমায় মূল বলীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দীন খান। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন প্রিয়াম অর্চি, ইতমাম, এনজেল। বাংলাদেশ থেকে সিনেমাটি এবার অস্কারে প্রতিনিধিত্ব করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বল খ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ফের নিজের তৈরি বিমানে উড়লেন জুলহাস, যমুনাপাড়ে উৎসবের আমেজ
ফের নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েছেন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস মোল্লা (২৮)। রবিবার (৯ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জাফরগঞ্জে যমুনার পাড়ে নিজের তৈরি বিমানে আকাশে উড়েন তিনি।
এ সময় বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুকসহ সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, গত সোমবার (৩ মার্চ) পরীক্ষামূলক প্রথম ওড়েন তিনি।
জুলহাসের তৈরি বিমানে আকাশে উড়া দেখতে রবিবার সকাল থেকে হাজারো মানুষ যমুনার পাড়ে ভিড় করেন। লোকে লোকারণ্য যমুনাপাড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে লোকমান রহমান ছেলে রোরহানকে নিয়ে এসেছেন জুলহাসের বিমান দেখতে। তিনি বলেন, ‘‘জুলহাসের তৈরি বিমান টিভিতে দেখার পর ছেলে সামনে থেকে দেখার বায়না ধরেছে। ছেলের আবদার পূরণে আজ সকালে যমুনার পাড়ে ছুটে আসি। বিমানটি সামনে থেকে দেখতে পেরে বোরহান খুবই খুশি।’’
মানিকগঞ্জ শহরের উত্তর সেওতা থেকে এসেছেন জুয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘‘ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলে অনেক কঠিন কাজও সম্ভব। সেটাই প্রমাণ করেছেন মানিকগঞ্জের এক তরুণ। তিনি নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমে বিমান তৈরি করেছেন। শুধু তাই নয়, নিজেই সেটি সফলভাবে আকাশে উড়িয়েছেন।’’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জুলহাস মোল্লার বাড়ি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের ষাইটঘর তেওতা গ্রামে। জুলহাসের বাবা জলিল মোল্লার গ্রামের বাড়ি ছিল জেলার দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া এলাকায়।
নদীভাঙনের কারণে বর্তমানে তারা শিবালয় উপজেলার ষাইটঘর তেওতা এলাকায় পরিবারসহ বসবাস করেন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জুলহাস পঞ্চম। তিনি জিয়নপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। পরে অর্থাভাবে আর পড়তে পারেননি। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি জুলহাস ঢাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। ছুটিতে বাড়িতে এসে তৈরি করেছেন বিমানটি।
জুলহাস মোল্লা জানান, তিন বছর গবেষণা এবং এক বছর সময় লেগেছে বিমানটি তৈরি করতে। অ্যালুমিনিয়াম ও লোহা দিয়ে বিমানটির অবকাঠামো তৈরি। পানির পাম্পের ‘সেভেন হর্স পাওয়ারের’ ইঞ্জিন ব্যবহার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘বিমানটি পরীক্ষামূলকভাবে প্রশিক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে, সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটি বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা যেতে পারে। বিমানটি ৫০ ফুট ওপরে উড়তে পারে।’’
বাংলাদেশ বিমানের অবসরপ্রাপ্ত পাইলট ক্যাপ্টেন আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘‘জুলহাসের বিমানটি তৈরিতে যে গবেষণা হয়েছে, তা কীভাবে আরো উন্নয়ন ঘটানো যায় সে বিষয়ে সবাই কাজ করব। সেই সঙ্গে তার একাডেমিক রিসোর্স ও কারিগরি যেসব সহযোগিতা প্রয়োজন, সে বিষয়ে আমরা সহযোগিতা করব।’’
ঢাকা/চন্দন/রাজীব