বিপিএলের প্লে-অফের জন্য নতুন বিদেশি ক্রিকেটার দলে ভেড়ানোর প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিটাগং কিংস অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। তিনি মনে করেন, বড় নামের ক্রিকেটার আনলেই সাফল্য পাওয়া যায় না, বরং পুরো মৌসুম খেলা ক্রিকেটাররাই দলের জন্য বেশি কার্যকর।

রংপুর রাইডার্স গতকাল প্লে-অফের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে একসঙ্গে তিনজন নতুন বিদেশি খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্ত করে—জেমস ভিন্স, আন্দ্রে রাসেল ও টিম ডেভিড। সকালে ঢাকায় পৌঁছে বিকেলেই মাঠে নেমে পড়েন তারা। তবে ক্লান্তির কারণে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দিতে পারেননি, তিনজন মিলে করেন মাত্র ১২ রান। এদিকে, পুরো টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক পারফর্ম করা ইফতেখার আহমেদকে একাদশে না রাখা নিয়ে উঠেছে সমালোচনা। শেষ পর্যন্ত খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে রংপুর।  

চিটাগং কিংস-ফরচুন বরিশাল ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মিঠুন বলেন, ‘ক্রিকেটীয় দিক থেকে এটা আদর্শ কিছু নয়। রংপুরের ক্রিকেটাররা সকালেই এসেছে, দীর্ঘ যাত্রার পর জেট ল্যাগের একটা প্রভাব থাকে। এমন পরিস্থিতিতে নেমে তারা শতভাগ দিতে পারেনি।’  

চিটাগং কিংস প্লে-অফে নতুন বিদেশি ক্রিকেটার নেওয়ার পথে হাঁটছে না জানিয়ে মিঠুন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের এমন কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা এটা বিশ্বাসও করি না। শুধু বড় নাম আনলেই যে তারা পারফর্ম করবে, তা নিশ্চিত নয়। আমাদের যে বিদেশি ক্রিকেটাররা আছে, তারা পুরো টুর্নামেন্ট খেলেছে, কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। তাই হুট করে নতুন কাউকে এনে ভালো ফল আশা করা বাস্তবসম্মত নয়।’  

নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মিঠুন আরও বলেন, ‘আমাদেরও প্রথম ম্যাচে কয়েকজন বিদেশি ক্রিকেটার সকালে এসে খেলেছিল। আমরা তখনই বুঝেছিলাম, মাঠে তারা শতভাগ দিতে পারছে না। তারাও পরে স্বীকার করেছে বিষয়টি। একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমি মনে করি, খেলানোর আগে তাদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারের গণতন্ত্র রক্ষা অথবা স্বৈরাচারের কাছে আত্মসমর্পণ করুন

সর্বত্রই গণতন্ত্র আক্রমণের মুখে। এতে সামনের সারিতে রয়েছে মিয়ানমার। একটি সামরিক একনায়কতন্ত্র নির্বাচিত নেতাদের কারারুদ্ধ করেছে, জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে এবং দেশকে সন্ত্রাসের যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে। এ অবস্থায় বিশ্বনেতাদের সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে খোলা চিঠি লিখেছেন দেশটির লেখক ও অনুসন্ধানী সাংবাদিক অ্যালান ক্লেমেন্টস এবং লেখক ও মানবাধিকারকর্মী ফার্গাস হার্লো। খবর ইরাবতীর। 

চিঠিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমার তার অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে। ২১ হাজারেরও বেশি রাজনৈতিক নেতাকর্মী কারাগারে। হত্যা করা হয়েছে ৬ হাজার ২০০ জনেরও বেশি নিরীহ বেসামরিক নাগরিককে। ৫০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত এবং হাজার হাজার মানুষকে অনাহারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বোমা হামলা, মৃত্যুদণ্ড ও গণগ্রেপ্তারের মতো জান্তার নৃশংস অভিযান দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তবুও জনগণ আত্মসমর্পণের পরিবর্তে লড়াই করে যাচ্ছে। 

মিয়ানমারের সংকট কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়– উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এটি সর্বত্র গণতন্ত্রের জন্য একটি পরীক্ষা। যদি বিশ্ব ৫ কোটিরও বেশি মানুষের ইচ্ছা মুছে ফেলার জন্য একটি সহিংস অভ্যুত্থানের অনুমতি দেয়, তবে এটি বিশ্বব্যাপী স্বৈরশাসনের একটি নজির স্থাপন করবে। তাছাড়া জনগণের বিরুদ্ধে জান্তার এ যুদ্ধ ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক সংকটে ইন্ধন জোগাচ্ছে। চীনের দুর্বৃত্তদের মদদে সামরিক শাসন দেশকে ফেন্টানাইল, হেরোইন ও মেথামফেটামিনের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্রে রূপান্তরিত করেছে। এই মাদকগুলো যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, থাইল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানে ছড়িয়ে পড়ছে। 

মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে খোলা চিঠিতে তারা বলেন, ইতিহাস আমাদের প্রতিক্রিয়া বিচার করবে। অং সান সু চির তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করুন। তাঁর স্বাধীনতা ছাড়া মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরবে না। সর্বোচ্চ নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে জান্তাকে জবাবদিহি করতে হবে। আর এটি কেবল মিয়ানমার নয়, বৈশ্বিক গণতন্ত্রের রক্ষার লড়াই। বিশ্ব যদি নীরব থাকে, তবে এটি সামরিক অভ্যুত্থানকে সহায়তা করা হবে। এতে একনায়কতন্ত্র বিকশিত এবং গণতন্ত্র অতল গহ্বরে ডুবে যায়। আমরা মিয়ানমারকে বিশ্বব্যাপী স্বাধীনতার কবরস্থান হতে দিতে পারি না। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিতে হবে। শুধু কথায় নয়, বরং কাজেও। বিশ্বকে বেছে নিতে হবে– মিয়ানমারের পাশে দাঁড়ানো অথবা স্বৈরাচারের কাছে আত্মসমর্পণ করা। 


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ