মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ স্থগিত করলেন ট্রাম্প
Published: 4th, February 2025 GMT
মেক্সিকো তাদের উত্তরের সীমান্তে ১০ হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করতে রাজি হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির ওপর নতুন শুল্ক আরোপ এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। মূলত অবৈধ মাদক, বিশেষ করে ফেন্টানিলের প্রবাহ ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। খবর রয়টার্সের।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম জানিয়েছেন, এই চুক্তির অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র মেক্সিকোতে পাচার বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সোমবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান।
সোমবার নতুন মার্কিন শুল্ক মেক্সিকো, চীন এবং কানাডার ওপর কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প ও শেইনবাউম ফোনে কথা বলেন। ট্রাম্প বলেছেন, এই এক মাসের স্থগিতাদেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো আরও আলোচনা চালিয়ে যাবে।
ট্রুথ সোশ্যাল-এ তিনি লিখেছেন, আমি প্রেসিডেন্ট শেইনবাউমের সঙ্গে এই আলোচনায় অংশ নিতে অপেক্ষা করছি। কারণ আমরা আমাদের দুই দেশের জন্য একটি চুক্তি করার চেষ্টা করছি।
এক সংবাদ সম্মেলনে শেইনবাউম বলেন, আমাদের সামনে এক মাস সময় আছে। এই সময় আমরা একে অপরকে বোঝাতে কাজ করব যে এটি সামনে এগিয়ে যাওয়ার ভালো উপায়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ করে এবং চীনের পণ্যে বর্তমান হারের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্প। গত শনিবার তার দেওয়া এ–সংক্রান্ত একটি আদেশ মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। এখন মেক্সিকোর ওপর নতুন শুল্ক কার্যকর না হলেও কানাডা ও চীনের পণ্যে তা কার্যকর হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল ককর ক র যকর র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
বাবার দেওয়া খেলনা থেকেই উড়োজাহাজ উদ্ভাবনের নেশা
উইলবার রাইট আর অরভিল রাইট। পিঠাপিঠি দুই ভাইকে ‘রাইট ব্রাদার্স’ নামেই চেনে বিশ্ব। কিংবদন্তি এই দুই উদ্ভাবক উড়োজাহাজ উদ্ভাবন করেন এবং বিশ্বের মানুষকে উড়তে শেখান। বড় ভাই উইলবারের জন্মদিন আজ ১৬ এপ্রিল।
উইলবার ১৮৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের মিলভিলের কাছে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের চার বছর পর ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ডেটনে জন্মগ্রহণ করেন অরভিল। বড় ভাইয়ের জন্মদিনে জেনে নেওয়া যাক উড়োজাহাজ উদ্ভাবনে দুই ভাইয়ের সাধনার গল্প।
খেলনা থেকে আকাশে ওড়ার স্বপ্নশিশুকালেই দুই ভাইয়ের মনে আকাশজয়ের নেশা দানা বেঁধেছিল। জানা যায়, বাবার দেওয়া একটি খেলনা হেলিকপ্টার তাঁদের মনে বুনে দিয়েছিল স্বপ্নের বীজ। ১৮৭৮ সালের কোনো এক সন্ধ্যায় বাসায় ফেরেন বাবা মিল্টন রাইট। এ সময় ছোট দুই ছেলের জন্য আনা একটি উপহার বাসার মধ্যেই ওপরে ছুড়ে মারেন বিশপ বাবা।
১৯০৮ সালে একটি ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দুই ভাই বলেন, ‘ধারণা করছিলাম খেলনাটি মেঝেতে পড়ে যাবে। কিন্তু মেঝেতে পড়ে যাওয়ার পরিবর্তে কক্ষের ছাদের অংশে ধাক্কা লাগার আগপর্যন্ত এটি উড়তে থাকে। ধাক্কা লেগে এটি উল্টে যায় এবং মেঝেতে পড়ে যায়।’
কর্ক, বাঁশ ও কাগজ দিয়ে তৈরি এবং রাবার ব্যান্ড দ্বারা চালিত হেলিকপ্টার মডেলটি দুই ভাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করে। এ ধরনের আকাশযানের প্রতি তাঁদের মধ্যে তুমুল আবেগ তৈরি হয়। আকাশে ওড়ার স্বপ্ন রীতিমতো নেশার মতো কাজ করে দুই ভাইয়ের মধ্যে।
যদি লক্ষ্য থাকে অটুটএই স্বপ্ন পূরণ এতটা সহজ ছিল না রাইট ভাইদের জন্য। এর বড় কারণ ছিল এ ধরনের আকাশযান তৈরির প্রকৌশল জ্ঞান এবং আর্থিক সংস্থানের অভাব। দুজনেরই হাইস্কুলে থাকার সময় পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও পরে একজন ডিপ্লোমা করতে পেরেছিলেন। অর্থের ব্যবস্থা করাও এতটা সহজ ছিল না দুজনের জন্য।
দুই ভাই কর্মজীবন শুরু করেছিলেন পত্রিকা আর ছাপাখানার ব্যবসা দিয়ে। তবে এ ব্যবসায় তেমন সফল হননি তাঁরা। এরপর দুই ভাই ‘দ্য রাইট সাইকেল কোম্পানি’ নামে বাইসাইকেলের ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমে ভাড়া দেওয়া বা যন্ত্রাংশ বেচাকেনায় সীমাবদ্ধ থাকলেও শিগগিরই তাঁরা নতুন নতুন নকশায় সাইকেল তৈরি করতে শুরু করেন। ২০ বছর এই ব্যবসা করে আয়রোজগারও করলেন বেশ।
এরপর শুরু হলো আসল স্বপ্নের পথে যাত্রা। ১৮৯৯ সাল থেকে শুরু হলো গবেষণা। ১৯০০ সালে তৈরি করলেন প্রথম গ্লাইডার (একধরনের উড়োযান)। ১৯০১ থেকে ১৯০৩ সাল পর্যন্ত নিরলসভাবে চলতে থাকে প্রচেষ্টা। অনেকবারই দুই ভাইয়ের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে তাঁরা হাল ছাড়েননি। একবার উড্ডয়নের চেষ্টা ব্যর্থ হলে ত্রুটি সারিয়ে এবং আরও নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবন করে আবার নেমে পড়েন দুই ভাই।
এই ফ্লায়ার দিয়েই উড্ডয়নের পরীক্ষায় প্রথম সফলতা পান রাইট ভাইয়েরা