অনেকদিন ধরেই রানখরায় ভুগছিলেন তাওহিদ হৃদয়। চলতি বিপিএলেও তার ব্যাট হাসছিল না। প্রথম ১২ ম্যাচে মাত্র ১৯৮ রান করেছিলেন, ছিল না কোনো ফিফটি। অবশেষে কোয়ালিফায়ার-১ এ চট্টগ্রাম কিংসের বিপক্ষে ৫৬ বলে অপরাজিত ৮২ রানের দারুণ ইনিংস খেলে বরিশালকে ৯ উইকেটের বিশাল জয় এনে দেন তিনি। ম্যাচ শেষে হৃদয় স্মরণ করেছেন তার কঠিন সময় ও সেই সময় পাশে থাকা মানুষদের।  

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে হৃদয় জানান, পারফর্ম করতে না পারার পেছনে ‘ব্লক’ খাওয়ার মতো এক মানসিক চাপ কাজ করছিল তার মধ্যে। তবে সেই বাধা কাটিয়ে উঠতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল।  

হৃদয় লিখেছেন, ‘সেদিন ‘রাইটার্স ব্লক’ নামে একটি শব্দের সঙ্গে পরিচিত হলাম। বিস্তারিত জানার পর মনে হলো, আমিও যেন কোনো এক ধরনের ব্লক খেয়ে আছি। নিয়মিত পরিশ্রম করছি, ধৈর্য ধরছি, চেষ্টার কমতি নেই; কিন্তু রান আসছিল না। বিশেষ করে গত দুই বিপিএলের পর আমার প্রতি সবার প্রত্যাশা অনেক বেড়ে গিয়েছিল।’

তিনি আরও লেখেন, ‘রান না পাওয়ায় আমি যতটা কষ্ট পেয়েছি, তার চেয়েও বেশি হতাশা দেখেছি আমার ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে। তবে আশেপাশের মানুষদের কাছ থেকে সবসময় অনুপ্রেরণা পেয়েছি। তামিম ইকবাল ভাই, আপনাকে বোঝানোর মতো ভাষা নেই যে আপনি কতটা অভিভাবকের মতো ছিলেন আমার জন্য। এত প্রত্যাশার চাপের মধ্যেও পুরো দল আমাকে বারবার বুঝিয়েছে যে, এটি স্বাভাবিক, আমি আবার রানে ফিরব। কৃতজ্ঞতা জানাই আমাদের কোচিং স্টাফ, সতীর্থদের প্রতি, বিশেষভাবে ফিজিও বায়েজিদ ভাই ও শাহীন ভাইকে।’ 

ভক্তদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হৃদয় লেখেন, ‘ক্রিকেটপ্রেমীরা আমাদের ভালোবাসেন, ভালো খেললে প্রশংসা করেন, খারাপ খেললে হতাশ হন। তবে তাদের এই ইতিবাচক-নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দুটোই আমাদের শক্তি হিসেবে কাজ করে। ধন্যবাদ মহান রাব্বুল আলামিনকে, ধন্যবাদ ফরচুন বরিশালের সকল সদস্যকে, ধন্যবাদ আমাদের সকল সমর্থককে।’  

হৃদয়ের এই দুর্দান্ত ইনিংস বরিশালের জন্য যেমন স্বস্তিদায়ক, তেমনি দলের শিরোপা ধরে রাখার আশাকে আরও উজ্জ্বল করেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ দলও আশাবাদী হতে পারে, কারণ আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ছন্দে থাকা হৃদয় দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

মা-মেয়েকে উত্ত্যক্তের জের, মাইকিং করে সংঘর্ষে জড়াল দুই এলাকার মানুষ

মা-মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার জের ধরে কু‌ড়িগ্রা‌মের চিলমারী ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের দুই এলাকার মানুষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। আজ বৃহস্প‌তিবার ক‌য়েক দফার এই সংঘ‌র্ষে উভয় প‌ক্ষের ২০-২৫ জন আহত হন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার চিলমারীর রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খরখরিয়া গ্রামের এক নারী তাঁর মেয়েকে নিয়ে দ্বিতীয় তিস্তা সেতু এলাকায় ঘুরতে যান। এ সময় সুন্দরগঞ্জের হ‌রিপুর ইউনিয়‌নের শহ‌রের মোড় এলাকার কয়েকজন কিশোর গোপনে তাঁদের ছবি তোলেন ও উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করেন। মা–মেয়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ করলে ওই কিশোরেরা তাঁদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বিষয়টি চোখে পড়লে প্রতিবাদ জানান চিলমারীর রমনা ইউনিয়নের ডাঙ্গার চর এলাকার সাজু ও মোতালেব মিয়া নামের দুই ব্যক্তি। এরপর কয়েকজন তাঁদের মারধর করেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, আজ বৃহস্পতিবার সকালে রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খরখরিয়া এলাকার আলমগীর হোসেন (৩৫) ভুট্টাখেত দেখতে গেলে শহরের মোড় এলাকার কয়েকজন তাঁকে মারধর করেন। খবর পেয়ে আলমগীরকে তাঁর পরিবারের লোকজন উদ্ধার করেন। তাঁকে প্রথমে চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ওই ঘটনার পর দুই পক্ষের মানুষ মাইকিং করে লোকজন ডাকে। এরপর দুই পক্ষের শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুপক্ষের ২০-২৫ জন আহত হন। খবর পে‌য়ে কু‌ড়িগ্রাম থে‌কে সেনাবা‌হিনীর এক‌টি দল ঘটনাস্থ‌লে গিয়ে প‌রি‌স্থি‌তি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রমনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম আশেক বলেন, গোপনে মা-মেয়ের ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন থেকে দুই এলাকার মানুষের মাঝে উত্তেজনা চলছিল। আজ চিলমারীর একজন কৃষক জমিতে কাজ করতে গেলে সুন্দরগঞ্জ শহ‌রের মোড় এলাকার কয়েকজন মিলে তাঁকে মারধর করে। ওই ঘটনায় দুই এলাকার মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

চিলমারী ম‌ডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রহিম প্রথম আলোকে বলেন, উভয় এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ